‘আঘাত নিতে পারছিলাম না’, রাজীবের কান্না রাজভবনে

ক্ষোভের সূত্রপাত ঠিক কোথায় সেটাও এদিন চেপে রাখেননি রাজীব। স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যখন সেচমন্ত্রীর পদ থেকে কিছু না জানিয়েই তাঁকে সরানো হয়েছিল তখন থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন তিনি।

'আঘাত নিতে পারছিলাম না', রাজীবের কান্না রাজভবনে
রাজভবনের সামনে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজীব- নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 22, 2021 | 7:42 PM

কলকাতা: “আমার দলনেত্রী যিনি আমায় সুযোগ দিয়েছেন মানুষের সেবা করার, তাঁকে প্রণাম জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য…।” বক্তব্য শেষ করতে পারলেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। তার আগেই গলা ধরে এল। এরপর ঝোরে কাঁদলেন তিনি। রাজ্যপালকে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে থেকে বেরিয়ে এসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন সদ্যপ্রাক্তন বনমন্ত্রী। সেখানেই বক্তব্য শেষ করে চোখের জল মুছতে মুছতে উঠে যান নিজের সাদা স্করপিয়োতে।

তাঁর সিদ্ধান্ত তৃণমূলের জন্য বড় ধাক্কা হলেও এটা অপ্রত্যাশিত নয়। বিগত কয়েক মাস ধরেই ‘বেসুরো’ থাকার পর গত সপ্তাহে ফেসবুক লাইভে এসেই জানিয়েছিলেন নিজের ক্ষোভের কথা। এদিনও সেই কথারই পুনরাবৃত্তি শোনা গেল তাঁর গলায়। বললেন, “আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আমার হৃদয় আজ ব্যথিত।” এই কথা শেষ করার আগেই গলা ভারী হয়ে এল তাঁর। কেঁদে ফেললেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কান্নাভেজা গলায় বলে চললেন, “আমি কোনওদিন ভাবিনি আমায় এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আহত না হলে এই সিদ্ধান্ত নিতাম না। দয়া করে ভুল বুঝবেন না। আমি আঘাত নিতে পারছিলাম না।”

তাঁর ক্ষোভের সূত্রপাত ঠিক কোথায় সেটাও এদিন চেপে রাখেননি রাজীব। স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যখন সেচমন্ত্রীর পদ থেকে কিছু না জানিয়েই তাঁকে সরানো হয়েছিল তখন থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন তিনি। রাজীবের কথায়, “সেচ দফতর থেকে আমায় যখন সরিয়ে দেওয়া হয় সেদিন বিন্দুমাত্র সৌজন্য জানানো হয়নি। আমি অপ্রস্তুত ছিলাম। আমায় না জানিয়েই দফতর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ছেড়ে দেব। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখন টিভিতে এই সিদ্ধান্ত জানতে হয়েছে।” রাজীবের পদত্যাগ গ্রহণ করে নিয়েছেন রাজ্যপালও। টুইট করে জানিয়েছেন সে কথা।

আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন ‘বেসুরো’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান রাজীব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, “আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আজ, অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি বনদফতরের ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। আমি এতদিন মানুষের জন্য যা সেবা করতে পেরেছি, তাতে আমি ধন্য। এটাই আমার কাছে বড় সম্মানের। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।”

মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেও তৃণমূল কংগ্রেস এখনও ছাড়েননি রাজীব। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই সোজা চলে যান রাজভবনে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়েই মুখোমুখি হন সংবাদ মাধ্যমের। সেখানেই ইস্তফা দেওয়ার কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সদ্যপ্রাক্তন বনমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ‘মমতার আগুনে অনুপ্রাণিত’, তৃণমূলে যোগ সৌরভের