AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘রাজ্যের দায়িত্ব পালন নিয়ে আমি চিন্তিত’, আজকেই বিশ্বভারতী অবরোধ মুক্ত করার নির্দেশ আদালতের

Viswa Bharati Case: এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতির বক্তব্য, "রাজ্যের দায়িত্ব পালন দেখে আমি বেশি চিন্তিত।"

'রাজ্যের দায়িত্ব পালন নিয়ে আমি চিন্তিত', আজকেই বিশ্বভারতী অবরোধ মুক্ত করার নির্দেশ আদালতের
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 5:24 PM
Share

কলকাতা: আজকের মধ্যেই অবরোধমুক্ত করতে হবে বিশ্বভারতীকে। ৫০ মিটারের মধ্যে যাতে কোনও বিক্ষোভ না হয়! নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, উপাচার্য বা আন্দোলনকারী যাতে কেউ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। নির্দেশ মানা না হলে অর্থাত্ আন্দোলন তোলা না হলে সোমবারের মধ্যে ফের জানাতে হবে বিচারপতিকে।

বিশ্বভারতীর বিক্ষোভ নিয়ে অসন্তুষ্ট বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতির বক্তব্য, “রাজ্যের দায়িত্ব পালন দেখে আমি বেশি চিন্তিত।” ভাইস চ্যান্সেলর বিদ্যুত্ চক্রবর্তীকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “এই বিক্ষোভের কারণ কী?” আন্দোলনরত পড়ুয়াদের আইনজীবী বলেন, “ভাইস চ্যাঞ্চেলর পালাতে চাইছেন। নিজেকে আটকে রাখলে লোকে কী করবে? পিস ফুল এজিটেশন চলছিল। কেউ ওঁকে বিরক্ত করেনি”। এরপর বিচারপতি পাল্টা বলেন, “তার মানে তো পড়াশুনা বন্ধ হতে পারে না। স্টুডেন্ট ইউনিয়ন কখনই ট্রেড ইউনিয়ন নয়। বিক্ষোভ করতে ইচ্ছে হলে উপাচার্যের বাসভবন থেকে ৫০ মিটার দূরে করতে হবে।”

আদালতের তরফে এদিন স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, এদিনই দুপুর ৩টের মধ্যে যাতে অবরোধমুক্ত করা হয় ক্যাম্পাস। ৩ জন পুলিশ কর্মী সর্বক্ষণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবে। আদালত জানিয়ে দেয়, ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ অবশ্যই শোনা হবে, তবে তার আগে হঠাতে হবে অচলাবস্থা।

তবে আদালতের রায় প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী বলেন, “আমরা এখনও লিখিত কোন অর্ডার পাইনি। তবে নিউজ চ্যানেলে দেখে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা লোকাল থানা এবং বোলপুর এসডিপিও কে বলেছি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে কাজ করতে।”

হাইকোর্টের রায় নিয়ে বীরভূম লোকসভার তৃণমূল সাংসদ শতাব্দি রায় বলেন, “হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিতে হবে।” পাশাপাশি তিনি এও বলেন, “উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রদের যে অভিযোগ আছে তার নিশ্চয়ই কোন যথার্থতা আছে।  আমার মনে হয় উপাচার্যকে কথা বলে বিষয়টিকে সমাধান করা উচিত। আর বিজেপি সর্বদা তৃণমূলের উপর এই সমস্ত দোষ আরোপ করে আগে বিজেপির স্বীকার করা উচিত কেন তারা রাজ্যপাল কে ব্লক সভাপতি এবং উপাচার্যকে রাজ্য সম্পাদক হিসেবে ব্যবহার করছেন।”

প্রসঙ্গত, সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করে পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে রিট পিটিশন জমা দিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কী উল্লেখ করা হয়েছে সেই পিটিশনে? বলা হয়, পুলিশ ও আধিকারিক নিয়োগ করে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার নির্দেশ জারি করুক আদালত। পাশাপাশি, সেন্ট্রাল অফিসের সামনের গেটে পড়ুয়াদের তালা ঝোলানো, গেট টপকে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা-সহ একাধিক অভিযোগ জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় (VBU) কর্তৃপক্ষের তরফে।

৩৮ পাতার সেই পিটিশনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিক্ষোভের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সাহায্য় পাওয়া যায়নি। এমনকি, পুলিশ সুপারকে ফোন করেও কোনও লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ। তাই পূর্বের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরুক বিশ্বভারতী।

সম্প্রতি, পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ের জেরে রোজকার খাবারটুকুও জুটছে না বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন উপাচার্য বিদ্য়ুত্‍ চক্রবর্তী। ক্রমেই জটিল হচ্ছে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি। পড়ুয়া বিক্ষোভের জেরে বাড়তি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (VBU) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পুলিশের কাছে চিঠি মারফত বাড়তি নিরাপত্তা চেয়েছেন উপাচার্য। এই চিঠির কথা স্বীকার করেছেন জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। এদিকে উপাচার্য যখন বাড়তি নিরাপত্তা চাইছেন, তখন শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় এফআইআর করেন দুই ছাত্রীও!

বিশ্বভারতীর উপাচার্যের আবেদন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন তিনি পুরো বিষয়ের উপর বাড়তি নজর দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, এরপরেই বুধবার বিশ্বভারতীর গেটের সামনে গত দিনের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। চোখে পড়েছে বাড়তি পুলিশ নজরদারি। সোমবারই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ফেস্টুন লাগাতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের শ্লীলতাহানি করে বলে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ করেছেন দুই ছাত্রী। তাঁদের বিস্ফোরক দাবি, সেখানে উপস্থিত উপাচার্য বলেন, “মেয়ারা নয়, শুধু পুরুষ কর্মীরা সামলাক।”

তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্রছাত্রীরা। উপাচার্যের বাড়ির বাইরে আন্দোলনে অনড় তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাধিক। শিক্ষকমহলের একাংশের প্রশ্ন, কেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না উপাচার্য? প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে উপাচার্য এই দায় কি এড়িয়ে যেতে পারেন, সে প্রশ্নও উঠছে। তবে এদিনের মামলায় আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অবশেষে সিটের দায়িত্বে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চেল্লুর