‘মমতা স্বীকার করেন না, অথচ শ্মশানে চিতা জ্বলে’
Dilip Ghosh: রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব দাবি করের্ছেন, অজানা জ্বরে কারও মৃত্যু হয়নি। মৃতদের অন্য অসুখ ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
কলকাতা: অজানা জ্বরের(Mystery Fever) প্রকোপ প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, ক্রমশ রাজ্যের একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই জ্বর। আর এই জ্বর নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন বিরোধীরা। একদিকে, শুভেন্দু অধিকারী চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনুখ মাণ্ডব্যকে। অন্যদিকে, মমতা তথ্য গোপন করছেন বলে অভিযোগ জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে স্বাস্থ্য সচিব দাবি করেছেন, অজানা জ্বরে কারও মৃত্যু হয়নি। আর এই প্রসঙ্গে মমতালে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মমতা স্বীকার করেন না, অথচ শ্মশানে চিতা জ্বলে’। দিলীপ ঘোষের দাবি, ঠিক যেমন ভোট পরবর্তী হিংসার কথা স্বীকার করেননি মমতা, তেমনই জ্বর সংক্রান্ত তথ্যও গোপন কর হচ্ছে।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করেন না। অথচ শ্মশানে চিতা জ্বলে। করোনার সময়ও এই কথা বলেছেন। এখন আবার শিশু মৃত্যু নিয়ে বলছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুই স্বীকার করেন না। ঠিক যেমন ভোট পরবর্তী হিংসার কথা স্বীকার করেননি।’ বিজেপি সাংসদের প্রশ্ন, ভোট পরবর্তী হিংসায় যদি ১৬ জন তৃণমূল নেতার মৃত্যুও হয়েও থাকে, তাহলে তাদের কেন স্বীকৃতি দিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? কোভিডেও তথ্য গোপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন দিলীপ। তিনি মনে করিয়ে দেন, করোনায় মৃতদের ‘কো-মর্বিডিটি’তে মৃত্যু বলে উল্লেখ করেছিল রাজ্য। দিলীপ ঘোষের দাবি, এ ভাবেই তথ্য গোপন করেন মমতা, আর তাতেই বিপদ বাড়ে।’
ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁর বিরুদ্ধে কোভিড বিধি অমান্য করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে পারছেনা, ভয় পাচ্ছে, যদি নন্দীগ্রামের ফলাফল হয়ে যায়! তাই ওকে নানা ভাবে আঘাত করছে।’ তাঁর দাবি, ‘লক্ষীর ভান্ডারেও অনেক লোক হয়েছে। সেখানেও করোনার নিয়ম মানা হয়নি। অথচ তৃণমূলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আজই এসএসকেএমে একটি বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘অজানা জ্বরে মারা যাওয়ার কোনও ঘটনা নেই।’ একই দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি দাবি করেন, শিশুদের এই জ্বরের প্রকোপ অজানা কিছু নয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ও আরএস ভাইরাসের জন্যই এই জ্বর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃত শিশুদের অন্যান্য অসুখ ছিল বলেও দাবি করেছেন স্বাস্থ্য সচিব।
গত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তরবঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলেছে শিশুরা। এখনও পর্যন্ত ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা জ্বরের প্রকোপ বেড়েই চলেছিল, তখন কেন সংক্রমণের খবর রাজ্য স্বাস্থ্যভবনকে জানাননি, উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা? ইতিমধ্যেই একাধিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, ভাইরোলজিস্টকে নিয়ে তৈরি হয়েছে আট সদস্যের কমিটি।
আরও পড়ুন: ‘অজানা জ্বর ফেলে সরকারের নজর ভবানীপুরে’, কেন্দ্রকে চিঠি শুভেন্দুর