কলকাতা: সরকারি মেডিক্যাল কলেজে বিতর্কের মাঝেই আরও একটি বিজ্ঞাপন। আর সেই বিজ্ঞাপন নিয়েও নতুন ভাবে দানা বাঁধল আরও একটি বিতর্কের। একটি সংবাদপত্রে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের নাম দিয়ে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। সেই বিজ্ঞাপনে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে নিশ্চিত ভর্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপনে লেখা রয়েছে, NEET2024। কোনও অগ্রিম টাকা ছাড়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি গ্যারান্টিড। কেবল ভর্তির পর দিতে হবে ৬ লক্ষ টাকা। কলকাতা ও জেলা সকল পড়ুয়াদের স্বার্থেই এই বিজ্ঞাপন। কিন্তু প্রশ্ন এভাবে কি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পারেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা? নাকি এভাবে আগে কখনও সম্ভব হয়েছে?
কীসের ভিত্তিতে নিশ্চয়তা? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলে সরব চিকিৎসকদের একাংশ। বিষয়টি অবশ্য ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যভবনের নজরে এসেছে। এনিয়ে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এতে পড়ুয়ারা বিভ্রান্ত হতে পারেন। নানা প্রতারণার ফাঁদেও পা দিতে পারেন। আমরা পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।”
মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্যেই ছাত্র ভর্তি নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চলতি বছরের মে মাসে মেডিক্যালে ভর্তির জন্য NEET পরীক্ষা দিয়েছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা ইতিশা সোরেন। গত জুলাই মাসে ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সেই পরীক্ষায় ইতিশার র্যাঙ্ক ছিল ২৮৩১৯। মামলাকারীর বক্তব্য, প্রথম কাউন্সেলিং ও দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পরেও তিনি সরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ পাননি। তাঁর বক্তব্য, যথাযথ তফসিলি উপজাতিভুক্ত শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও তিনি ভর্তির সুযোগ পাননি। এদিনে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে অনেকেই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছে। তিনি কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। মামলা ওঠে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। তিনি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে দেন। এদিকে ডিভিশন বেঞ্চের মৌখিক নির্দেশ মানতে চাননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন। ভরা এজলাসেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকে এজলাস। জল এমন জায়গায় পৌঁছয় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে দুই বিচারপতির ‘দ্বন্দ্বে’র মেডিক্যাল ভর্তি প্রক্রিয়া মামলা এখন শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। তার মধ্যেই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি গ্যারান্টি বিজ্ঞাপন বের হওয়ায় বিতর্ক আরও বাড়ল। তৎপর স্বাস্থ্য ভবন।