অনলাইনে পড়তে বলছে সরকার! কুলুঙ্গিতে উঠল কতজনের বইখাতা, সমীক্ষা করছে এসএফআই
SFI: অনলাইনে শিক্ষা পদ্ধতি দরিদ্র, তফশিলি জাতি, উপজাতি পড়ুয়াদের উপর কেমন প্রভাব ফেলেছে, এ ক্ষেত্রে ছাত্রীদের পড়াশোনার কী হাল, সেইসবই এই সমীক্ষার বিষয়বস্তু।
প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: কোভিড-১৯’র (COVID-19) প্রভাব অন্য সব ক্ষেত্রের মতোই শিক্ষাজগতেও থাবা বসিয়েছে। তার ফলে বেড়েছে ‘স্কুল ছুট’-এর সংখ্যা। অনলাইনে পড়াশোনার সামগ্রী জোগাড় করতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের। অনেককে বাধ্য হয়ে মাঝ পথে বন্ধ রাখতে হয়েছে পঠনপাঠন। এবার সেই পরিস্থিতির হাল যাচাইয়ে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসএফআই। তার প্রথম কাজটাই শুরু হয়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য থেকে।
অনলাইনে শিক্ষা পদ্ধতি দরিদ্র, তফশিলি জাতি, উপজাতি পড়ুয়াদের উপর কেমন প্রভাব ফেলেছে, এ ক্ষেত্রে ছাত্রীদের পড়াশোনার কী হাল, সেইসবই এই সমীক্ষার বিষয়বস্তু। লকডাউনের কারণে ড্রপ আউট-এর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেই বাল্য বিবাহও বাড়ছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে উঠে এসেছে। একইসঙ্গে জোর করে নাবালিকাদের বিবাহ দেওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী গার্হস্থ্য হিংসা কিংবা যৌন নির্যাতনের অপরাধও বেড়েছে বলেই খবর।
এই সব বিষয়ও এসএফআইয়ের সমীক্ষায় উঠে আসবে। ইতিমধ্যে সেই সমীক্ষা শুরু হয়েছে। তার রিপোর্ট শিক্ষা মন্ত্রককে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সর্বভারতীয় এসএফআই নেতৃত্ব। তবে শুধু যোগী রাজ্যে নয়, সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই সমীক্ষা করবেন এসএফআইয়ের সদস্যরা।
এই সমীক্ষার কাজে উত্তর প্রদেশ গিয়েছিলেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতা ধর। তিনি জানান, “আমরা, এসএফআইয়ের সদস্যরা পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। ওদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছি। ওদের পরিস্থিতিটা ওরা নিজের মুখেই আমাদের জানাচ্ছে। একই সঙ্গে ওদের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা।
কিছুটা উষ্মার সুরেই দীপ্সিতা জানান, চারপাশে সবকিছুই মোটামুটি আনলকড হয়ে গিয়েছে। অথচ শিক্ষাক্ষেত্রে লকডাউন চলছেই। সরকার বলেছে, অনলাইনে পড়াশোনার কথা। কিন্তু সরকার কি খোঁজ নিচ্ছে, এই অনলাইন মাধ্যমে কতজন পড়ুয়া সত্যিই শিক্ষা পেল? সরকার কি জানে এ দেশে কতজনের কাছে মোবাইল আছে? যদি মোবাইল থাকে তা হলে কতজনের স্মার্ট ফোন আছে? কতজনের বাড়ি অবধি ইন্টারনেট পৌঁছয়? সেটা না জানা থাকার কারণেই বহু ছেলে মেয়ে গত দেড় বছরে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে দাবি এসএফআই নেত্রীর। আরও পড়ুন: ভবানীপুরকাণ্ডে পাঁচ ‘ছাত্রনেতা’র পুলিশি হেফাজত! কড়া ধারায় মামলা রুজু
দীপ্তিতার কথায়, “সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ ছাত্র ছাত্রী রয়েছে দেশে, যাদের নিজস্ব মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপ এবং পর্যাপ্ত ইন্টারনেট ব্যবস্থা রয়েছে। বাকিদের কী হবে? তারা পড়াশোনা করবে না? এ কারণেই এই সমীক্ষা।” তিনি বলেন, সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করা হবে, কোনও যথাযথ পরিকাঠামো ছাড়া এই অনলাইন পড়াশোনা অলীক কল্পনা ছাড়া কিছুই নয়। যে অতিমারিতে বাচ্চাগুলোর বাবা, মা কাজ হারিয়ে ঘরে বসে আছেন, সেখানে কী ভাবে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ইন্টারনেটের পিছনে অর্থ ব্যয় করবে পড়ুয়ারা তারই উত্তর খুঁজতে এবার ময়দানে লাল ব্রিগেডের তরুণ তুর্কিরা।