CPIM: মেয়াদ ফুরিয়েছে SFI-র রাজ্য কমিটির, কার হাতে যাবে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের ব্যাটন?
SFI: ২০১৭ সাল থেকে এসএফআইয়ের সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সৃজন ও প্রতিকুর। দুটি মেয়াদ পূরণ করেছেন তাঁরা। ২০২১ সালের রাজ্য সম্মেলন থেকে ৬০ শতাংশ নতুন মুখ তুলে এনেছিল এসএফআই। সিপিআইএমের নিয়মানুসারে, দু-বছর অন্তর এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন হয়।

কলকাতা: মেয়াদ শেষ হয়েছে এসএফআইয়ের (SFI) বর্তমান রাজ্য কমিটির। এবার দায়িত্ব ছাড়তে চান এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য এবং সভাপতি প্রতিকুর রহমান। ইতিমধ্যেই তাঁরা সিপিআইএমের রাজ্য নেতৃত্বকে সে কথা জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এবার সৃজন, প্রতিকুরের জায়গায় কারা আসবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। জল্পনায় উঠে এসেছে চারজনের নাম। তাঁরা হলেন, দেবাঞ্জন দে, আকাশ কর, অনির্বাণ রায় চৌধুরী এবং ঋজুরেখ দাশগুপ্ত। এঁদের মধ্যে দেবাঞ্জন দে, অনির্বাণ রায় চৌধুরী ও আকাশ কর সবচেয়ে বেশি চর্চার মধ্যে রয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
বর্তমানে এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন দেবাঞ্জন দে। সুবক্তা, পরিশ্রমী ও লড়াকু নেতা হিসাবে ইতিমধ্যেই সংগঠনে নিজের পরিচয় রেখেছেন দেবাঞ্জন। অনির্বাণ রায় চৌধুরী বর্তমানে এসএফআইয়ের পূর্ব বর্ধমানের জেলা সম্পাদক। বর্ধমানে সিপিআইএমের কর্মসূচিতে অশান্তি ও তার জেরে জেলেও যেতে হয়েছিল প্রতিশ্রুতিমান এই ছাত্র নেতাকে। ওই সময়ে জেলে থাকতে হয়েছিল সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায় চৌধুরীকেও। আবার এসএফআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক আকাশ করও দক্ষ সংগঠক ও ভাল বক্তা। তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত প্রাক্তন বিধায়ক সত্যসেবী করের ছেলে আকাশ।
এই তিনজনের পাশাপাশি রাজ্য কমিটির দায়িত্বভার নেওয়ার চর্চায় রয়েছে ঋজুরেখ দাশগুপ্তের নামও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ছাত্রনেতা তিনি। সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের ওই জেলার সভাপতি। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন এক সাংসদের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
সংগঠনের সম্পাদক ও সভাপতির পাশাপশি দলের মুখপত্র ‘ছাত্র সংগ্রাম’ পত্রিকার সম্পাদকের পদটিও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এই পদে রয়েছেন দীপ্তজিৎ দাস। তিনি আবার এসএফআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি। পেশায় আবার চিকিৎসক। তাঁর অবশ্য এই পদে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বদল হলে উপরের চারজনের মধ্যেই কেউ দায়িত্ব পেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
যদিও সৃজন ও প্রতিকুরের দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী ছাত্র সংগঠন দেখার দায়িত্বে রয়েছেন। এব্যাপারে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করতে তিনি বলেন, “ওরা (সৃজন বা প্রতিকুর ) আমায় বা আমাদের কিছু বলেনি। আপনাদের বলে থাকলে বলতে পারব না। আর এই বদল হবে সম্মেলনের মধ্যে দিয়েই। নতুনরা সব সময় পুরনোর জায়গায় আসে। পুরনোরা নতুনদের জায়গা ছেড়ে দেয়। এটাই হয়।”
তবে দলীয় নেতৃত্ব মুখ না খুললেও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অন্দরের দাবার পাশা খেলা শেষ মুহূর্তে বদল না হলে সৃজন ও প্রতিকুরের দায়িত্ব ছাড়া একপ্রকার নিশ্চিত বলেই সিপিএমের অন্দরের খবর। উপরের চারজনের মধ্যেই দায়িত্ব বণ্টন হতে পারে সম্পাদক ও সভাপতির। অন্যদিকে, সৃজন ও প্রতিকুর রাজ্য কমিটির সদস্য। দুজন এসএফআই ছাড়লেও অন্য কোন গণ সংগঠনে তাঁরা যাবেন বা কী কাজ করবেন, তা স্থির করবেন সিপিআইএম নেতৃত্ব। তবে দুজনকেই একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, তা এখনও স্থির হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে এসএফআইয়ের সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন সৃজন ও প্রতিকুর। দুটি মেয়াদ পূরণ করেছেন তাঁরা। ২০২১ সালের রাজ্য সম্মেলন থেকে ৬০ শতাংশ নতুন মুখ তুলে এনেছিল এসএফআই। সিপিআইএমের নিয়মানুসারে, দু-বছর অন্তর এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন হয়। শেষবার (৩৭ তম) রাজ্য সম্মেলন হয়েছিল ২০২১ সালের ২১-২৩ সেপ্টেম্বর, নবদ্বীপে। তবে ইতিমধ্যেই দলের ইউনিট স্তরের সম্মেলন শুরু হয়েছে। রাজ্য কমিটির মেয়াদও ফুরিয়েছে। তবে কমিটির মেয়াদ ফুরোলেও ২০২৪ সালের জানুয়ারিতেই রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর।
