NRS Medical College: আরজি করের দুর্নীতির ছায়া এনআরএসে?
NRS Medical College: অচিরেই স্বাস্থ্য ভবনের আতস কাচের তলায় এসে যায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ, বর্তমান ইএনটি বিভাগীয় প্রধানের ভূমিকা। গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করে ফেলে স্বাস্থ্য ভবন।

কলকাতা: আরজি করের দুর্নীতির ছায়া এনআরএসে। দুর্নীতির ভাগীদার হওয়ার জন্য ইএনটি’র পিজিটি’দের উপরে চাপ তৈরির অভিযোগ। অনিয়মের জেরে সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা বিভাগীয় চিকিৎসক অনুপম রায়ের। চাপের মুখে ইএনটি’র বিভাগীয় প্রধানকে নিশানা করে অধ্যক্ষ-এমএসভিপি’র কাছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্মারকলিপি পিজিটি’দের।
‘চাপ’ দিয়ে অনিয়মের সোসাইটির সদস্য হওয়ার অভিযোগ পিজিটি’দের। একাধিক অনিয়মের নথিতে হুমকি দিয়ে সই করানোর অভিযোগ। তাতেই এখন যত শোরগোল এনআরএসে। সূত্রের খবর, কেলেঙ্কারির মূলে সরকারি হাসপাতালে বেআইনিভাবে ৪০ লক্ষ টাকা অনুদান গ্রহণ। বেআইনিভাবে সোসাইটি গড়ে বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা অনুদান নেওয়ার অভিযোগ ইএনটি বিভাগের বিরুদ্ধে।
স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি ছাড়াই বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে অনুদান গ্রহণ কী ভাবে? এনআরএসের নামে সোসাইটি গঠন করে অনুদান গ্রহণ কী ভাবে সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন। জানা যাচ্ছে, এনআরএসের নামে সোসাইটি গঠনে বিভাগীয় প্রধানকে অনুমতি দিয়েছিল প্রাক্তন অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তীর কার্যালয়। এনআরএস সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দফতরকে এড়িয়ে সোসাইটি গঠনে অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
তৈরি হয়ে যায় তদন্ত কমিটি
ফলে অচিরেই স্বাস্থ্য ভবনের আতস কাচের তলায় এসে যায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ, বর্তমান ইএনটি বিভাগীয় প্রধানের ভূমিকা। গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করে ফেলে স্বাস্থ্য ভবন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে আবার উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য। সূত্রে খবর, রিপোর্ট বলছে এনআরএস হাসপাতাল ইএনটি অ্যাকাডেমির নামে ৪০ লক্ষ টাকা অনুদান এসেছে জানেই না হাসপাতালের হিসাব বিভাগ! তা ঘিরেই এখন জোর শোরগোল।
প্রসঙ্গত, তিলোত্তমার মৃত্যুর পিছনে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতি, সেই দুর্নীতির অংশীদার হওয়ার জন্য চাপ তৈরি একটা কারণ বলে বারবার তিলোত্তমার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন। সেখানে এই খবর সামনে আসতেই নতুন চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের নামে একটা ডিপার্টমেন্টে বাইরে থেকে টাকা নেওয়ার জন্য সোসাইটি কীভাবে গঠন করা হল? সোসাইটির ঠিকানা হচ্ছে ইএনটি বিভাগের প্রধানের কার্যালয়! এদিকে সরকারি হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে সোসাইটি গঠনে স্বাস্থ্য ভবনের মাধ্যমে অনুমোদন তো শীর্ষ প্রশাসনিক স্তর থেকে আসা প্রয়োজন। তা ছাড়াই এটা হল কী করে, উঠছে প্রশ্ন। অনেকেই বলছেন, মেডিক্যাল কলেজ গুলিতে মেধাবী পড়ুয়াদের ভাল চিকিৎসক তৈরি করার কথা। কিন্তু কারা দিচ্ছে ‘দুর্নীতির পাঠ’?
চিকিৎসক মহলে শোরগোল
বিতর্কের মধ্যে এনআরএসের ইএনটি বিভাগের প্রধান সুমন্ত দত্ত সাফ বলছেন, চাপ কাউকে দেওয়া হয়নি। ওরা মেম্বার ছিলই। সেই মেম্বারশিপের মধ্যে কিছু কিছু পদাধিকারি ছিল। তাঁদের যেখানে সই লাগবে সেটা করতে বলা হয়েছিল। তাঁরা করতে চাননি। চাপ দেওয়া হয়নি। কেন এই ধরনের অভিযোগ উঠছে জানি না। তাঁর আরও দাবি, টাকা নয়ছয় কোনওভাবেই হয়নি। সবটাই সরকারের নিয়ম মেনে হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে নির্দিষ্টভাবে দেওয়াও হচ্ছে।” এনআরএসের অধ্যক্ষ ইন্দিরা দে বলছেন, “স্বাস্থ্য কমিটি আমাদের থেকে যা জানতে চেয়েছে তা জানানো হবে।”
ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র। বলছেন, “দুর্নীতি এখন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এনআরএসের এই ঘটনা দিয়ে আসলে গোটা রাজ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে তার স্বরূপই ফুটে বের হচ্ছে। আরজি কর মেডিকেল কলেজে দুর্নীতির ফলশ্রুতিতে তিলোত্তমার মৃত্যু হল। সেই দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের কীভাবে বাঁচানো হচ্ছে তা গোটা বাংলার মানুষ দেখল।”
