Bengal Global Business Summit 2022 : ‘এখন আর কর্মদিবস নষ্ট হয় না’, বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান মমতার
Bengal Global Business Summit 2022 : বাণিজ্য সম্মেলনের আগে আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বাণিজ্য সম্মেলনে বাংলার কৃতিত্ব ও সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের বক্তৃতার শেষে কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে কেন্দ্রকে 'খোঁচা'ও দিলেন।
কলকাতা : করোনার জন্য ২ বছর বন্ধ ছিল বাণিজ্য সম্মেলন। ২ বছর পর আজ থেকে ২ দিনের বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হল বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। করোনার সময় দেশে বেকারত্ব যখন বেড়েছে, তখন রাজ্যে বেকারের সংখ্যা কমার দাবি করলেন। অতিমারির পর বাংলাই বাণিজ্য সম্মেলন করে দেখাল বলে তিনি মন্তব্য করেন। শিল্পপতিদের রাজ্যে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে মমতা বললেন, একদিন দেশের মধ্যে শিল্পে এক নম্বর হবে বাংলা।
নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে এই বাণিজ্য সম্মেলনে দেশ বিদেশের শিল্পপতিরা অংশ নেন। প্রথমবার বাংলায় বাণিজ্য সম্মেলনে এসেছেন আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি। তিনি নিজের বক্তব্যে বাংলার ভূয়সি প্রশংসা করেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও নবজাগরণের বাংলার মনীষীদের ভূমিকার কথা বলেন। মহিলা ক্ষমতায়নে বাংলার ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে মমতার প্রশংসা করেন আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার। নিজের বক্তব্যে রাজ্যে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
তৃণমূল সরকারের আমলে এর আগে ৫ বার বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। নিজের বক্তব্যে মমতা বলেন, “বাংলা মানেই বাণিজ্য।” রাজ্যের উন্নয়নের কারণ তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের উন্নয়ন আটটি স্তম্ভের উপর নির্ভরশীল। সেই আটটি স্তম্ভ কী কী, তাও তুলে ধরেন তিনি। সেখানে আসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্প। এমনকী, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের কত শতাংশ মহিলা, সেই পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন।
রাজ্যের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজে রাজ্য এক নম্বরে। মাঝারি ও ছোট শিল্পে আমরা দেশের এক নম্বর। ই-টেন্ডারে এক নম্বর রাজ্য।” দেউচায় প্রকল্প হলে এক লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেন, করোনার সময় দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে, তখন রাজ্যে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিনিয়োগের জন্য কেন সেরা জায়গা, তার কারণও তুলে ধরেন মমতা। বলেন, শিল্পের জন্য জমি প্রস্তুত। সেইসময় বাম আমলের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, রাজ্যে আগে কর্মদিবস নষ্ট হত। এখন কোনও কর্মদিবস নষ্ট হয় না। তাঁর আরও বক্তব্য, বাংলায় কোনও ভেদাভেদ নেই। এখানে বিনিয়োগ করলে, বাংলার পরিবারের অংশ হয়ে যাবেন।
আজ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্যোগের জন্য তিনি মমতার প্রশংসা করেন। একইভাবে বাণিজ্য সম্মেলনে আসার জন্য রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী। আজ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বলেন, “করোনার সময় শারীরিক অসুস্থতার জন্য ২ বছর বাড়ির বাইরে বেরোননি তিনি।”