কলকাতা: বিগত কয়েকদিন ধরেই শেক্সপিয়র থানা এলাকায় এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছিল চুরির ঘটনা। তারমধ্যে সিংহভাগই আবার মোবাইল চুরির (Mobile Theft) কেস। প্রায় রোজই থানায় জমা পড়তে থাকে মোবাইল চুরির অভিযোগ। তাতেই চিন্তা বাড়ে পুলিশের। নজরদারি বাড়ানো হয় গোটা এলাকায়। তারপরও ধরা পড়ছিল না চোরেরা। এরইমধ্যে এক মহিলার ফোন চুরি করে পালাতে গিয়ে অদ্ভুতভাবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল দুই যুবক। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখতে পায় বিগত কয়েকদিনে ওই এলাকায় যত চুরি হয়েছে তার বেশিরভাগের পিছনেই হাত রয়েছে এই দুই যুবকের।
শেক্সপিয়র থানা এলাকায় প্রচুর নাইট ক্লাব, পাব, বার রয়েছে। অফিসে শেষে সেখানে ভিড় জমান শহরের বহু মানুষ। অভিযোগ, বিগত কয়েকদিনে রাতের দিকে এই ক্লাব-পাবগুলিকে টার্গেট করতে শুরু করে চোরেরা। চুরি যায় বহু মানুষের মোবাইল। কিন্তু, অভিযোগ পেলেও কিছুতেই চোরেদের টিকির খোঁজ পাচ্ছিল না পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, রাতের দিকে বার থেকে বেরোনো ব্যক্তিদের উপরেই বেশি নজর রাখত চোরেরা। চুপিসাড়ে নজর রাখত কার অবস্থা বেশি টালমাটাল, কারই বা হুঁশ কম। এদিকে বার থেকে কেউ বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করলেই তা নিয়ে বাইকে চড়ে ছুট দেয় চোরেরা।
বিগত কয়েকদিনে যে কয়েকটি চুরি হয়েছিল, সবকটার প্যাটার্ন একই বলে খবর। এমনকি অভিযোগকারী থানায় চোরেদের বর্ণনা দিলেও, তাদের বাইকের কথা বললেও সেই বাইকের কোনও নম্বর প্লেট না থাকায় বাড়ছিল সমস্যা। খোঁজ মিলছিল না চুরিতে ব্যবহৃত বাইকের। এদিকে হেলমেট পরে থাকায় সিসিটিভি দেখেও চিহ্নিত করা সহজ হচ্ছিল না। এরইমধ্যে ৪ তারিখ সন্ধ্যাবেলা একই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে ওই চত্বরে। এক মহিলার মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় দুই যুবক। এদিকে মহিলার চিৎকার শুনে আসেন এলাকায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক গার্ড। তিনিই মহিলার কাছে বাইক ও চোরেদের বর্ণনা শুনে ফোন করতে থাকেন সতীর্থদের। আশপাশের এলাকার সমস্ত নাকা পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাতেই মেলে সাফল্য। কিছু দূরেই ধরা পড়ে মহম্মদ ইমরান (২৪), শেখ আশিক (২২) নামে দুই যুবক। তাদের জেরা করতেই চোখ কপালে ওঠে তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, শেক্সপিয়র সরণি এলাকায় চুরির পর দ্রুত একটি গোপন জায়গায় গিয়ে একটি নকল নম্বর প্লেট তারা গাড়িতে লাগিয়ে নিত। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে করত এই কাজ। সিসিটিভি এড়াতে সর্বদা মাথায় থাকত হেলমেট। এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এর আগে হেয়ার স্ট্রিট থানায় ইমরানের নামে একটি সোনার চেন চুরির অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতারও হয়েছিল। সম্প্রতি জামিন পেতেই ফের শুরু করে চুরি।