Sukanta Majumdar: ‘সব ববির লোক…’, সুকান্তকে ঘিরে বিক্ষোভ! নেপথ্যে অভিজিৎ-দিলীপ?

Protest Against Sukanta Majumdar: ২০২১ সাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে হঠাৎ সরিয়ে দেওয়া হল দিলীপ ঘোষকে। মেয়াদ শেষের আগেই দিলীপের জায়গায় বসানো হল তৎকালীন সময়ে বিজেপির উত্তরবঙ্গের যুগ্ম আহ্বায়ক সুকান্ত মজুমদারকে। উত্তরবঙ্গে তরুণ নেতা, অধ্য়াপক এলেন প্রচারের আলোয়। তখন যেন গোধূলী। আধার নামছে।

Sukanta Majumdar: সব ববির লোক..., সুকান্তকে ঘিরে বিক্ষোভ! নেপথ্যে অভিজিৎ-দিলীপ?
বিস্তর বিতর্ক..Image Credit source: নিজস্ব চিত্র

| Edited By: Avra Chattopadhyay

Nov 27, 2025 | 7:39 PM

কলকাতা: ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের গলায় ভিন্ন সুর। গো ব্যাক স্লোগান তুলছেন। সঙ্গে তুলছেন আরও একটি স্লোগান, তা হল ‘জয় শ্রীরাম’। কেউ যদি রাজনীতি নাও চর্চা করেন, তারপরেও এই স্লোগান সম্পর্কে অজান্তেই অবগত থাকবেন। বৃহস্পতিবার গেরুয়া শিবিরের এই স্লোগান শোনা গেল সুকান্তর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো যুবকদের মুখেই। শুধু তা-ই নয়, বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো শোনা গিয়েছে, ‘দিলীপ ঘোষ জিন্দাবাদ’ স্লোগানও। তা হলে কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তিরে জনসমক্ষে বিদ্ধ হলেন সুকান্ত?

২০২১ সাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে হঠাৎ সরিয়ে দেওয়া হল দিলীপ ঘোষকে। মেয়াদ শেষের আগেই দিলীপের জায়গায় বসানো হল তৎকালীন সময়ে বিজেপির উত্তরবঙ্গের যুগ্ম আহ্বায়ক সুকান্ত মজুমদারকে। উত্তরবঙ্গে তরুণ নেতা, অধ্য়াপক এলেন প্রচারের আলোয়। তখন যেন গোধূলী। আধার নামছে।

কয়েক বছর পেরিয়ে সুকান্ত এখন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। দিলীপ রয়ে গেলেন দিলীপেই। সাম্প্রতিককালে কিছু ঘটনা দল থেকে তাঁকে যেন অনেকটা দূরে ঠেলে দিয়েছে, এমনটাই মত একাংশের। এমনকি, বৃহস্পতিবার যখন ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সুকান্ত। সেই সময়ও বিজেপির অন্দরে একাংশের কাছে ‘কাঠগড়ায়’ দিলীপ। যার নেপথ্যে দু’টি ভিডিয়ো। একটা শোনা গেল সুকান্ত বলছেন, ‘এরা সব ববির লোক’। অন্যটায়, ‘দিলীপ ঘোষ জিন্দাবাদ’।

অবশ্য সাংবাদিক সম্মুখে এই কোনও প্রসঙ্গই তুলে ধরেননি সুকান্ত। বরং তৃণমূলের দিকেই দায় ঠেলে দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘পুলিশের ক্ষমতা নেই এদের সঙ্গে লড়ার। বিজেপি গণতান্ত্রিকভাবে লড়বে। এঁদের কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় আমাদের জানা।’ অন্যদিকে, সুকান্তর ‘তত্ত্ব’কে নস্যাৎ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘অনেকগুলি গোষ্ঠী রয়েছে। দ্বন্দ্ব রয়েছে। সে কারণেই পুরনো বিজেপির লোকজনই সুকান্ত মজুমদারকে গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছেন।’

ভিডিয়ো ঘিরে প্রশ্ন

ইতিমধ্য়েই দু’টি ভিডিয়ো প্রকাশ্য়ে এসেছে। একটিতে শোনা গিয়েছে, গাড়ির মধ্য়ে বসে সুকান্ত বলছেন, ‘এরা সব ববির লোক’। একাংশের মতে, ডায়মন্ড হারবারে ববি বলতে অভিজিৎ দাসের দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন সুকান্ত। দিলীপ ঘোষ যখন রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখন অভিজিৎ দাস উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতির পদ সামলেছেন। শুধু তা-ই নয়, দলের মধ্যে তিনি দিলীপ-ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। তা হলে সেই অভিজিতের লোকেরাই বিক্ষোভ দেখাল সুকান্তর বিরুদ্ধে?

এদিন বিজেপি নেতাকে এই ভিডিয়ো নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘সুকান্তদা এ কথা বলেছেন? কিন্তু গলার স্বর তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়েও নকল করা যেতে পারে। উনি এমন কথা বলেছেন বলে আমার বিশ্বাস হয় না। প্রত্যেক নেতার সঙ্গে প্যাচরা থাকেন। সুকান্তদা যদি সত্যিই এ কথা বলেন, বলেই থাকতে পারেন। উনি তো বালুরঘাটের লোক। এখানকার মানুষদের চেনেন না। আমি ওনাকে বলব এই প্যাচরাকে চিহ্নিত করুন।’

এই বিক্ষোভের মাঝে আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। যেখানে আন্দোলনকারীদের একাংশ স্লোগান তুলছেন দিলীপ ঘোষের হয়ে। সেই নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিজিৎ। তাঁর কথায়, ‘দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গটা তো তৃণমূলের বরাবরের কৌশল। তৃণমূলের পার্টি অফিসে গেরুয়া ঝান্ডা রাখা থাকে। যাতে আমাদের মধ্য়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি করতে পারে।’ পাশাপাশি, এই বিক্ষোভের সঙ্গে অভিষেক-পন্থীদের দিকেই দায় ঠেলেছেন অভিজিৎ। তাঁর কথায়, ‘ভিডিয়ো দেখে একজনকে চিহ্নিত করেছি। নাম রাজু দাস। ওদের বাইকগুলো রাখা ছিল শামিমের অফিসের সামনে। এই শামিম আবার অভিষেকের ডান হাত। ওখান থেকেই ওরা গেরুয়া ঝান্ডা নিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখায়।’

কিন্তু যিনি এই ঘটনার আগা থেকে ডগা পর্যন্ত জড়িয়ে। সেই দিলীপ ঘোষ কী বলছেন? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকেও। অবশ্য এই তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ। এই সব ‘বিজেপির সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না’ বলেই মত তাঁর। দিলীপের কথায়, ‘এই সব তৃণমূল সংস্কৃতির অন্তর্গত। বিজেপির লোকেরা বিজেপির কাউকে গো ব্যাক স্লোগান দেয় না। আর দিলীপ ঘোষের নামেই যা ইচ্ছা চালিয়ে দিলেই হল নাকি? ওদের কাছে সব ইস্যু পুরনো হয়ে গিয়েছে।’