AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

History of Hindu Kings: ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে পৃথ্বীরাজ চৌহানের গুরুত্ব কম? কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?

History Textbooks: বাংলায় ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে কতটা গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে পৃথ্বীরাজ চৌহানকে? কম না বেশি? নাকি সঠিক ভারসাম্য রেখেই জায়গা দেওয়া হয়েছে পৃথ্বীরাজ চৌহানকে? কী মত শিক্ষাবিদদের? সেই বিষয়েই খোঁজখবর নিল TV9 বাংলা।

History of Hindu Kings: ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে পৃথ্বীরাজ চৌহানের গুরুত্ব কম? কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?
ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকে পৃথ্বীরাজ চৌহান প্রসঙ্গে কী মত শিক্ষাবিদদের?
| Edited By: | Updated on: Jun 05, 2022 | 5:43 PM
Share

কলকাতা : শীঘ্রই রুপোলি পর্দায় আসছে পৃথ্বীরাজ চৌহানের কাহিনী। পর্দায় পৃথ্বীরাজের ভূমিকায় রয়েছে, অক্ষয় কুমার। সম্প্রতি অক্ষয় কুমারের একটি মন্তব্য ঘিরে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বলিউড অভিনেতার প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, কেন আমাদের ইতিহাসের পাতায় মুঘল আর ব্রিটিশদের জন্য একশোটা অধ্যায় আর পৃথ্বীরাজের জন্য মাত্র একটি প্যারাগ্রাফ রয়েছে। অভিনেতার এই মন্তব্যের পর বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। বাংলায় ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে কতটা গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে পৃথ্বীরাজ চৌহানকে? কম না বেশি? নাকি সঠিক ভারসাম্য রেখেই জায়গা দেওয়া হয়েছে পৃথ্বীরাজ চৌহানকে? কী মত শিক্ষাবিদদের? সেই বিষয়েই খোঁজখবর নিল TV9 বাংলা।

পৃথ্বীরাজ চৌহান ছিলেন একজন রাজপুত রাজা। দ্বাদশ শতকের শেষের দিকে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই সিংহাসনে বসেছিলেন। তখন ১১৬২ সাল। তাঁর দুটি রাজধানী ছিল। আজমের এবং দিল্লি। দুই জায়গা থেকেই শাসনকার্য পরিচালনা করতেন তিনি। সিংহাসনে বসার পর বেশ কিছু ছোট ছোট যুদ্ধে আশপাশের রাজপুত রাজাদের হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ১১৯১ সাল তরাইনের যুদ্ধে মহম্মদ ঘোরিকে প্রথমে তিনি পরাস্ত করলেও পরে ঘোরির কাছে পরাজিত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইতিহাসের শিক্ষক জানান, আমাদের পাঠক্রমে যে বইগুলি রয়েছে, তাতে সপ্তম শ্রেণি ছাড়া আর কোথাও পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিশেষ উল্লেখ নেই। সপ্তম শ্রেণিতেও ছয়-সাত লাইন রয়েছে। হিন্দু রাজাদের বিষয়ে সত্যিই কম রয়েছে। রানী দুর্গাবতীকে নিয়ে আলোচনা হয়নি। এখানে মুঘলদের আধিপত্যই বেশি রয়েছে বলে মনে করছেন ওই শিক্ষক।

তবে পৃথ্বীরাজ চৌহান ছাড়াও আরও অনেক হিন্দু রাজাই ভারতে শাসন করে গিয়েছেন অতীতে। তাঁদের ভূমিকাও ভারতীয় ইতিহাসে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, তৎকালীন সময়ে ভারতে কোনও একক শাসক ছিলেন না। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২১ সাল থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৮৪ সাল পর্যন্ত ছিল মৌর্য শাসন। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ছিলেন ভারতের ইতিহাসের অন্যতম বড় এক হিন্দু রাজা। সম্রাট অশোকও এই মৌর্য বংশেরই। যদিও তিনি পরবর্তী সময়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এরপর রয়েছেন গুপ্ত সাম্রাজ্য সমুদ্র গুপ্ত, দ্বিতীয় চন্দ্র গুপ্ত। মারাঠা বংশের ছত্রপতি শিবাজিও রয়েছেন তালিকা। তাঁর সঙ্গে আবার যুদ্ধ হয়েছিল ঔরঙ্গজেবের। অর্থাৎ, ভারতে হিন্দু রাজাদের এক লম্বা ইতিহাস রয়েছে।

কিন্তু স্কুলের পাঠ্যসূচিতে এই সুবিস্তৃত ইতিহাস সংযোজন করা কতটা বাস্তব সম্মত? পৃথ্বীরাজ চৌহানকে কি ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে কম জায়গা দেওয়া হয়েছে? কী মনে করছেন রাজ্যের শিক্ষক মহল? খোঁজ খবর নিতে TV9 বাংলা থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকারের সঙ্গে। তাঁর মতে, কোনও পাঠ্যক্রমের বই যখন হয়, তখন সেখানে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। বইয়ের শব্দ সংখ্যা, পৃষ্ঠা সংখ্যা… সবই সীমিত। সেক্ষেত্রে যেগুলি প্রাসঙ্গিক, সেগুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এবং অনেক বিষয়ই থাকে যেগুলি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। তবে ভারতে কোন রাজার রাজত্বকাল কত বছর ছিল, তা ইতিহাস ঘাঁটলেই পাওয়া যাবে।

যোগাযোগ করা হয়েছিল নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ির সঙ্গেও। তিনি স্পষ্ট জানান, পৃথ্বীরাজ চৌহান তো আর হর্ষবর্ধন নন কিংবা সমুদ্রগুপ্ত নন। তেমন হলে, যদি পৃথ্বীরাজ চৌহানকে জায়গা দিতে হয়, তাহলে তো এদেরকে সরিয়ে ফেলতে হবে। পৃথ্বীরাজ চৌহানকে নিয়ে একাধিক ইতিহাসের বই রয়েছে। সেই বইগুলিতে পৃথ্বীরাজ চৌহান সম্পর্কে যথেষ্ট আলোকপাত করা হয়েছে। এমনকী ভারতের স্বাধীনতার পর যখন ইতিহাসের খণ্ড বেরোয়, সেখানেও যথেষ্টভাবে জায়গা দেওয়া হয়েছে। অশোক, হর্ষবর্ধন, সমুদ্রগুপ্ত সহ একাধিক রাজার রাজত্বকাল সম্পর্কে বলা হয়েছে। তাই পৃথ্বীরাজ চৌহানকে জায়গা দেওয়া হয়নি, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে অনেক বই রয়েছে বলেই জানান তিনি।