AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘ডবল ডিজিট পেরবে না বিজেপি, সেভ করে রাখুন আমার টুইট’, প্রশান্ত হুঙ্কার

সোজা সাপটা জবাব, বাংলায় 'ডবল ডিজিট' পেরোতেই বেগ পাবে বিজেপি।

'ডবল ডিজিট পেরবে না বিজেপি, সেভ করে রাখুন আমার টুইট', প্রশান্ত হুঙ্কার
বিজেপি ডবল ডিজিট পেরলো রাজনীতির পরিসর থেকে সরে যাব'
| Updated on: Dec 21, 2020 | 12:37 PM
Share

কলকাতা: শাহ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গেছেন, বাংলায় ২০০র বেশি আসন নিয়ে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গড়বে বিজেপি। শাহ ফিরতেই পাল্টা হুঙ্কার শাসকদলের ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishore)। সোজা সাপটা জবাব, বাংলায় ‘ডবল ডিজিট’ পেরোতেই বেগ পাবে বিজেপি। এখানেই থামেননি পিকে। চ্যালেঞ্জের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়ালেন। বিশেষ দ্রষ্টব্য বলে উল্লেখ করে লিখলেন, ‘সেভ করে রাখুন আমার এই টুইট’। এর চেয়ে বিজেপির ভাল রেজাল্ট হলে রাজনৈতিক পরিসর ছেড়ে চলে যাবেন বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

তবে এসবের উর্ধ্বে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দলে পিকে-র অবস্থান, প্রত্যেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি, আদৌ তৃণমূলে তাঁর পদ কী কিংবা তিনি কোনও বেতনভুক কর্মী কিনা, তা নিয়েই তৃণমূল শিবিরেরই একাংশের মনে কয়েকশো প্রশ্ন রয়েছে। তৈরি হয়েছে ইগোর লড়াই। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়েছেন পিকে! দলের ভাঙন হচ্ছে কেন? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জবাবদিহি করতে হচ্ছে পিকে-কে। কালীঘাটের বাড়িতে কোর কমিটির বৈঠকে ভোটকুশলী পিকের সঙ্গে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, উত্তরে নাকি প্রঘশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, ‘বিজেপি বিভিন্নভাবে এজেন্সির ভয় দেখাচ্ছে। অনেকে লোভে পড়েও এইসব করছে।’ ঘাসফুল শিবিরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে ভোটকুশলী রেখে লাভ কী হল?

তৃণমূলের অন্দরে প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকের টিমের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ যত বাড়ছে, বিজেপি ততই সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাতে চাইছে! এরইমধ্যে বঙ্গ সফরে এসে প্রথমে মেগা রোড শো ও পরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে সরাসরি ২০০-র বেশি আসন নিয়ে জেতার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গিয়েছেন অমিত শাহ। শাহ অবশ্য আগেই এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তবে শুভেন্দুকে পেয়ে বিজেপি যে ‘একস্ট্রা অ্যাডভানটেজ’ পেয়েছে, তা মেদিনীপুর আর বোলপুরের কর্মসূচিই স্পষ্ট প্রমাণ করছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন: শুভেন্দুই কি একুশে বিজেপির মুখ? প্রশ্নের উত্তরে অকপট অমিত শাহ

শাহর গত দুদিনের কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে পাল্টা তত্ত্বও উঠে এসেছে। তবে গুছিয়ে জবাব দিতেই টুইটে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন পিকে। সঙ্গে নেত্রীকেও বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর রণকৌশল যদি কাজ না করে, তাহলে রাজনীতির পরিসর ছেড়ে চলে যাবেন তিনি। পিকের হাতে ঘুঁটি সাজানোর দায়িত্ব দিয়েছেন নেত্রী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, সামনের বিধানসভা তৃণমূলের অগ্নিপরীক্ষা। সমস্ত শীর্ষ নেতৃত্বকে নির্বাচনী শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। তবে পিকে-র দায়িত্ব যে অনেক বড়!

পিকে-র টুইটের পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

তবে বিজেপির একাংশ বলছেন, ভোটে হারলে নেত্রীই পিকে সরিয়ে দেবেন। ওঁর নিজে থেকে সরতে হবে না। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা যাক, প্রশান্ত কিশোর কিন্তু এহেন চ্যালেঞ্জ আগেও একাধিকবার নিয়েছিলেন। এক সাক্ষাত্কারে নিজেই জানিয়েছিলেন, এবার পঞ্জাবের নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক মহলে রটে যে অমরিন্দর সিংকে রণনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাহায্য করবেন প্রশান্ত কিশোর। সেসময় অরবিন্দ কেজরীবাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, ‘প্রশান্ত কিশোরই যখন ভোট লড়াইয়ের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করবেন, তাহলে ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী বসিয়ে দেওয়া হোক। ‘ সঙ্গে সাংবাদিককে কেজরীবাল এটাও বলেছিলেন, ‘অবশ্যই আমার এই কথাটা সংবাদপত্রে ছাপবেন।’ সংবাদপত্রেই বিষয়টা পড়েছিল প্রশান্ত কিশোর। এবং সেটা পড়েই তত্ক্ষণাত্ পঞ্জাব যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তিনি। সাক্ষাত্কারে পিকে এটাও বলেছেন, পঞ্চাবের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। তবুও কেবল কেজরীবালের এই কথাটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে পঞ্জাব চলে গিয়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ‘টুইট সেভ করে রাখা’র বিষয়টিও রাজনৈতিক জগতে নতুন নয়। চলতি বছরেরই ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি নির্বাচনের সময়ে বুথফেরত সমীক্ষা অরবিন্দ কেজরীবালের ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখিয়েছিল। তখন টুইট করে দিল্লি বিজেপি রাজ্য সভাপতি মনোজ তিওয়ারি চ্যালেঞ্জ করেন, “সেভ করে রাখুন আমার টুইট। বিজেপিই আসতে চলেছে।” বাস্তবে তেমনটা হয়নি। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতাতেই মনোজ তিওয়ারি ক্ষমতায় আসেন। আর তখন কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি তিওয়ারি সেই টুইটও! রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কেবল হেয়ালির সুরেই সেই প্রসঙ্গ উত্থাপিত করেন এক্ষেত্রেও।