Mock drill in Kolkata: মক ড্রিলের জন্য কতটা প্রস্তুত কলকাতা? রাতারাতি সব ব্যবস্থা করতে পারবে তো কলকাতা পুলিশ?
Mock drill in Kolkata: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও আকাশপথে হামলা চালাতে এলে শহরের থানা থেকে বাজানো হত সাইরেন। বিমান আসার আগে সাইরেনের শব্দ ওঠানামা করত। তার মানে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে।

কলকাতা: যে কোনও সময় নেমে আসতে পারে আক্রমণ। তাই মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে আগে থেকেই। রাত পোহালেই দেশের প্রায় আড়াইশো জায়গায় হতে চলেছে মক ড্রিল। মহড়া চলবে বাংলার একাধিক এলাকাতেও। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকও হয়ে গিয়েছে রাজ্যের। সূত্রের খবর, ৫৯ হাজার প্রশিক্ষিত সিভিক ভলান্টিয়ার, ৭২০০ আপদ মিত্র, ১৫০০ জন স্থায়ী কর্মীকে মহড়ায় কাজে লাগাতে চলেছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারিতে হবে রাজ্যের মহড়া প্রস্তুতি। রাজ্যের মোট ১৭টি জেলাকে অতি স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করে চলবে এই মহড়া। কলকাতায় এখনও পর্যন্ত কোনও মহড়ার নির্দেশ না এলেও, কলকাতা পুলিশ কতটা প্রস্তুত রাতারাতি এরকম মহড়া করতে? আদৌ কী ব্যবস্থা রয়েছে কলকাতায়?
১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় কলকাতা পুলিশের সব থানা থেকে এয়ার রেইড সাইরেন বাজানো হত। কিন্তু, যুদ্ধ মিটে যাওয়ার পর থেকে আর ব্যবহার হয়নি। সূত্রের খবর, যুদ্ধের সময় কলকাতার সব থানায় এয়ার রেইড সাইরেন থাকলেও বর্তমানে সেই যন্ত্র আদৌ আছে কিনা সে সম্পর্কে জানা নেই বেশিরভাগ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও আকাশপথে হামলা চালাতে এলে শহরের থানা থেকে বাজানো হত সাইরেন। বিমান আসার আগে সাইরেনের শব্দ ওঠানামা করত। তার মানে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। যুদ্ধবিমান চলে গেলে সমান্তরাল শব্দ বাজিয়ে মানুষকে বোঝানো হত বিমান চলে গিয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধের পর ২০২১ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ এয়ার রেইড সাইরেন বাজায়নি। ব্যবহার হয়নি সেই যন্ত্রের।
আইপিএস সৌমেন মিত্র পুলিশ কমিশনার হওয়ার পর ২০২১ সালে খোঁজ নিয়েছিলেন কলকাতার থানাগুলিতে এয়ার রেইড সাইরেন যন্ত্রের ব্যাপারে। তাঁর উদ্যোগে কয়েকটি থানায় ওই যন্ত্র খুঁজে বের করে সারানো হয়। ২০২১ সালে লালবাজার পুরনো কন্ট্রোল রুম বিল্ডিং থেকে সাইরেন মহড়া হিসেবে বাজানো হয়েছিল।
২০২২ সালে বড়তলা থানার ছাদে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি যন্ত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়। তৎকালীন ওসি দেবাশিস দত্ত সেই যন্ত্রের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন সেটি আসলে এয়ার রেইড সাইরেন। ১৯৪২ সালের যুদ্ধের সময় যে সাইরেন ব্যবহার করা হয়েছিল মানুষের সতর্ক করতে, সেই যন্ত্রই থানার ছাদে পড়েছিল পরিত্যক্ত অবস্থায়। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, যে সংস্থা ওই যন্ত্র তৈরি ও বিক্রি করত, তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর স্থানীয় এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় যন্ত্র সারানোর জন্য। তিনি যন্ত্রটি সারালে সেই সময় বড়তলা থানা থেকে প্রত্যেকদিন সকাল ন’টায় সাইরেন বাজানো হত। অর্থাৎ বড়তলার হাতে পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু কলকাতার বাকি থানাগুলি? সরকারি নির্দেশ এলে গোটা শহরকে কি সতর্ক করতে পারবে কলকাতা পুলিশ? উঠছে প্রশ্ন।
