Holi 2022: শান্তিনিকেতন নয়, দোলে এবার ঘুরে আসুন বাংলার ‘প্রাচীনতম’ পাহাড়ে

Bankura: সুবজে ঘেরা ঘন জঙ্গল, লাল মাটির পথ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্থাপত্য এবং পোড়ামাটির গল্প নিয়ে আপনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি বাঁকুড়া।

Holi 2022: শান্তিনিকেতন নয়, দোলে এবার ঘুরে আসুন বাংলার 'প্রাচীনতম' পাহাড়ে
শুশুনিয়া পাহাড়, বাঁকুড়া
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 15, 2022 | 6:10 PM

দেশের যে কোনও জায়গায় ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হল মার্চ মাস। এই সময় আবহাওয়া খুব মনোরম থাকে। তারওপর সামনেই রয়েছে দোল (Holi 2022) উত্‍সব। এ বছর ১৮ মার্চ , শুক্রবার সারা দেশ জুড়ে পালিত হবে। তারপরই রয়েছে শনিবার ও রবিবার। এমন সুযোগ হাতছাড়া না করাই ভাল। সাধারণত দোল বললেই বাঙালির মাথায় ঘুরপাক খায় শান্তিনিকেতনের কথা। আর আমরা যাঁরা এই কংক্রিটের শহরে থাকি, সবসময় এমন জায়গা খুঁজি যা আমাদের কোলাহল থেকে দূরে নিয়ে যাবে। প্রকৃতির একটু কাছাকাছি যাওয়ার জন্য দু’দিনের সফরে অনেকেই শান্তিনিকেতনকে বেছে নেন। কিন্তু শান্তিনিকেতন ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে এমনও অনেক জায়গা আছে, যেখানে আপনি খুঁজে পেতে পারেন গ্রাম বাংলার (West Bengal Tourism) সৌন্দর্য। তারই খোঁজ নিয়ে আজকে আমরা হাজির হয়েছি।

সুবজে ঘেরা ঘন জঙ্গল, লাল মাটির পথ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্থাপত্য এবং পোড়ামাটির গল্প নিয়ে আপনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি বাঁকুড়া (Bankura)। পশ্চিমবঙ্গের এমন একটি জায়গা যা টেরাকোটার ভাষা বলে। যেখানে রয়েছে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রাচীনতম’ পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। দোলের ইউকেন্ডে অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন বাঁকুড়া। কোথায় যাবেন, খরচ কত রইল যাবতীয় তথ্য…

বাঁকুড়া গেলে কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া চলে না বিষ্ণুপুর। বাঁকুড়া জেলার এই শহরটি তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্থাপত্য এবং পোড়ামাটির গল্প নিয়ে তৈরি আপনার স্বাগত জানানোর জন্য। মল্ল রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিল বিষ্ণুপুর। এখানেই রয়েছে পোড়ামাটির ও পাথরের শিল্প। এখানে পর্যটকেরা ভিড় করে টেরাকোটার কাজ দেখার জন্য। বাঁকুড়ার এই শহরে রয়েছে বেশ কয়েকটি মন্দির, যা নির্মাণ করেছিলেন রাজা জগৎ মল্ল এবং তাঁর বংশধরেরা। ইতিহাস আর স্থাপত্যে সমৃদ্ধ বিষ্ণুপুর আরেকটি বিষয়ের জন্য জনপ্রিয়। তা হল বালুচরী শাড়ি।

দোলের সময়, তাই বসন্তের রঙও দেখা যাবে বাঁকুড়ায়। বিষ্ণুপুর থেকে ঘণ্টা দেড়েকের পথ শুশুনিয়া। পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রাচীনতম’ পাহাড় শুশুনিয়ার কোলে আপনি খুঁজে পেতে পারেন বাংলার নৈসর্গিক দৃশ্য। নীচ দিয়ে অবিরাম বয়ে চলেছে গন্ধেশ্বরী। আর চারিদিকে রয়েছে শাল, পলাশ, অর্জুন, মহুয়া। কান পাতলে শোনা যায় পাখিদের কলরব। আর পাহাড়ের জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রহস্যময় জীবাশ্ম। শুশুনিয়ার গায়ে খোদিত শিলালিপি, আজও ‘শুশুনিয়া লিপি’-এর ইতিহাস বহন করে চলেছে। পাহাড়ের কোলে হারিয়ে যেতে চান কিংবা বাংলার ইতিহাসের সাক্ষী হতে চান, একবেলা কাটিয়ে যেতে পারেন এখানে।

ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ রয়েছে এই জেলাতেই। কংসাবতী ও কুমারী নদী মিলনস্থল। ‘মুকুট’-এর মত রহস্যময় টিলা দ্বারা বেষ্টিত। চারিদিক সবুজে মোড়া আর রয়েছে রাঙামাটির রাস্তা। এটাই হল মুকুটমণিপুর। শুশুনিয়া থেকে ঘণ্টা দেড়েকের পথ। আপনি চাইলে বিষ্ণুপুর হয়েও ঘুরে যেতে পারেন মুকুটমণিপুর।

সূর্যাস্তের ঐশ্বরিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন কংসাবতীর বাঁধে। আর তার পাশে দিয়ে সোজা চলে যাওয়া যায় পরেশনাথ পাহাড়ে। কথিত রয়েছে যে হাজার হাজার বছর আগে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় যখন জৈন ধর্মের প্রভাব পড়ে, তখন এই পরেশনাথ পাহাড়ই হয়ে ওঠে জৈন তীর্থক্ষেত্র। পাহাড়ের গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাথরের জৈন তীর্থঙ্করদের একাধিক মূর্তিগুলো এখনও সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে।

এছাড়াও এখানে রয়েছে বিহারিনাথ পাহাড়। রয়েছে বিহারিনাথ মন্দিরও। নিরিবিলিতে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর জন্য অনায়াসে উইকেন্ড ট্যুরে ঘুরে যেতে পারেন বাঁকুড়া।

কীভাবে যাবেন-

হাওড়া স্টেশন থেকে চক্রধরপুর এক্সপ্রেসে সোজা পৌঁছে যান বাঁকুড়া। এরপর ভাড়া করে নিন একটি গাড়ি। তারপর মনের মত করে ঘুরে দেখুন বাংলার সৌন্দর্য। যদি সড়কপথে বাঁকুড়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তাহলে কলকাতা থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পৌঁছে যেতে পারেন বাঁকুড়া।

আরও পড়ুন: সপ্তাহান্তে দোলের ছুটি কাটাতে কোথায় যাবেন? রইল পশ্চিমবঙ্গের কিছু পর্যটন কেন্দ্রের খোঁজ