চুক্তিপত্রের কোথাও নামই নেই ভুল্লারদের! সাপুরজির সেই ফ্ল্যাটের আসল মালিকানা নিয়েই গহীন রহস্য

নিউটাউনের আবাসনের বি-১৫৩ নম্বর টাওয়ার সেই ফ্ল্যাট ঘিরে পরতে পরতে রহস্য (Newtown Gangster Shootout)। উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

চুক্তিপত্রের কোথাও নামই নেই ভুল্লারদের! সাপুরজির সেই ফ্ল্যাটের আসল মালিকানা নিয়েই গহীন রহস্য
ফ্ল্যাটের আসল মালিক কে? তা নিয়েই ধন্দ
Follow Us:
| Updated on: Jun 10, 2021 | 1:40 PM

কলকাতা: নিউটাউনের আবাসনের বি-১৫৩ নম্বর টাওয়ার সেই ফ্ল্যাট ঘিরে পরতে পরতে রহস্য (Newtown Gangster Shootout)। উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবারই এই ফ্ল্যাটে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে দুই গ্যাংস্টারের! এখনও থমথমে এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তবে ফ্ল্যাটের মালিকের নাম পরিচয় নিয়েও বিস্তর ধন্দ রয়ে গিয়েছে। মিল নেই আবাসনের খাতা ও ব্রোকারের নথিতে ফ্ল্যাটের মালিকের নামের। এদিকে, ভাড়া নেওয়ার চুক্তিপত্রের কোথাও নামই নেই ভুল্লারদেরও (Jaipal Singh Bhullar)।

জানা গিয়েছে, নিউটাউনের সাপুরজিতে অভিজাত হাইজ়িং কমপ্লেক্সে ‘সুমিত কুমার’এর নামে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল পঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল সিং ভল্লার ও যশপ্রীত। কিন্তু এবার প্রশ্ন সুমিত কুমার কে? ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার চুক্তিপত্রে সুমিত কুমারের নামের পাশে যে নম্বর দেওয়া রয়েছে, তা সুইচ অফ! যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভুয়ো নাম-পরিচয় ব্যবহার করেই কি ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল  তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ফ্ল্যাট ঘিরেই দানা বাঁধছে একাধিক রহস্য।

গোল বেঁধেছে ওই ফ্ল্যাটের মালিকের নাম নিয়েও। প্রথমে জানা যায়, ওই ফ্ল্যাটের মালিকের নাম সাবির আলি। বিহারের বাসিন্দা তিনি। আবাসন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানাচ্ছেন, এই ফ্ল্যাটটি দেখাশোনা করতে আসতেন সাবির আলি। তিনি খোঁজখবর নিতেন ফ্ল্যাটের। ভাড়ার দেওয়ার ব্যাপারটিও দেখতেন। অন্যদিকে, এই ঘটনায় ধৃত ব্রোকার সুশান্ত সাহার বক্তব্য, ফ্ল্যাটটির এগ্রিমেন্টে নাম রয়েছে তাঁর দাদা আকবর আলির। তিনি কলকাতার আনন্দ পালিত রোডের বাসিন্দা। ব্রোকারের দাবি ফ্ল্যাটের মালিক আকবর আলি। তবে চুক্তিপত্রের কোথাও নেই ভুল্লারদের নাম।

জানা গিয়েছে, জয়পালরা যে সুমিত কুমারের নামে ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়, তা ব্রোকারের মাধ্যমে। এবং ফ্ল্যাটটি ব্রোকারের মাধ্যমে ভাড়া দেন আকবর আলিই। কিন্তু সুমিত কুমারকে না দেখে, কোনও পরিচয় না জেনেই ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। যার মাধ্যমে ঘর ভাড়া জোগাড় করেছিল জয়পালরা, সেই ব্রোকারদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ফ্ল্যাট মালিককে। জানা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীর পরিচয় দিয়ে নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাট মাসিক ১৫ হাজার টাকার চুক্তিতে ভাড়া নেয় জয়পাল ও যশপ্রীত। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য নিজেরা সরাসরি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় নি ওরা। তৃতীয় ব্যক্তি মারফত অর্থাৎ তার নাম ও নথি দিয়েই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল। দিয়েছিল অগ্রিম ২৫ হাজার টাকা। ২০ মে-র আগে চুক্তি করা হয়। ১১ মাসের জন্য করা হয়েছিল এই চুক্তি।

আকবর আলির স্ত্রী বলেন, “আমাদের এক পার্টির থেকে লিড এসেছিল। ওখান থেকেই ভাড়া হয়েছিল। আলাদা লোক নিয়েছিল। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারা নেয়নি। যারা ভাড়া নিয়েছিল, তারা তো নেই এখানে। তাদের এগ্রিমেন্ট পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। সব নথিই দিয়েছিল। সব ভুল।”

আরও পড়ুন: সকালেই খবর! কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পিন পয়েন্টে এনকাউন্টার! কলকাতায় স্রেফ একটা সূত্রেই মিলল গ্যাংস্টার জয়পালের খোঁজ

অভিজাত হাইজ়িং কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা আটোসাঁটো থাকার কথা। কিন্তু আবাসনের বাসিন্দাদের কথায়, তা একেবারেই নেই। যে কেউ কোনও সময়েই ঢুকে যেতে পারেন আবাসনে। কিন্তু বজ্র আঁটুনিতে যে ফস্কা গেঁরো রয়েই গিয়েছে, তা প্রমাণ করল সাপুরজির এই ঘটনা। বুধবার রাত ১টা নাগাদ তাদের দেহ বের করা হয় আবাসন থেকে। ঘর থেকে একাধিক মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ। উদ্ধার হয়েছে বিদেশি অস্ত্র। পাকিস্তান যোগেরও প্রমাণ মিলছে।