Mamata Banerjee: অবিজেপি জোটে সোনিয়াকে পাশে চেয়ে নতুন বছরে বার্তা মমতার, কংগ্রেসই হাত বাড়ায়নি: সূত্র

Congress: সূত্রের খবর, সম্প্রতি সোনিয়া গান্ধীকে এসএমএস বার্তা পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Mamata Banerjee: অবিজেপি জোটে সোনিয়াকে পাশে চেয়ে নতুন বছরে বার্তা মমতার, কংগ্রেসই হাত বাড়ায়নি: সূত্র
অবিজেপি জোট নিয়ে সোনিয়াকে বার্তা মমতার। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 21, 2022 | 1:58 PM

কলকাতা: অবিজেপি জোটে কংগ্রেসকে পাশে রাখতে চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। বৃহস্পতিবার গোয়ায় বসে এমনই দাবি করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরইমধ্যে জোর জল্পনা আরও এক তথ্য নিয়ে। সূত্রের খবর, নতুন বছরে পুরনো সমস্ত কিছু ভুলে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এগোনোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে প্রস্তাব নাকি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকেই দেন মমতা। সেই সূত্রই জানিয়েছে, সোনিয়া গান্ধী মমতার এই বার্তা নিয়ে বিশেষ কোনও আগ্রহ দেখাননি। যদিও তৃণমূল বা কংগ্রেসের তরফে কেউই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যে রাজ্যে তাদের ঘর ভাঙিয়ে শক্তি বাড়াতে চাইছে তৃণমূল। আবার কংগ্রেসের সঙ্গে চলার কথাও যদি বলে থাকে, তা হলে তা তো আপাতত বিরোধী বিষয়।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি সোনিয়া গান্ধীকে এসএমএস বার্তা পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ২০২১ সালে ভোট ঘিরে দু’দলের সম্পর্কের অবনতির প্রসঙ্গ যেমন উঠেছে, তেমনই নাকি নতুন বছরে নতুন করে এগোনোর বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের দাবি, মমতা সোনিয়াকে বার্তা দেন, লক্ষ্য ২০২৪। বিজেপিকে হারাতে রণকৌশল তৈরির আদর্শ সময় এটাই। সেই সূত্রই জানিয়েছে, এই বার্তায় পাল্টা কংগ্রেস সভানেত্রী জানান, এখনই এসব নিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড কিছু ভাবছে না। এমনও নাকি বলা হয়েছে, রাহুল গান্ধীও ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূলের সঙ্গে চলতে নারাজ।

সূত্রের খবর, কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছে, যেভাবে তাদের লোকজন ভাঙিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূল সংগঠন বাড়াতে চাইছে সেই অবস্থা থেকে হাতে ঘাসফুল রাখা মোটেই সম্ভব নয়। সেই সব রাজ্যের নেতৃত্বেরও এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে। মেঘালয়, ত্রিপুরা, গোয়ায় সে ছবি দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে দলীয় মুখপত্রে কিংবা প্রকাশ্য সভায়ও যেভাবে রাহুল গান্ধী বা কংগ্রেসের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে তৃণমূল সরব হয়েছে, তাতে কোনওভাবেই কংগ্রেসের তৃণমূলের সঙ্গে এক পংক্তিতে বসা সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই গোয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপিকে হারাতে আমরা একসঙ্গে লড়তে চাই। অন্য যেসব দল আছে তারা এটা বলতে ব্যস্ত তৃণমূল ভোট ভাগ করছে। কংগ্রেসের চিদম্বরম বলেছেন তৃণমূল কোনও কংক্রিট অফার দেয়নি। অথচ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পবন বর্মা ২৪ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টায় পি চিদম্বরমের বাড়ি গিয়েছিলেন। তিনি গোয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেসের জোট করে লড়ার প্রস্তাব নিয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু চিদম্বরমের তরফে কোনও সাড়া পাননি।” গোয়ায় বসে শুক্রবারও একই দাবি করেছেন পবন বর্মা। তিনি বলেছেন, “২৪ তারিখ আমি পি চিদম্বরমের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। গোয়ার কী অবস্থা, বিজেপিকে কীভাবে একসঙ্গে লড়ে হারানো যায় সমস্ত প্রস্তাব নিয়েই যাই। কংক্রিট প্ল্যান নিয়েই এক ঘণ্টা বসেছিলাম।”

শুক্রবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও টুইটারে লেখেন, ‘কংগ্রেস সম্পর্কে তৃণমূলের নীতি স্পষ্ট। কোথাও কোনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। তৃণমূল জাতীয় স্তরে অবিজেপি জোট চায়। তৃণমূলনেত্রী স্বয়ং কংগ্রেস সভানেত্রীকে বলেছেন বিকল্প জোটের স্টিয়ারিং কমিটি হোক, যৌথ কর্মসূচির আধার হোক। বারবার বলেছেন। এখনও বলছেন। কিন্তু কংগ্রেস সাড়া দেয়নি। অতীতের বিকল্পমঞ্চে ফাঁকগুলি এবার তৃণমূল রাখতে চায় না বলেই তৃণমূলনেত্রী ও দল প্রস্তাব দিয়েছে এবং দিচ্ছে। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে তৃণমূল এখনও যায়নি। যেখানে কংগ্রেস ব্যর্থ এবং মানুষ বিকল্প খুঁজছেন, সেখানেই বিজেপির বিরুদ্ধে কাজ করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এটা অতি স্পষ্ট নীতি। ফলে, তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে কংগ্রেস সহ জোট চায় এটা যেমন ঠিক, আবার যেখানে কংগ্রেস দায়িত্ব পালন করছে না, সেখানে তাদের অপছন্দেও তৃণমূল জনস্বার্থে সক্রিয়তা বাড়াবে, এটাও ঠিক। জননেত্রী এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজ্যে এই নীতিতেই চলছে দল।’

যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “যদি তোমাদের সদিচ্ছা থাকত তাহলে তোমরা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার কথা কেন বললে না। ঘাতক সেজে বাংলার লুঠের টাকা খরচ করে গোয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক, নেতাদের কিনলে কেন আর দেখালে তৃণমূল একাই পারে। আজ যখন পরিস্থিতি বিপরীত, তৃণমূলের পায়ের নীচে কোনও জায়গা নেই, আরব সাগরের জলে যখন তৃণমূলের পায়ের তলার জমি গোয়া থেকে ধুয়ে যাচ্ছে তখন তাদের মনে হয়েছে আগাম পরাজয়ের দোষ কংগ্রেসের ঘাড়ে ঠেলে দিই।”

আরও পড়ুন: Goa Assembly Election 2022 : “মিথ্যে কথা বললে মানহানির মামলা করুন”, জোট তরজা নিয়ে পি চিদম্বরমকে তোপ অভিষেকের