কয়লাকাণ্ডে কলকাতার আরও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই রণধীরের একাধিক ভুয়ো সংস্থায় রোল হতো কয়লা পাচারের (Coal Scam) টাকা। কিন্তু কার টাকা তাঁর হাতে আসত তা জানতে এই অভিযান।
কলকাতা: কয়লা পাচারকাণ্ডে (Coal Scam) এবার আরও এক ব্যবসায়ী সিবিআইয়ের স্ক্যানারে। ব্যবসায়ী রণধীর বার্নওয়ালের বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে শুক্রবার সকালেই হানা দেয় সিবিআইয়ের একটি দল। প্রভাবশালীদের টাকা রাখার অভিযোগ রণধীরের বিরুদ্ধে। তাঁর সূত্র ধরে নতুন কোনও তথ্য পেতে পারেন তদন্তকারীরা।
ঠিক যেভাবে লেকটাউনের ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার বিরুদ্ধে কয়লা পাচারের কালো টাকা নিজের ভুয়ো সংস্থায় খাটিয়ে সাদা করার অভিযোগ উঠেছে, একই অভিযোগ বাঁশদ্রোণীর রণধীর বার্নওয়ালের বিরুদ্ধেও। সূত্রের খবর, প্রভাবশালীদের টাকা তাঁর কাছেই আসত। এরপর তা পৌঁছত প্রভাবশালীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এদিন রণধীরের বাড়ির পাশাপাশি তাঁর ডালহৌসির অফিসেও ঢুঁ মারছে সিবিআই। মূলত তাঁর অফিস থেকে ডিজিটাল এভিডেন্স মুঠোয় নিতে চাইছেন তদন্তকারীরা। নজরে রণধীরের ল্যাপটপ, ডেস্কটপও।
তদন্তকারীরা মূলত জানতে চান, রণধীরের কাছে কার টাকা আসত। অর্থাৎ কয়লাকাণ্ডের মূল চাঁই অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গে রণধীরের সরাসরি যোগাযোগ ছিল নাকি অন্য কেউ মধ্যস্থতা করত এই টাকা দেওয়ার ব্য়াপারে। একইসঙ্গে সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনও প্রভাবশালীর নাম তুলে আনার চেষ্টা করবে বলেও অনুমান। কারণ, সিবিআই জানতে পেরেছে, রণধীরের হাত ঘুরে একাধিক প্রভাবশালীর কাছে পৌঁছত কয়লার টাকা।
এর আগে এভাবেই কয়লাকাণ্ডের আরেক মাথা বিনয় মিশ্রর ভাই বিকাশ মিশ্রকে জেরার পর তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় নারুলা ও তাঁর বোন মেনকা গম্ভীরের নাম উঠে হাতে তদন্তকারীদের নজরে। বিনয় মিশ্রকে নাগালে না পেলেও গোয়েন্দারা জানতে পারেন, কয়লা পাচারের টাকার মোটা অংশ যেত তাঁর কাছে। কিছুটা যেত গণেশ বাগারিয়ার কাছে।
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই কুয়াশার জাল, বৃষ্টির আভাস হাওয়া অফিসের
গণেশ তাঁর অ্যাগ্রো ফুড সংস্থা-সহ একাধিক ভুয়ো কোম্পানির নামে দেশ-বিদেশে টাকা পাচার করতেন বলে অভিযোগ। বিনয়ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিনিয়োগ করতেন। দু’জনের প্রায় ১০টি ভুয়ো সংস্থা ছিল বলছে সিবিআই। বিনয়ের ভাই বিকাশ মিশ্রকে এরপরই নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়। বিকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সিবিআইয়ের হাতে উঠে আসে বেশ কিছু তথ্য।
চাঞ্চল্যকর কিছু আর্থিক লেনদেনের ‘রেকর্ড’ পায় সিবিআই। দেখা যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় নারুলা ও শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও কিছু অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। যদিও এই লেনদেনের সঙ্গে কয়লা পাচারকাণ্ডের যোগ কতটা বা আদৌ রয়েছে কি না তা নিয়ে সিবিআই এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি। ইতিমধ্যেই সিবিআই কথা বলেছেন অভিষেক-পত্নীর সঙ্গে। রণধীর বার্নওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কোনও প্রভাবশালীর নাম উঠে আসে কি না এখন সেটাই দেখার।