BJP: ‘শিল্পমন্ত্রী শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যস্ত, তাই এলন মাস্ককে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রীকে ডাকতে হচ্ছে’, পার্থকে কটাক্ষ শমীকের
BJP: কোভিড থেকে পুরভোট একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগেন বিজেপি নেতা।
কলকাতা: করোনার বিধি নিষেধ নিয়ে রবিবার থেকে নতুন নির্দেশিকা কার্যকর হয়েছে। শনিবারই এই নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। সেখানে বিয়ে বাড়িতে ৫০ জনের বদলে ২০০ জনের একসঙ্গে উপস্থিতিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে খোলা মাঠে মেলা করলে তাতে কোনও আপত্তি নেই বলে জানানো হয়েছে। রবিবার রাজ্য সরকারের এই নির্দেশিকাকে স্ববিরোধী বলে তোপ দাগলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, এই সরকার যে সিদ্ধান্তই নেয় সেটাই স্ববিরোধিতায় ভরা। একইসঙ্গে শিল্পপতি এলন মাস্ককে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রীর আহ্বান জানানো নিয়েও কটাক্ষ করেন শমীক। বলেন, শিল্পমন্ত্রী এখন দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যস্ত। তাই অন্যকে সে দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার যিনি মন্ত্রী আছেন, তিনি টুইট করে এলন মাস্ক একজন পৃথিবী বিখ্যাত বিজনেস টাইকুনকে বিনিয়োগের জন্য ডাকছেন। যে কোনও মানুষই পশ্চিমবঙ্গের শ্রীবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগকারীকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। রাজ্য সরকার পারে, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রকও পারে। কিন্তু আমাদের রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী এখন পরিষদীয় মন্ত্রী এবং শিল্পমন্ত্রী, তিনি শৃঙ্খলারক্ষায় ব্যস্ত। তাই এলন মাস্ককে ডাকার দায়িত্ব এখন এখানকার সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী।”
প্রসঙ্গত, এলন মাস্ক চান তাঁর টেসলা গাড়ি ভারতে আনতে। রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি এ নিয়ে একটি টুইট করেন। টুইটে লেখেন, বাংলা মানেই বানিজ্য। এখানে সবরকম শিল্পের পরিকাঠামো রয়েছে। এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে যদি অন্যেরা সাথী হতে চায় তাতে অন্যায়ের কী আছে! কেউ কি শিল্পের কথা বলতে পারবে না? এ তো মহা মুশকিল।”
স্ববিরোধিতায় ভরা এই সরকার
এ প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার বেলাশেষে এসে বলল কোভিডের পরিস্থিতির কারণে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আবার পরেরদিন সরকার ঘোষণা করে দিল সামাজিক জমায়েত ৫০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ করা যাবে। খোলা মাঠে মেলা করা যেতে পারে। আমরা কারও কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাক চাই না। কিন্তু স্কুল কলেজ বন্ধ রাখবে, গণপরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে, প্রয়োজনে নাইট কার্ফু করবে আবার একইসঙ্গে সামাজিক জমায়েতের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে এই স্ববিরোধিতার রাজনীতি এবার বন্ধ হওয়া দরকার।”
নির্বাচন ঘিরে তামাশা
একই সঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তামাশা দেখা গেল। আমরা তো বলেছি আমরা চাই কোভিড পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে অন্তত এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক। পর মুহূর্তে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সুখেন্দুশেখরবাবু বক্তব্য রেখে বললেন ‘বিজেপি আতঙ্কিত। পরাজয়ের ভয়ে ভোট বন্ধ করার কথা বলছে। আগে উত্তর প্রদেশে গিয়ে পাঁচ রাজ্যের ভোট বন্ধ করে আসুক’। আমরা পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি করি। অন্য রাজ্যে কীভাবে কী ভোট হবে, কবে হবে, কবে বন্ধ হবে এসব তো নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে। আমরা পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়েছি।”
আগামী লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হবে
সিএএ আগামী লোকসভা ভোটের আগেই কার্যকর হবে বাংলায়। রবিবার জানালেন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আমরা এটা নিয়ে আন্দোলন করেছি। আমরা তো এটাকে বাস্তবায়িত করবই। কোভিডের জন্য এটা দেরী হচ্ছে। আমরাও চাই, কেন্দ্র সরকারও চায় যত দ্রুত সম্ভব এটাকে কার্যকর করা হবে। ভারতীয় মুসলমানদের স্বার্থে এবং ওপার থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যাঁরা আছেন তাঁদের নাগরিকত্বের স্বার্থে এটাকে কার্যকর করা হবে। ২০২৪ সালে যে সাধারণ নির্বাচন আসছে তার আগেই এই পশ্চিমবঙ্গে এটি কার্যকর হবে।”