
কলকাতা: মেসি-কাণ্ডের ক্ষত এখনও ভুলতে পারেনি যুবভারতী। মুখ পুড়েছে গোটা বিশ্বের কাছে। বছর ঘুরলেই আবার টি-২০ বিশ্বকাপ। ম্য়াচ রয়েছে কলকাতাতেও। কিন্তু ইডেনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে কী ভাবছে কলকাতা পুলিশ? এদিন এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভর্মা। তাঁর স্পষ্ট কথা, “ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, মিটিং করেছি। আমরা সব পয়েন্ট নোট করেছি, যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। আগেও করছি, ভালভাবে হবে।” এই প্রসঙ্গই উঠল শুভেন্দু-শমীকের যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে। কিন্তু, শমীক সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর এভাবে শুভেন্দুর সঙ্গে একযোগে সাংবাদিক বৈঠকে শেষ কবে হয়েছিল তা যদিও মনে করতে পারছেন রাজনীতির কারবারিরা।
বিরোধী শিবিরের দুই তাবড় নেতাই এদিনও যুবভারতী-কাণ্ড নিয়ে অরূপ বিশ্বাস থেকে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষবাণ শানাতে থাকেন। সেখানেই ইডেনে বিশ্বকাপ ম্যাচের প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের প্রস্তুতির কথা উঠতেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য।
কলকাতা পুলিশের বৈঠক প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে শমীক বলেন, “জুন মাসে এই বৈঠক আবার হবে। বিরোধী দলনেতাকে সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখবেন।” রাজ্য ইতিমধ্যেই ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক দলই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশ বলছে, শমীক যে সময়ের কথা বলছেন সেই সময় তো রাজ্যে নতুন সরকার তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। জয়ের ব্যাপারে তিনি কী একশো শতাংশ নিশ্চিত? তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারীই হচ্ছে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী? শমীকের মন্তব্যেই বাড়ছে জল্পনা।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ধেয়ে গেলেও শমীক যদিও ততক্ষণে বলে দিলেন, “বিজেপি কোনও মুখ মুখোশের রাজনীতি করে না। যে মন্ত্রিসভা গঠিত হবে সেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিশ্চিত ভাবেই থাকবেন।” অর্থাৎ জয়ের ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত। কিন্তু শুভেন্দু কী মুখ? হাসিমুখে শমীককে তখন বললেন, “উনি তো পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেন। তাই পুলিশের লোকেদের চেনেন, ওরাও চেনে। তাই ওই কথা বলেছি। তবে বৈঠক যে তিনি করছেন তা কালের নিয়মে লেখা হয়ে গিয়েছে।” পাশে বসে হাসিমুখে শুভেন্দু শুধু বললেন, ‘ওটা বলা আসলেই সিম্বলিক’।
সাম্প্রতিককালে গোটা দেশের দিকে যদি আমরা নজর দিই তাহলে দেখব এনডিএ জোটে সর্বদাই যে বিজেপি কোনও মুখ্যমন্ত্রী মুখ রেখে লড়েছে এমনটা নয়। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষের সভাপতিত্বে যখন বঙ্গ বিজেপি ময়দানে নেমেছিল তখনই কোনও মুখের কথা খুব একটা শোনা যায়নি। পদ্ম নেতাদের মুখে একটাই কথা ছিল, মুখ একজনই তিনি স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। এবারও যে শমীকদের পালে হাওয়া লাগাতে মোদীতেই শান দিচ্ছে গেরুয়া শিবির তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তারমধ্যেই শুভেন্দুকে সামনে রেখে শমীকের এই হালকা চালের মন্তব্যেই বড় চাপানউতোর তৈরি হয়েছে নাগরিক মহলে।