কলকাতা: ৪১ দিন পর জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddiqui)। শনিবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে হুগলির ফুরফুরায় নিজের বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি। রাস্তার দু’পাশে তখন উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। যেদিন কংগ্রেস-সিপিএম-আইএসএফ জোটে একমাত্র বিধায়ক হিসাবে নওশাদ জেতেন, সেদিনও বোধহয় এত ভিড়-উচ্ছ্বাস নজরে আসেনি। ফুরফুরায় যাওয়ার পথে এদিন টিভি নাইন বাংলাকে নওশাদ বলেন, “আমাদের অনৈতিকভাবে দীর্ঘদিন জেলে ভরে রাখা হল। আমরা ব্যাঙ্কশাল কোর্টে বারবার জানিয়েছি। কিছু হয়নি। এরপর হাইকোর্টে যাই। সেখানে কিন্তু রাজ্যকে যা প্রশ্ন করা হয়েছিল, জবাব দিতে পারেনি। ডেটের পর ডেট নিয়েছে। কিন্তু ৩০৭ ধারা বা অন্যান্য যে ধারা দিয়েছে, একটাও কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি।” একইসঙ্গে নওশাদ জানান, তিনি রাজনীতি আসার আগে কখনও ভাবেননি, এইভাবে তাঁকে জেলে আটকে রাখা হবে। নওশাদ বলেন, “বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসানো হতে পারে, জেল জরিমানা করতে পারে জানতাম। কিন্তু এভাবে ৪০-৪১ দিন জেলে এই কারণে আটকে রাখবে আমি কল্পনা করিনি।” তবে এই ঘটনায় শিক্ষা হয়ে গেল বলেও মন্তব্য নওশাদের।
নওশাদ বলেন, “৪১ দিনে আমি এমন কিছু জ্ঞান সঞ্চয় করলাম, যা আগে কখনওই হয়নি। জেল, পুলিশ, লালবাজারের একাধিক দফতর থেকে শুরু করে বারুইপুর জেল, প্রেসিডেন্সি জেল, বারুইপুর কোর্ট, ব্যাঙ্কশাল কোর্ট, হাইকোর্টে ঘুরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিধানসভার মধ্যে তা আমি মানুষের স্বার্থে তুলে ধরার চেষ্টা করব। বিধানসভার বাইরেও আওয়াজ তুলব।”
সাগরদিঘিতে কংগ্রেস প্রার্থীর জয় নিয়ে নওশাদ বলেন, “মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ঐক্যবদ্ধ জয় হিসাবেই দেখছি। বাংলার মানুষ কী সংখ্যালঘু, কী সংখ্যাগুরু, সকলেই বুঝতে পারছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যে আমাদের যে সমস্যা, সরকার তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলার মানুষ বুঝতে পারছে। তাই জবাব দিচ্ছে।”
একইসঙ্গে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক নিয়েও এদিন সুর চড়ান নওশাদ। বলেন, “সংখ্যালঘু ভোট কারও বাবার সম্পত্তি না। কেউ যদি মনে করে সংখ্যালঘু ভোট তাদের নিজস্ব সম্পত্তি মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। সংখ্যালঘুদের বোকা বানিয়ে রাখা হচ্ছে, তা তারা বুঝতে পারছে। বরং সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরুদের মাঝে ভেদাভেদ তৈরি করে দিয়েছে এই সরকার। তারাই এর উত্তর দেবে। শাসক যাদের ভোটব্যাঙ্ক ভাবছে, তারা আর ভোটব্যাঙ্ক নেই।”