Tollywood Clash: ‘টলিউডে ঝামেলার পিছনে মমতা-অভিষেক সংঘাত’, বিস্ফোরক শতরূপ
Tollywood Clash: কেন তিনি এ কথা বললেন টিভি৯ বাংলার ‘বিকালের বিতর্ক’ অনুষ্ঠানে এসে সেই ব্যখ্যাও দেন। চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দাগেন স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও। শতারূপ এও বলছেন, প্রকারন্তরে মমতাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি চালান।

কলকাতা: টলিউডে টানাটানি চলছেই। টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে পরিচালকদের সংঘাত চরমে। পরিচালক বনাম ফেডারেশন জট দিনে দিনে যেন আরও জটিল হয়েই চলেছে। শুক্রবার থেকে শুটিং ফ্লোর বন্ধ রাখবেন পরিচালকরা। নিজেদের ফ্লোর থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। কঠিন সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত নিয়েই ফেলেছেন পরিচালকরা। যদিও সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ কিন্তু এখানে দেখছেন অন্য সমীকরণ। তাঁর সাফ কথা, মমতা-অভিষেকের ঝামেলাতেই ইন্ড্রাস্ট্রিতে শ্যুটিং বন্ধ হয়েছে। কেন তিনি এ কথা বললেন টিভি৯ বাংলার ‘বিকালের বিতর্ক’ অনুষ্ঠানে এসে সেই ব্যখ্যাও দেন। চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দাগেন স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও। শতারূপ এও বলছেন, প্রকারন্তরে মমতাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি চালান।
শতরূপের সাফ কথা, “এই গোটা ঘটনা তো ডিরেক্টরদের পক্ষ থেকে একটা মামলা করা নিয়ে এগিয়েছে। আমি ক্যামেরার সামনে আজ বলছি, ওই মামলার উকিলকে? সঞ্জয় বোস। যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। এটা সিপিএম-তৃণমূল-বিজেপির বিষয় নয়। মমতা-অভিষেকের ক্রস ফায়ারে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির শ্যুটিং বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। অভিষেকের আইনজীবী মামলা করেছে অরূপ বিশ্বাসের ভাইয়ের বিরুদ্ধে।” কিন্তু কোন মামলার কথা তুললেন শতরূপ? মনে করিয়ে বলেন, “স্বরূপ বিশ্বাস বলেছিলেন ৬০ শতাংশ পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। সেই মানহানির মামলা হয়েছিল। একইসঙ্গে ওদের গাজোয়ারি নিয়মকানুন নিয়ে ডিরেক্টররা মামলা করেছিলেন। দুটো মামলাতে আইনজীবী কে? ওটা জানলেই তো সব দুইয়ে দুইয়ে চার হয়ে যাবে। অভিষেকের আইনজীবী হচ্ছে ডিরেক্টরদের আইনজীবী। যিনি লড়াই করেছেন স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।”
যদিও অন্য মত আইনজীবী অনির্বান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এখানে রাজনীতি রয়েছে বলে মানতে নারাজ তিনি। তাঁর কথায়, “এখানে অনেকেই আছেন যাঁরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। যেমন রাজ চক্রবর্তী তৃণমূলের বিধায়ক, সুদেষ্ণা রায় তো সরকারের বিভিন্ন পদে থেকেছেন, স্বরূপবাবুও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। আবার অনেকেই আছেন যাঁরা কোনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তাই তৃণমূল ভার্সেস বিরোধী, এমনটা কিন্তু হচ্ছে না।”
পাল্টা শতরূপ বলেন, “আমরা কেই ওই লেন্সে দেখছি না। তাই তৃণমূলের বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও রাজ চক্রবর্তী যেটা বলছেন সেটা অনেক সঠিক কথা। বহিরাগত শব্দকে রাজনীতিতে আমদানি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে তুমি পশ্চিমবঙ্গে বহিরাগত অ্যালাউ করবে না, কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কেন বহিরাগত দিয়ে চালাবে?” এরপরই স্বরূপ বিশ্বাসের ‘ক্যারিয়ার’, সিনে জগতের সঙ্গে যোগের প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করেন। চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “কেন স্বরূপ বিশ্বাস চালাবেন? যাকে কেন্দ্র করে গোটা ঘটনাটা হচ্ছে সেই স্বরূপ বিশ্বাস লোকটাই সিনেমা তৈরির সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নয়। তিনি শুধু ফেডারেশন মানে সমস্ত গিল্ডের কালেকটিভ বডির মাথায় আছেন। যে লোকটা জীবনে কোনওদিন ক্যামেরা চিনল না সে ফেডারেশনের মাথায় বসে আছে।” যদিও আইনজীবী অনির্বান বলছেন, “ফালতু কথা।”
এদিকে শ্যুটিং বন্ধ যাতে না হয় তা নিয়ে গত বছর তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশ নিয়েও চলছে চাপানউতোর। আক্রমণ শানিয়েছেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষও। তিনিও মনে করাচ্ছেন মমতার কথা। বলছেন, “তালিবানি নিয়ম তৈরি হয়েছে। যা ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য ভাল নয়। টেকনিশিয়ানের স্বার্থ দেখার জন্যই তো ফেডারেশন। তারই মাথায় স্বরূপ। যাকে নিয়ে অনেক অভিযোগ। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ করে আছেন কেন?” কটাক্ষের সুরে শতরূপ বলছেন, “উনি বিজিবিএস করে বাংলায় ইন্ড্রাস্ট্রি চাইছেন। সেই সময় ওনার মন্ত্রীর ভাই একটা ইন্ড্রাস্ট্রি বন্ধ করে রেখে দিয়েছেন।” অনির্বান যদিও আবার পাল্টা কটাক্ষের সুরে সিপিএমকে অতীত মনে করাচ্ছেন।





