‘মহিলা মুুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে মহিলা শিক্ষিকারাই হেনস্থার শিকার’, শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টায় সরব দিলীপ
Dilip Ghosh: ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। দুই শিক্ষিকা এখনও বিপদ মুক্ত নন। তাঁদের এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কলকাতা: যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা, সেই রাজ্যের মহিলাদেরই হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে এবার পাঁচ এসএসকে শিক্ষিকার আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সোমবার প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।
তিনি বলেন, “রাজ্যে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী আছেন, মহিলাদের আরও সন্মান বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেখানে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষিকাদের। এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে?”
দিলীপ অভিযোগ করেন, ” এই রাজ্যে সব থেকে কম বেতন পান শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের ডিএ বাড়ানো হয়নি। তার উপর তাঁদের বদলি করা হচ্ছে অন্যায়ভাবে। এর প্রতিবাদে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। এরাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।”
অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকারা। বদলির অস্বচ্ছতার দাবি তুলে রাস্তায় নামে শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ। বিকাশ ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চায় বলে অভিযোগ। যদিও ঘটনার সময় আদৌ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ভিতরে ছিলেন কি না তা এখনও জানা যায়নি। তবে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতেই শুরু হয় ঝামেলা। এরই মধ্যে পাঁচজন একটি শিশি বের করে মুখে কিছু একটা ঢেলে দেন। এরপরই তাঁদের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বের হতে দেখা যায়। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। দুই শিক্ষিকা এখনও বিপদ মুক্ত নন। তাঁদের এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি তিনজন ভর্তি আরজি কর হাসপাতালে। উল্টোদিকে, এই ঘটনায় শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করল উত্তর বিধান থানার পুলিশ।
সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ,আত্মহত্যার চেষ্টা ,সরকারি কর্মচারীকে আঘাত করা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে উত্তর বিধান নগর থানায়। সন্ধ্যাতেই ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক টিম। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে তারা।
ঘটনার প্রতিবাদে টুইট করে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। টুইটে লেখেন, “আজ বিকাশভবনের সামনে ৫ জন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষিকা নিজেদের বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে বিষ পান করেছেন। তাঁরা যে সামান্য টাকা মাসোহারা পান, তাতে তাঁদের আলাদা থাকার জায়গা জোগাড় করা সম্ভব নয়। প্রতিহিংসাপরায়ণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার শাস্তিমূলক বদলিকে নতুন অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে।”
শুধু এই ঘটনাতেই কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী উপনির্বাচন চাওয়ার বিষয়টিতেও প্রতিবাদ জানান তিনি। দিলীপ বলেন, “এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছেন। তাই কোভিড বাড়লেও তারা নির্বাচন চাইছেন। কোভিড বাড়তেই পারে। বিশেষজ্ঞরা সচেতন থাকতে বলছেন। বিজেপি কোভিড সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে প্রতি বুথে দু’জনকে নিয়োগ করেছে।”
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুজোর আগেই রাজ্যে উপনির্বাচন হতে পারে। ভোটের ফলপ্রকাশের পর ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করিয়ে নেওয়াটাই রীতি৷ গত ২ মে রাজ্যে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছিল৷ সেই হিসেবে আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে৷ সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরেই ভোটের বাদ্যি বাজতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: শিক্ষকের বদলি প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছিলেন, প্রধান শিক্ষিকাকে ‘লজ্জাজনক’ শাস্তি কলকাতা হাইকোর্টের!