Spiti Valley: এক সময় ধনকর ছিল স্পিতি ভ্যালির ‘রাজধানী’! এখন কেমন আছে সেই গ্রাম?
গ্রাম হিসাবে খুবই ছোট ধনকর। গ্রাম জুড়ে মাত্র ৭০টি বাড়ি রয়েছে। ১২,৭৭৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ধনকর, এক সময় ছিল স্পিতি উপত্যকার রাজধানী। সময় ও প্রগতির সঙ্গে আজ সেই জায়গা দখল করেছে কাজা।
ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় লাহুল ও স্পিতি (Lahaul & Spiti)। হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র এই স্পিতি। চেনাব নদীর তীরে অবস্থিত এই স্পিতি উপত্যকার (Spiti Valley) পর্যটন কেন্দ্র (Tourism) হিসাবে জনপ্রিয় কাজা (Kaza)। বর্তমানে কাজা হল হেডকোয়াটর এবং এই স্পিতি উপত্যকার সবচেয়ে বড় শহর। কিন্তু জানেন কি এক সময় এই স্পিতির রাজধানী ছিল ধনকর (Dhankar Village) নামক একটি গ্রাম?
স্পিতি উপত্যকায় অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম ধনকর। কাজা থেকে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ধনকর। গ্রাম হিসাবে খুবই ছোট ধনকর। গ্রাম জুড়ে মাত্র ৭০টি বাড়ি রয়েছে। সুতরাং মানুষের বাস যে কম, বোঝাই যাচ্ছে। ১২,৭৭৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ধনকর, এক সময় ছিল স্পিতি উপত্যকার রাজধানী। সময় ও প্রগতির সঙ্গে আজ সেই জায়গা দখল করেছে কাজা।
এক সময় এই স্পিতি উপত্যকায় রাজত্ব করত নোনো রাজা। তাঁর রাজত্বকালে সদর ‘শহর’ ছিল এই ধনকর গ্রাম। তারপর স্পিতি নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। উন্নত হয়েছে হিমাচলের পর্যটন ব্যবস্থা। কাজা পরিণত হয়েছে স্পিতির সদর শহরে। যদিও কাজায় মনেস্ট্রি এবং তুষার মরুভূমি ছাড়া সেই অর্থে দর্শনীয় স্থান বলতে কিছু নেই। তবে সেই দিক থেকে পিছিয়ে নেই ধনকরও।
হিমালয়ের একটি শৈলশিরার ওপর গ্রামটি। অনেকে মনে করেন, আগেকার দিনে এমন জায়গায় রাজধানী তৈরি করার অর্থ ছিল, যাতে সহজে শত্রুরা আক্রমণ করতে না পারে। ‘ধন’ কথাটির অর্থ হল গিরিখাত এবং ‘কর’ কথাটির অর্থ হল দুর্গ। যেহেতু এটি পাহাড়ের খাদের ধারে তৈরি একটি ছোট্ট ‘গ্রাম’, যা সেই সময় ছিল রাজাদের দুর্গ, তাই জায়গার নাম ‘ধনকর’।
ধনকর গ্রাম পর্যটকদের কাছে খুব একটা জনপ্রিয় নয়। তবুও এই স্থানের একটি ধর্মীয় গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। প্রতি বছর এখানে পর্যটকরা ভিড় করেন স্পিতি নদীর তীরে কিছুটা সময় নির্জনতায় কাটাতে। এখান থেকে অন্বেষণ করা যায় তুষার মরুভূমির দৃশ্য। আর দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে তুষারাবৃত হিমালয়। আর রয়েছে ধনকর মনেস্ট্রি।
ধনকর মনেস্ট্রির তাৎপর্যও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দুটি মনেস্ট্রি রয়েছে। একটি নতুন, অন্যটি পুরনো। পুরনো মনেস্ট্রিটি গিরিখাতের ওপর স্পিতি ও পিন নদীর সঙ্গমের পাশে অবস্থিত। এই মনেস্ট্রিটি একটি দুর্গ মঠ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল সেই সময়। এর কারুকার্য সত্যি চোখ জুড়ানো। ভাস্কর্য ও ঐতিহ্যকে সমানতালে বেঁধে পাহাড়ের ওপর আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে এই গোম্পা। যতই হোক ১,২০০ বছরের ইতিহাস জুড়ে রয়েছে এই মনেস্ট্রির সঙ্গে। তবে এখন আর কেউ বাস করে না এই মনেস্ট্রিতে। এটি এখন পরিণত হয়েছে জাদুঘরে। লামারা সবাই থাকেন নতুন মনেস্ট্রিতে। সেখানেই ধ্যান, আরাধনা হয়।
এছাড়াও এখানে রয়েছে ধনকর প্যালেস। পাহাড়ের ওপরে ইতিহাসকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক ধ্বংসস্তূপ। নীচে গোম্পা। যুদ্ধের সময় পুরো উপত্যকার মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল এই প্যালেস। আজ শুধুই ইটের ধ্বংসস্তূপ। তবে আজও আপনি এই প্যালেস থেকে স্পিতি উপত্যকার একটি প্যানোরমিক ভিউ দেখতে পাবেন।
এই গ্রাম থেকে দু কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে ধনকর লেক। এটি বরং পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। বিশেষত প্রতি বছর এখানে পর্যটকরা আসেন ট্রেকিং করতে। আসলে কাজা থেকে এই হ্রদে যাওয়া সহজ। তবে আপনি যদি কাজা যাওয়ার প্ল্যান করেন, কিছুটা সময় কাটিয়ে যেতে পারেন ধনকরে।
আরও পড়ুন: ৬০০ বছর ধরে হিমাচলিরা নেতিবাচক শক্তিকে দূর করে ‘শয়তানের’ মাস্ক পরে