Dharchula: ভারত-নেপাল সীমান্তে অবস্থিত এই ছোট্ট জনপদ মানস সরোবরের প্রবেশদ্বার! জানুন এই কুমায়নি গ্রামের ইতিহাস
মানস সরোবর এবং ছোট কৈলাস যাত্রা শুরু হয় এই গ্রাম থেকেই। পাশেই রয়েছে নেপাল। চারিদিক হিমাবত দ্বারা বেষ্টিত। আর পাশ দিয়ে অবিরাম বয়ে চলেছে কালী নদী। তারই মাঝে নিশ্চুপে ঘুমোচ্ছে একটা ছোট্ট উপত্যকা, যার নাম ধরচুলা।
উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) কুমায়ন অঞ্চলের (Kumaon Region) আনাচে-কানাচে এমন অনেক হিল স্টেশন (Hill Station) বা গ্রাম রয়েছে, যার কথা খুব কম পর্যটকই জানেন। এমনই একটি গ্রাম হল ধরচুলা (Dharchula)। উত্তরাখণ্ডের ভারত-নেপাল (Nepal) সীমান্তে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম। কিন্তু এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং গুরুত্বের কারণে পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে ধরচুলায়।
পিথোরাগড় জেলায় অবস্থিত ধরচুলা। মানস সরোবর এবং ছোট কৈলাস যাত্রা শুরু হয় এই গ্রাম থেকেই। পাশেই রয়েছে নেপাল। চারিদিক হিমাবত দ্বারা বেষ্টিত। আর পাশ দিয়ে অবিরাম বয়ে চলেছে কালী নদী। তারই মাঝে নিশ্চুপে ঘুমোচ্ছে একটা ছোট্ট উপত্যকা, যার নাম ধরচুলা।
ধরচুলার ইতিহাসও এই জায়গার মতই বেশ রোমাঞ্চকর। কাতিউরী রাজবংশের সঙ্গে জড়িত ধরচুলার ইতিহাস। যতদূর জানা যায়, প্রাচীনকালে হিমালয়ে বাণিজ্যের জন্য ধরচুলাকে মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এখান থেকে চীন, তিব্বত প্রভৃতি দেশে বাণিজ্য করা হত। বাণিজ্যের পথ হিসাবে জনপ্রিয় ছিল ধরচুলা। তারপর কালী নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে যায়। ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের প্রভাব পড়ে এই গ্রামে। বন্ধ হয়ে যায় বাণিজ্য। এখানকার মানুষের জীবিকাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু, আজও এই গ্রামটি উত্তরাখণ্ডের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে।
ধরচুলা মূলত মানস সরোবর এবং ছোট কৈলাস যাত্রার জন্য জনপ্রিয়। এখানকার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল ওম পর্বত। ৬১৯১ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ওম পর্বত কৈলাস, মানস সরোবর যাত্রার জন্যও পরিচিত। যাঁরা তীর্থ করতে মানস সরোবর যান, তাঁরা এক রাত হলেও কাটিয়ে যান কালী নদীর তীরে অবস্থিত এই স্থানটিতে। আপনি ট্রেক করতে ভালবাসেন এবং প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চান, তাহলে কোনও ভাবেই মিস করবেন না ওম পর্বত।
আপনি যদি পশু প্রেমী হন, তাহলেও আপনাকে কোনও ভাবেই নিরাশ করবে না ধরচুলা। পিথোরাগড় সদর শহর থেকে ৫৪ কিলোমিটার দূরত্বে ধরচুলার কাছেই অবস্থিত অ্যাসকট অভয়ারণ্য। পক্ষীপ্রেমীদের কাছে স্বর্গোদ্যান এই অ্যাসকট অভয়ারণ্য। সারা ভারতে কস্তুরী হরিণের দেখা পাওয়া যায় একমাত্র এই অভয়ারণ্যে। এছাড়াও গভীর জঙ্গলে ঢুকলে দেখা মেলে কালো ভাল্লুক, হিমালয় সিংহ, স্নো লেপার্ডের। এখানে রয়েছে জঙ্গল সাফারির ব্যবস্থা।
ওম পর্বত এবং অ্যাসকট অভয়ারণ্য ছাড়াও এমন অনেক জায়গা রয়েছে ধরচুলায় যা আপনার মন কাড়তে বাধ্য। জৌলজিবি, কালী নদী, চিরকিলা বাঁধ এই অঞ্চলের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। আর আপনি যদি ভোজনরসিক হন, তাহলে তিব্বতে খাবারগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন এখানে। যেহেতু নেপালের একদম পাশেই অবস্থিত ধরচুলা তাই তিব্বতী সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায় এখানে। তাই এখানের নৈসর্গিক পরিবেশে দু’দিন কাটিয়ে যান।
আরও পড়ুন: এক সময় ধনকর ছিল স্পিতি ভ্যালির ‘রাজধানী’! এখন কেমন আছে সেই গ্রাম?