Prasanna Roy: প্রসন্নে প্রসন্ন ভাগ্যদেবী? নাকি জারিজুরি করেই ১০০ কোম্পানির ডিরেক্টর, সিবিআইয়ের নজরে একাধিক বিষয়…
CBI: শুধু কি হোটেল? একেবারেই তেমনটা নয়। সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ও টাইলসের ব্যবসাতেও প্রসন্নর ভাগ্যদেবী প্রসন্ন।

সুমন মহাপাত্র
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রসন্নকুমার রায়। গ্রেফতারির পর আপাতত দু’দিনের সিবিআই হেফাজতে তিনি। ইতিমধ্যেই সিবিআই তাঁর সম্পর্কে নানা তথ্য হাতে পেয়েছে বলেই খবর। সেসব তথ্য নাকি মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মত। সিবিআই সূত্রে খবর, প্রসন্ন ১০০টি সংস্থার ডিরেক্টর। বিভিন্ন জায়গায় দামী হোটেল রয়েছে তাঁর, সূত্র মারফৎ এ তথ্যও উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারি নথি (Ministry of Corporate Affair) অনুযায়ী প্রসন্ন শ্রী দুর্গা ডেভেলপার্স লিমিটেডের ডিরেক্টর। এই সংস্থার হাতে রয়েছে আটটি রিসর্ট। কেন্দ্রের তথ্যসূত্র বলছে, তালিকায় রয়েছে, ১. সুরঞ্জনা রিসর্ট, সুন্দরবন ২. হোটেল মিলি, দিঘা ৩. চলন্তিকা রিসর্ট, গাদিয়ারা ৪. রিসর্ট মূর্তি, ডুয়ার্স ৫. লাটাগুড়ির হিভেন ভিউ ইন ৬. রয়্যাল বেঙ্গল রিসর্ট, সুন্দরবন ৭. ব্যাম্বু ভিলেজ রিসর্ট, চিলাপাতা ৮. এসডিডি হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট, আলিপুরদুয়ার।
শুধু কি হোটেল? একেবারেই তেমনটা নয়। সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ও টাইলসের ব্যবসাতেও প্রসন্নর ভাগ্যদেবী প্রসন্ন। সেই সংস্থাগুলো কি দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জায়গা ছিল, তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, প্রসন্নর নামে যে সংস্থাগুলির খোঁজ মিলেছে, তার একটা বড় অংশ শেল কোম্পানি। প্রসন্নর ৮০টি সংস্থা লিমিটেড লায়াবিলিটি পার্টনারশিপ বা এলএলপি (LLP)। তিনটি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড। সিবিআই সূত্রে খবর, এলএলপিতে থাকা কোম্পানিগুলির ডিরেক্টর প্রসন্ন। সূত্রের খবর, ৯টি সংস্থার ঠিকানা রাজারহাট, ৯টির ঠিকানা লেকটাউন, ৯টি কোম্পানি রয়েছে বাঙুর অ্যাভিনিউয়ে। এমনও সূত্রের দাবি, একই ঠিকানায় একাধিক কোম্পানি রয়েছে।
কোন কোন সংস্থার মালিক প্রসন্ন?
১. দৃষ্টিকোণ ইনফাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড
২. দৃষ্টিকোণ ডেভেলপার্স লিমিটেড
৩. জ্যোতির্লিঙ্গ রিয়েল এস্টেট এলএলপি
৪. গোল্ডেনলুক হাউজিং এলএলপি
৫. সিলভার পিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড
৬.জ্ঞানমূর্তি প্রোমোটারস এলএলপি
প্রসন্নের ১০০টি সংস্থার একাধিক সংস্থাই রিয়েল এস্টেটের বলে সিবিআই সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় সমবায় মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দৃষ্টিকোণ ইনফাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড, জ্যোতির্লিঙ্গ রিয়েল এস্টেট, গোল্ডেন লুক হাউজিং এলএলপির ডিরেক্টর প্রসন্ন রায়। যার ঠিকানা ১৮০/১ বাঙুর অ্যাভিনিউ। কিন্তু গিয়ে জানা গেল এই ঠিকানা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। নথি বলছে, ২০১৬ সালে রাজারহাটে ২০০ কাঠার বেশি জমি কেনেন প্রসন্ন রায়। তাঁকে জমি বিক্রি করেন মহেন্দ্র আগরওয়াল। ১৫ কোটি টাকার ডিল হয় তাঁদের মধ্যে। এরপরই সংস্থা হস্তান্তর হয়। মহেন্দ্র আগরওয়ালের বক্তব্য, “এটা কোম্পানি ট্রান্সফার হয়েছিল। ওনাকে বারবার বলা হয়েছিল সংস্থার ঠিকানা বদল করতে। উনি ডিরেক্টরের নাম বদলেছেন, শেয়ার হোল্ডার বদলেছেন, কিন্তু ঠিকানা কিছুতেই বদলাচ্ছিলেন না। সে কারণেই এই ঠিকানা দেখাচ্ছে।”
রিয়েল এস্টেটের পাশাপাশি প্রসন্নর টাইলস-এর ব্যবসাও তদন্তকারীদের স্ক্যানারে। রাজারহাটের এক সংস্থায় গিয়ে দেখা যায়, একটি প্লাজার চারতলা ও পাঁচতলায় একাধিক অফিস রয়েছে প্রসন্নর। চারতলার ৪১৪ বি ও ৪১৫ নম্বর ঘরে এসডিডি হোটেল অ্যান্ড রিসর্টের অফিস রয়েছে। ৫১০ নম্বর ঘরে সালাসর টাইলসের অফিস। আজ ঝাঁপ বন্ধ। রবিবার বলেই বন্ধ বলছেন কেউ কেউ।
