AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Knowledge Story: চিনকে জব্দ করতে গিয়ে আলুপোস্ত আবিষ্কার করে ফেলল বাঙালি!

Knowledge Story: শোনা যায় একটা সময় বাদশাহী রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধি করতে চিন থেকে ভারতে আমদানি হত পোস্ত। তাই একটু খেয়াল করলেই দেখবেন চাঁপ হোক বা রেজালা, কিংবা অন্য আরও অনেক মোগল খানাতেই ব্যবহার হয় পোস্ত।

Knowledge Story: চিনকে জব্দ করতে গিয়ে আলুপোস্ত আবিষ্কার করে ফেলল বাঙালি!
| Updated on: Apr 04, 2025 | 4:42 PM
Share

বাঙাল হোন বা ঘটি, যে গুটি কয়েক খাবার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুলোচুলি হয় না তার মধ্যে একটি হল আলুপোস্ত। কড়াইয়ের ডাল, আলুপোস্ত আর সঙ্গে ঝুড়ি আলুভাজা। এই পদ পাতে পড়লে হার মানে মাছ-মাংস, চিংড়ি-ইলিশও। আলুপোস্ত সকলের। কিন্তু যে আলুপোস্ত নিয়ে এত মাতামাতি বাঙালির মধ্যে, সেই আলুপোস্ত আবিষ্কার কে করেন জানেন? কী ভাবে বাঙালির পাতে এসে পড়ল আলু আর পোস্তর এই অভিনব মিশ্রণ? আসল কাহিনি জানলে চোখে জল চলে আসবে আপনার।

শোনা যায় একটা সময় বাদশাহী রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধি করতে চিন থেকে ভারতে আমদানি হত পোস্ত। তাই একটু খেয়াল করলেই দেখবেন চাঁপ হোক বা রেজালা, কিংবা অন্য আরও অনেক মোগল খানাতেই ব্যবহার হয় পোস্ত।

সে বহু বছর আগের কথা। কিন্তু বাধ সাধলো অন্য জায়গায়। ১৭২৯ সালে কুইং সাম্রাজ্যের সম্রাট ইয়ং জেন দেখলেন পোস্ত রপ্তানি হলেও নেশায় ডুবে যাচ্ছে দেশ। হু হু করে বাড়ছে আফিমের নেশা করার প্রবণতা। ব্যবসার থেকে দেশ বড়। তাই তিনি নির্দেশ দিলেন আর চিনে করা যাবে না কোনও আফিম বা পোস্ত গাছের চাষ। ব্যান করে দেওয়া হয় ফলন।

এই নিষিদ্ধ পরোয়ানাকে ব্যবসার সুবর্ণ সুযোগ হিসাবে দেখল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জয় লাভের পরেই, চিনে চোরা পথে আফিম রপ্তানির জন্য বাংলায় আফিমের চাষ শুরু করতে চাইল কোম্পানি। আসলে যা কিছু নিষিদ্ধ নেশাদ্রব্য, তা চোরাপথে চালান করে ব্যবসা করতে পারলে যে কত টাকা লাভ করা যায়, নতুন করে বলে দিতে হয় না।

এদিকে নীল চাষের মতোই জমির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক আফিম। একবার কোনও জমিতে আফিম গাছের চাষ করলে ওই জমিতে আলু ছাড়া আর কিছুই চাষ করা যায় না। ফলে চাষীরা এই চাষ করতে খুব একটা আগ্রহী ছিল না। তবে গরীবের কথা কে কবে আর ভেবেছে? জোর করে বাংলার চাষীদের বাধ্য করা হল আফিমের চাষ করতে। ‘না’ বললেই চলল অকথ্য অত্যাচার।

শুরু হল ব্যপক হারে পোস্ত গাছের চাষ। পোস্তর ফুল দিয়ে তৈরি হল আফিম। সেই আফিম চিন সহ দেশ বিদেশের নানা জায়গায় রপ্তানিও হল। কিন্তু বীজ কী হবে?

লোকমুখে প্রচলিত, বাঙালির কোনও এক রমণী, খিদের জ্বালায় হাতের সামনে আর কিছু না পেয়ে পোস্তর বীজ বেটে, সর্ষের তেল দিয়ে আলু সেদ্ধর সঙ্গে মেখে পান্তা ভাত দিয়ে খাওয়ান তাঁর পরিবারকে। যা খেয়ে মুগ্ধ হয়ে যান সকলে। ক্রমে এই খাবার ছড়িয়ে পড়ে বাকি কৃষক পরিবারের মধ্যেও। বাঙালি সেই রমণী কে ছিলেন? কেউ বলতে পারেন না! তবে তাঁর আবিষ্কার অমর হয়ে রয়ে গিয়েছে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে।