AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Partha Chatterjee: বাড়িতে পা রাখতেই বরণ, দূর থেকে হাসিমুখে ‘দেখল’ মমতার ছবি

Partha Chatterjee Released: তবে দল, অনুগামী, দলের শীর্ষ মহল তাঁকে নিয়ে যাই ভাবুক তিনি যে দলেরই ‘সৈনিক’ তা বারবারই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। ‘দিদি’ কোনও কথা না বললেও তিনি যে ‘দিদির’ সঙ্গেই রয়েছেন তাও বলেছেন বারবার। সোজা কথায়, মনে-প্রাণে-হৃদয়ে যে তিনি তৃণমূলেই আছেন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন চেনা ছন্দেই।

Partha Chatterjee: বাড়িতে পা রাখতেই বরণ, দূর থেকে হাসিমুখে 'দেখল' মমতার ছবি
বাড়িতে পা রাখতেই বরণ পার্থকে Image Credit: TV 9 Bangla
| Updated on: Nov 11, 2025 | 5:39 PM
Share

কলকাতা: বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গাড়িটা ছাড়ার পর ছিল শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা। নাকতলার বাড়ির সামনে গাড়িটা থামার পরেই ফের উপচে পড়ল হাসপাতালের সেই চেনা ভিড়টা। অশক্ত হাতে গাড়ি থেকে নামলেন পার্থ। ধরাধরি করে নিয়ে যাওয়া হল বাড়িতে। বরণ করতে এগিয়ে এলেন পরিবারের সদস্যরা। সাংবাদিকরাও ততক্ষণে ঝেঁকে ধরেছেন পার্থকে। শুধু একটা বাইট। নীরব পার্থর মুখে তখন এক চিলতে হাসি, চোখের কোণে চিকচিক করছে জল। ক্যামেরার লেন্সটা জু়ম করতেই দেখা গেল ঘরের ভিতর পুরো দৃশ্যটাই দেখছে টেবিলে রাখা মমতার ছবি। গ্রেফতারির পর থেকেই যে মমতার সঙ্গে দূরত্বটা না চাইতেও যেন বেড়ে গিয়েছিল অনেকটা। না চাইতেও হয়তো দলের অস্বস্তিটা নিজেই বাড়িয়ে ফেলেছিলেন পার্থ। 

পার্থর গ্রেফতারির পর আবার ইডির মেমোতে দেখা গিয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নম্বর। গ্রেফতারির পর তাঁকে ঘনিষ্ঠ কাউকে ফোন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেই সময় পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন পার্থ। যদিও তাঁর এই আচরণে দলের অন্দরে ক্ষোভেরও সঞ্চার হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোরও হয়েছিল বিস্তর। 

দিনটা ছিল ২০২২ সালের ১৪ অগস্ট। একুশের বিধানসভা ভোটের এক বছরের মাথায় পার্থর গ্রেফতারি, কেষ্টর বাড়িতে সিবিআই হানা– সব মিলিয়ে তখন তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতির আঙিনা। অস্বস্তি বেড়েই চলেছিল তৃণমূলের অন্দরে। ওই ১৪ অগস্টই প্রাক স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বেহালা ম্যান্টনে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে একটিবারের জন্যও এলাকার বিধায়ক মানে ওই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করেননি। কিন্তু, কেষ্টর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

এরইমধ্যে আবার দলও কড়া অবস্থা নেয় পার্থর বিরুদ্ধে। গ্রেফতারের ৬ দিনের মাথায় বাদ পড়েন মন্ত্রিসভা থেকেও। চলে যায় দলের যাবতীয় পদ। পরবর্তীতে দলের শৃঙ্খলা-রক্ষার কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় সাসপেন্ডই করা হবে তাঁকে। দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তদন্ত যতদিন না শেষ হবে ততদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় দল থেকে সাসপেন্ড থাকবেন। ওই বছর পার্থর গ্রেফতারির কিছু মাসের মধ্যেই চেনা ছন্দে মহাসমারোহে কলকাতার বুকে হয়েছিল দুর্গাপুজো। কিন্তু কেমন যেন মনটা ভার ছিল নাকতলা উদয়ন সংঘের। কলকাতার এই বিখ্য়াত পুজো ক্লাব বরাবরই পার্থর পুজো বলেই খ্যাত। কিন্তু ‘দাদা’ ছাড়াই এতদিন করতে হয়েছে পুজো। অন্যদিকে পার্থকে বিশেষ মুখ খুলতে দেখা যায়নি বেহালা পশ্চিমকেও। তাঁর কথা উঠলেই সবাই কেমন যেন হঠাৎ চুপ! 

Partha Poster

তবে দল, অনুগামী, দলের শীর্ষ মহল তাঁকে নিয়ে যাই ভাবুক তিনি যে দলেরই ‘সৈনিক’ তা বারবারই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। ‘দিদি’ কোনও কথা না বললেও তিনি যে ‘দিদির’ সঙ্গেই রয়েছেন তাও বলেছেন বারবার। সোজা কথায়, মনে-প্রাণে-হৃদয়ে যে তিনি তৃণমূলেই আছেন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন চেনা ছন্দেই। তারপর তিন বছর তিনটে মাস ধরে শুধু সময়কে দিলেন সময়। আর তাতেই যেন ঘুরল সময়ের চাকা। যে দলের সঙ্গে একদা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল সেই দলের কর্মীরাই তাঁর নামে তুলল স্লোগান। বাড়ির সামনে দেখা গেল ‘তোমাকে চাই’ পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে অনুগামীরা। দলের মহাসচিব থাকাকালীন বাড়ির নিচে যে জায়গায় বসে সাংবাদিক বৈঠক করতেন, কর্মী-অনুগামীদের সঙ্গে দেখা করতেন সেখানেও এখনও উজ্জ্বল পার্থরই পোস্টার। পুরনো মেজাজেই ঘরে ফিরল ঘরের ছেলে। এদিন সকাল থেকেই বাইপাসের ধারে যে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন সেখানে ছিল দেখবার মতো ভিড়। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে এক ঝলক ‘পার্থদা’কে দেখতে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি লেগে যায় অনুগামীদের। দুপুরে গাড়িটা যখন বাইবাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গাড়িটা ছাড়ল তখনও পিছনে স্লোগান তুলেই চলেছেন অনুগামীরা। নাকতলায় গাড়িটা ঢুকতেই পাড়ার ছেলেকে দেখতে ছুটে এলেন প্রতিবেশীরা। প্রিয় নেতাকে এক ঝলক দেখার জন্য উপচে পড়ল অনুগামীদের ভিড়। গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ক্যামেরার লেন্স বাড়ির ভিতরে উঁকি দিতেই দেখা গেল ছবিতে হাসিমুখে তাকিয়ে রয়েছেন সেই মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।