Suvendu Adhikari: গঙ্গাসাগরের নজরদারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন শুভেন্দু, ‘জয়’ দেখছে রাজ্য
Suvendu Adhikari: অর্থাৎ 'রাজনৈতিক ব্যক্তিমুক্ত' কমিটি গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, পুরনো কমিটিতে রাখা হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে।
কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলায় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে উল্লেখ্য, নতুন নজরদারি কমিটি থেকে বাদ পড়লেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পুরনো তিন সদস্যের কমিটি বাতিল করে ২ সদস্যের কমিটি গঠন করল হাইকোর্ট। কমিটির নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। কমিটিতে রয়েছেন লিগ্যাল সার্ভিসেসেস সদস্য সচিব। রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৭ থেকে ১০ জানুয়ারির মধ্যে আদালতের দেওয়া অন্যান্য যাবতীয় নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। বিধি লঙ্ঘন হলে নজরদারি কমিটি তৎক্ষণাৎ মেলা বাতিলের নির্দেশ দিতে পারবে। তবে মঙ্গলবারের নির্দেশে আরও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, গোটা গঙ্গাসাগর এলাকাটাই এখন ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ অর্থাৎ যেখানে রাজ্যের বিধি কায়েম হতে পারে যে কোনও সময়ই।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটিতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম থাকা নিয়ে প্রথম থেকেই একটা চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। মামলাকারীরা অনেকেই বলেছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। সেক্ষেত্রে এই মেলা ঘিরে টানাপোড়েনে লাগতে পারে রাজনৈতিক রঙও।
মামলাকারীদের অনেকেই মনে করেছিলেন, আদালত এমন কয়েকজনকে নিয়ে কমিটি গঠন করুক, যাতে তাঁরা সম্পূর্ণ রূপে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন, তাঁদেরকে বাদ দিয়েই কমিটি গড়ার কথা বলা হয়েছিল।
অর্থাৎ ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিমুক্ত’ কমিটি গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, পুরনো কমিটিতে রাখা হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে। ওই পদে নিয়োগ এখনও আটকে রয়েছে। এরপরই নতুন কমিটির পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। মঙ্গলবারের নির্দেশে কমিটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও লিগ্যাল সার্ভিসের সচিবকেও রাখা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞকে রাখা হয়নি। হাই কোর্ট মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিয়েছে, মেলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এই নতুন কমিটি। গঙ্গাসাগর প্রাঙ্গনটি ‘নোটিফায়েড এরিয়া’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ কোভিড সংক্রমণ নিয়ে যাবতীয় বিধি-নিষেধ এবং ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। জোড়া টিকা আর শংসাপত্র না থাকলে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট না থাকলে, কাউকেই প্রবেশে ছাড়পত্র নয়। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে হবে মুখ্যসচিবকে।
মামলার প্রেক্ষাপট
রাজ্যের সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি বিচার করে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। পাশাপাশি আরও পাঁচটি মামলা হয়। সব মামলা একসঙ্গে করে শুনানি হয় গত শুক্রবার। শুনানির পর তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। তাতে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়েই আপত্তি উঠেছিল প্রবল। সেটি পরেরদিনই আদালতের নজরে আনা হয়।
আরও পড়ুন: আগের শর্তে বেশ কিছু অদলবদল! গঙ্গাসাগর মেলায় আবারও সবুজ সঙ্কেত হাইকোর্টের