TMC Candidate List: তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা বিভ্রাটের জের! ভাঙছে ঘর, ডিভোর্সের পথে স্বামী-স্ত্রী
West Bengal Municipal Elections 2022: যদিও স্ত্রীর নির্দল প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের সরব হওয়ার বিষয়টিও যে তিনি ভাল ভাবে দেখছেন না সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
কলকাতা: তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা (Trinamool Candidate List) নিয়ে বিভ্রাট কম হয়নি! দলের অন্দরে যেমন চাপানউতোর শুরু হয়, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও তেমনই বিক্ষোভ প্রতিবাদের আগুন জ্বলেছে। সেসব অবশ্য ধীরে ধীরে এখন অনেকটাই নিস্তেজ। কিন্তু এই প্রার্থী তালিকার বিভ্রাট যে একটা সংসার ভেঙে দিতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না দক্ষিণ দমদম পুরসভার (South Dumdum Municipality) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা। ভোটের টিকিট না পাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত। সেই ঝামেলার জল গড়াল বিবাহ বিচ্ছেদে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রথমে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে রীতা রায় চৌধুরীর নাম। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই নাম বাতিল হয়ে যায়। অন্যদিকে পাশের ওয়ার্ডে অর্থাৎ ১০ নম্বরে রীতাদেবীর স্বামী সুরজিৎ রায় চৌধুরী (ট্যাবলা)কে প্রার্থী করে দল। এরপরই তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে রীতা রায় চৌধুরী নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ান। যা থেকে দাম্পত্য কলহের শুরু বলে জানা গিয়েছে। স্ত্রী রীতা রায় চৌধুরী নাগেরবাজারে বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেছেন। সুরজিৎ রায় চৌধুরী জানান, দলের স্বার্থেই তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিস পাঠিয়েছেন।
সুরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, “আমার স্ত্রী দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে। বিধানসভা ভোটেও কিন্তু রীতা রায় চৌধুরীর নেতৃত্বেই আমরা বিধায়ক নির্বাচনে লড়াই করেছি। ওয়ার্ড থেকে ১৫০০-র বেশি ভোটে জিতেছি। প্রথম তালিকায় ওর নাম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকায় নাম নেই। আমার স্ত্রী যদি ভাবে স্বামী টিকিট পেয়েছে, অথচ ওকে দল যোগ্য মনে করল না বলে টিকিট দিল না সেক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি। সেই কারণে আমি আমার স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিস পাঠিয়েছি। বাপের বাড়িতে রয়েছে ও।”
যদিও একইসঙ্গে স্ত্রীর নির্দল প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের সরব হওয়ার বিষয়টিও যে তিনি ভাল ভাবে দেখছেন না সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, “আসলে যে কোনও মানুষেরই দেশের গণতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার অধিকার আছে। যে বা যারা বলছেন নির্দল, এই নির্দল কথাটাই তো আপত্তিজনক। যে কেউই তো ভোটে দাঁড়াতে পারে। তাঁকে নির্দল বলে তকমা দেওয়া হবে কেন? অনেকেই বলছেন স্বামী-স্ত্রী টিকিট দেওয়া যাবে না। অথচ উত্তর ২৪ পরগনা, বারাসত, গারুলিয়াতেও তো টিকিট পেয়েছেন। এটা তো এক জায়গায় দু’রকম বিচার হল। আমাকেই ভুগতে হল। দলের জন্য পরিবারকে ছেড়ে দিতে হল।”
রীতা রায় চৌধুরী নির্দলের হয়েই লড়বেন। তিনি মনোনয়ন পত্রও জমা দিয়েছেন জোড়া পাতা প্রতীকে। গোটা ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জোড়া পাতা প্রতীক এবং ব্যানার, হোর্ডিং পড়েছে। এমনও অভিযোগ, এই ওয়ার্ডে তৃণমূলের কোনও প্রচারই নেই। কোথাও কোনও দেওয়াল লিখন বা হোর্ডিংও দেখা যাচ্ছে না। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন টুম্পা দাস। অভিযোগ, তিনি কোনও প্রচারেই নেই। রীতা রায় চৌধুরীর বক্তব্য, “আমি ডিভোর্সের নোটিস পেয়েছি। তা গ্রহণও করেছি। এর বেশি এখন কিছু বলব না। এটা তো আমার পারিবারিক বিষয়। ভোট মিটুক, যা বলার তখনই বলব।”