ব্রিকসই নয়, সনাতন নাকি যোগ দিয়েছিলেন ইন্দো জাপান কনফারেন্সেও! চোখ কপালে তদন্তকারীদের
Sanatan Roy Chowdhury: সনাতন যা দাবি করছেন, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে তো জল অনেক দূরই গড়াবে, আশঙ্কা তদন্তকারীদের।
কলকাতা: কেবল দক্ষিণ আফ্রিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস (BRICS) সম্মেলনেই নয়, ইন্দো জাপান কনফারেন্সেও (Indo Japan Conference) নাকি অংশগ্রহণ করেছিলেন সনাতন রায় চৌধুরি (Sanatan Roy Chowdhury)। তদন্তকারীরা বলছেন, ভুয়ো এই আধিকারিক যা দাবি করছেন, তা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি যেন দেবাঞ্জন দেবের থেকে এক ধাপ এগিয়েই চলছিলেন।
পুলিশি সূত্রে খবর, জেরায় সনাতন তদন্তকারীদের কাছে জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর ইন্দো-জাপান কনফারেন্সে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে ইন্দো-জাপান বিজনেস সামিট টোকিওতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বাঁকুড়াতে ইন্টার ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ হিউম্যান অফ ফান্ডামেন্টাল রাইটসে অংশগ্রহণ করেছিল সনাতন।
কিন্তু সনাতন যা দাবি করছেন, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে তো জল অনেক দূরই গড়াবে, আশঙ্কা তদন্তকারীদের। কারণ কীভাবে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস সম্মেলনে গেলেন? কার কার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে? উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। সনাতনের প্রভাবশালী যোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। কিন্তু এখন খোঁজ চলছে নামের।
সনাতন আদতে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। কিন্তু বেশ কয়েকমাস যাবৎ তিনি দাবি করে আসছিলেন, রাজ্য সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য, সিবিআইয়ের আইনজীবী, মুখ্যমন্ত্রী দফতরের উপদেষ্টা হিসাবে। কিন্তু শেষের দাবিটি করতে গিয়েই ফাঁদে পড়েছিলেন সনাতন। তালতলা থানার ওসির কাছে গত ২৫ জুন সনাতন ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী দফতরের উপদেষ্টা বলে পরিচয় দেন। তখনই সন্দেহ হয় পুলিশ কর্তার। তিনি একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেন।
এরপর গোটাটা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে ৩০ জুন। গড়িয়াহাট থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়। ভুয়ো পরিচয় ভাঙিয়ে গড়িয়াহাটের একটি ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন সনাতন। মঙ্গলবার সিঁথি থেকে গ্রেফতার করা হয় সনাতনকে।
আরও পড়ুন: রুদ্রর সঙ্গে ছবি, বাড়িতে বিজেপির ‘সদস্যতা’ রসিদও! ধৃত সনাতন যেন দ্বিতীয় দেবাঞ্জন
তদন্তে জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের বিচারপতির সই এবং সিল জাল করে ভুয়ো কোর্ট অর্ডার বের করে নিয়েছিল সনাতন। সেই জাল নথি দিয়ে সম্পত্তি হাতানোরও চেষ্টা হয়েছিল। ৮ ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের মালিক পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন, গত ২৭ জুন তিনি একদিনের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, পরিবার সূত্রে পাওয়া ওই সম্পত্তির অন্দরে থাকা অফিসে জাঁকিয়ে বসে রয়েছেন ধৃত সনাতন রায়চৌধুরী। তিনি নিজেকে ‘ডক্টর’ বলেও পরিচয় দেন। সম্পত্তির মালিককে সনাতন জানান, হাইকোর্টের অর্ডার পেয়ে এই সম্পত্তি তিনি দখল করেছেন। এরপরই ওই মালিক গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।