CAA: সিএএর বিরোধিতায় কল্যাণ-সুজনরা, নিশীথরা বোঝালেন আসলে CAA কী
CAA: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। ১৯৪৫ সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী; মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। আজ অপেক্ষার অবসান হল। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের (CAA) নোটিফিকেশন জারির মাধ্যমে এই আইন কার্যকর হবে গোটা দেশে।'
কলকাতা: দেশজুড়ে কার্যকর হল সিএএ বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন এমন সংখ্যালঘুরা নাগরিকত্ব পাবেন। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, যাঁরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দিতেই এই আইন। অর্থাৎ সিএএ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। সোমবার ১১ মার্চ এই আইন কার্যকর একের পর এক শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। তবে তৃণমূল, বামেরা বলছে, বিভাজন করতে এই সিএএ।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। ১৯৪৫ সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী; মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। আজ অপেক্ষার অবসান হল। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের (CAA) নোটিফিকেশন জারির মাধ্যমে এই আইন কার্যকর হবে গোটা দেশে।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এক্স হ্যান্ডেলে এই আইন কার্যকর হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “সিএএর মাধ্যমে ভারতবর্ষের কোনও নাগরিকের নাগরিকত্ব যাবে না। এটা মানুষকে নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার আইন। সকলকে বলব নিশ্চিন্তে থাকুন। শুধুমাত্র যারা ধর্মীয়ভাবে প্রতারিত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে অথচ নাগরিকত্ব পায়নি, যারা আবেদন করবে ভারত সরকার তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্য়বস্থা করবে।”
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যরও একই কথা। এ আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার, নেওয়ার নয়। মোদী যা বলেন তা করেন। একইসঙ্গে শমীকের বক্তব্য, ‘পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তবর্তী রাজ্য। এটা কোনও ধর্মশালা নয়, যে কেউ ঢুকে পড়বেন।’ উৎফুল্ল বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার তো গানও লিখে ফেলেছেন উৎফুল্ল হয়ে।
তবে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কারও নাগরিকত্ব গেলে জোরদার প্রতিবাদ হবে। বলেন, “নো এনআরসি। এনআরসি মানতেই পারি না। আর ক্যা-এর নাম করে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে এই চালাকিও আমরা করতে দেব না।”
অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সকলেই তো নাগরিক। তাঁদের আবেদন করতে হবে কেন? আবেদন করা মানে তো বলতে হয় আমি নাগরিক না। নাগরিক হতে আবেদন করছি।” আরেক বামনেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, “ভারতবর্ষকে বিভাজন করাই লক্ষ্য। যে বহুত্ববাদী চিন্তা নিয়ে ভারতের সমাজ তৈরি হয়েছে, বহু মানুষের মিলনক্ষেত্রকে বিভাজিত করার পরিকল্পনা বিজেপির।”
তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে। সিএএ নিয়ে অনেক আন্দোলন হয়েছে। সিএএ র বিরোধিতা আমরা করছি, করব। আমরা যাব মানুষের কাছে। শুধু ধর্মকে দেখে মানুষকে বিভাজন করাই হচ্ছে সিএএ। এটা হয় না। যদি কারও অধিকার থাকে তা কোনও আইন তা কেড়ে নিতে পারে না। ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পেয়েছে সমস্ত ধর্মের আত্মত্যাগ ও বলিদানের মধ্যে দিয়ে। কোনও ধর্মকে থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া অন্যায়। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবেই হবে।”