Alapan Bandyopadhyay: ‘…খুন করা হবে’, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দিয়ে চিঠি
Alapan Bandyopadhyay: মঙ্গলবার স্পিড পোস্টে পাঠানো একটি চিঠিতে ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে আলাপনবাবুর স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে।
কলকাতা: প্রাণনাশের হুমকি পেলেন রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Bandyopadhyay)। মঙ্গলবার স্পিড পোস্টে পাঠানো একটি চিঠিতে ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে আলাপনবাবুর স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে। যিনি ঘটনাচক্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
এক লাইনের চিঠিতে ইংরেজিতে লেখা, ‘আপনার স্বামী নিহত হবেন। কেউ আপনার স্বামীকে বাঁচাতে পারবে না।’ চিঠিতে সই রয়েছে জনৈক গৌরহরি মিশ্রের। কেয়ার অব মহুয়া ঘোষ। সম্ভবত তিনি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল টেকনোলজি বিভাগে কর্মরত।
চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের সায়েন্স সেক্রেটারিকেও। চিঠির খামে প্রেরকের নাম-ঠিকানা দেওয়া আছে। চিঠিটির কথা পুলিশকে জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারকেও। পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে নেমেছে। পুলিশের কাছে খাম-সহ চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য আলাপনবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যিনি আপাতত রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই পুলিশ একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। চিঠিটি কে পাঠিয়েছে, গৌরহরি মিশ্র কে, তা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চের (দিল্লি) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়। আজ, বুধবারই সেই মামলার শুনানি রয়েছে।
গত ২২ অক্টোবর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের বা ক্যাটের (CAT) কলকাতা বেঞ্চ থেকে মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রিন্সিপাল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই আজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আলাপন বন্দোপাধ্যায়।
আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং। গত ১৮ অক্টোবর প্রাথমিক পর্যায়ের শুনানির জন্য তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। যদিও আলাপনবাবুর অনুরোধের সেই শুনানির দিন পিছিয়ে ২ নভেম্বর করা হয়েছে। এরই মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি।
গত ২৮ মে ঘটনার সূত্রপাত। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর পর ওই দিন কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী একটি রিভিউ বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৎকলীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর জন্য ব্যস্ত থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হননি আলাপন। এরপরই তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁকে দিল্লিতে নর্থ ব্লকে হাজির হতে বলে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত না হয়ে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে। বিপর্যয় মোকাবিল আইন ভঙ্গ করার জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সেই জবাব চাওয়া হয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপরই অবসর নেন তিনি।
নির্ধারিত সময় দিল্লিতে যোগ না দেওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করে কেন্দ্র। এরপর ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং-এর তরফে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়া খারিজ করার জন্য সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের কলকাতা বেঞ্চে সম্প্রতি মামলা করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: পাঁচ মাসেই আগেই সতর্ক করেছিলেন চিকিৎসকরা, এখনও সঙ্কটমুক্ত নন সুব্রত