দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যু মামলায় সিআইডি দফতরে গেলেন না শুভেন্দু! ইমেলে জানালেন কারণ

Suvendu Adhikari: সিআইডি সূত্রে খবর, প্রশ্নমালা তৈরি করে রেখেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, শুভেন্দুর অন্য দেহরক্ষীদের বয়ান হাতে নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যু মামলায় সিআইডি দফতরে গেলেন না শুভেন্দু! ইমেলে জানালেন কারণ
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 11:14 AM

কলকাতা: আজ, সোমবার ভবানীভবনে সিআইডি দফতরে হাজিরা দিচ্ছেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রাক্তন দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যুতে শুভেন্দু অধিকারীকে গত শনিবার ১৬০ সিআরপিসি-তে তলব করেছিল সিআইডি। সোমবার তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো প্রস্তুতিও সেরে রেখেছিলেন তদন্তকারীরা।

বেলা ১১টা ভবনীভবনে শুভেন্দু অধিকারীর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সিআইডি আধিকারিকদের ইমেল করেন শুভেন্দু। তিনি তাতে জানিয়ে দেন, আজ দিনভর তাঁর কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। পাশাপাশি হাইকোর্টে তাঁর দায়ের করা একটি মামলার শুনানিও রয়েছে।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা হওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটিও তেমন একটি মামলা। সেক্ষেত্রে সিবিআই দিয়ে যাতে এই সব মামলার তদন্ত করা হয়, তার আবেদন জানান শুভেন্দু। সোমবার সেই মামলারই শুনানি রয়েছে হাইকোর্টে। ফলে আজই তিনি সিআইডি দফতরে হাজিরা দিতে পারবেন না বলে ইমেলে তদন্তকারীদের জানিয়ে দেন।

তবে সিআইডি সূত্রে খবর, প্রশ্নমালা তৈরি করে রেখেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, শুভেন্দুর অন্য দেহরক্ষীদের বয়ান হাতে নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এক এএসআই শুভেন্দু অধিকারীর প্রাক্তন দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কাছেই মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়েছিলেন ওই দেহরক্ষী। সেই এএসআই-এর বয়ান সিআইডি-র অন্যতম হাতিয়ার।

ঘটনাটি ২০১৮ সালের। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর। সেই মামলার প্রায় তিন বছর পর গত জুলাই মাসে তদন্তের দাবি তুলে এফআইআর দায়ের করেন শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? সেই প্রশ্ন তুলে, সঠিক তদন্তের দাবিতে এফআইআর করেন নিহত দেহরক্ষীর স্ত্রী।

অভিযোগপত্রে সুপর্ণা উল্লেখ করেছিলেন, ২০১৮ সালে ১৪ অক্টোবর এই ঘটনা ঘটে। একটি ফোনে তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী নাকি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুভব্রতকে কাঁথি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পৌঁছন তাঁর স্ক্রী। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দ্রুত তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করতে হবে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স পেতে অনেক দেরি হওয়ায় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় শুভব্রতর। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর সন্দেহ, ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেদিন দেরিতে এসেছিল? এফআইআর-এর বয়ানে সেই প্রশ্নই তোলেন সুপর্ণা।

কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, ২০১৮ সালের ঘটনার পর এতদিন কেন তিনি চুপ করে ছিলেন? স্বামীর মৃত্যুর পিছনে যে রহস্য রয়েছে, তা কি তাঁর বুঝতে দেরি হল? ২০২১ সালে এসে কেন তিনি এফআইআর করলেন?

এই নিয়ে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্টত একে রাজ্য সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ হিসেবেই আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সিআইডি তদন্ত আদৌ নিরপেক্ষ হবে না, এই আশঙ্কা থেকেই তিনি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন যেন মামলাটির তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

জুলাই মাস থেকেই মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। শুভব্রতর পরিবারের বয়ান রেকর্ড করা হয়। একে একে ডেকে পাঠানো হয় শুভব্রতর তৎকালীন সহকর্মী তথা শুভেন্দুর বাকি দেহরক্ষীদের। তবে এদিন হাজিরা এড়ানোয় শুভেন্দুকে ফের কবে তলব করা হবে, তা এখনও সিআইডি-র তরফে কিছু জানানো হয়নি। আরও পড়ুন: আজ দিল্লিতে ইডি-র ‘ফেস টু ফেস’! দুর্নীতি প্রমাণের চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন অভিষেক