Howrah Bridge: আশিতে তিলোত্তমার ‘গ্র্যান্ড ওল্ড লেডি’! পন্টুন ব্রিজ থেকে রবীন্দ্র সেতুর জার্নিটা কেমন ছিল?

Kolkata: পুরনো হাওড়া ব্রিজের নকশা তৈরি করেছিলেন স্যার ব্র্যাডফোর্ড লেসলি। ইংরেজ রেল কোম্পানির খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ার। নৈহাটির জুবিলি ব্রিজও তাঁর নকসা ছিল।

Howrah Bridge: আশিতে তিলোত্তমার 'গ্র্যান্ড ওল্ড লেডি'! পন্টুন ব্রিজ থেকে রবীন্দ্র সেতুর জার্নিটা কেমন ছিল?
পুরনো ফাইল থেকে হাওড়া ব্রিজের ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 05, 2023 | 9:20 AM

১৯৪৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। কলকাতা থেকে হাওড়া যাওয়ার জন্য প্রথম হাওড়া ব্রিজের ওপর দিয়ে যাত্রা শুরু করে একটি ট্রাম। সেই শুরু। বছরের পর বছর, সব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে এখনও সসম্মানের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছে হাওড়া ব্রিজ। কলকাতা ও হাওড়া জেলার মধ্যে চলাচলের জন্য হাওড়া ব্রিজ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমীক্ষা বলছে, প্রতিদিন ব্রিজটির উপর দিয়ে প্রায় ১,৫০,০০০ জন পথযাত্রী ও একলক্ষেরও বেশি যান চলাচল করে। তবে এই তিলোত্তমা শহরের অন্যতম সৌন্দর্যের পিছনে রয়েছে দুর্দান্ত ইতিহাস। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম সেতুর আকর্ষণ এখনও ভিনদেশিদের মন জয় করে চলেছে আজও। সকলেরই বয়স বাড়ে। দেখতে দেখতে হাওড়া ব্রিজও ৮০ বছরে পা দিয়েছে।

হুগলী নদীর উপর আগে একটি ভাসমান সেতু ছিল। যার নাম পন্টুন ব্রিজ। সেই ব্রিজও কলকাতা ও হাওড়া জেলাকে সংযুক্ত করত। ১৮৭৪ সালে ১৭ অক্টোবরে পন্টুন ব্রিজের খওলার পদ্ধতি ছিল দেখা মতো। ভাসমান সেতুটির মাঝখান থেকে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার মাধ্যমে খোলা হত। সেই খোলা জায়গার মধ্য দিয়ে জলযান যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হত। ১৮৭৪ সালে প্রথম হাওড়া সেতু নির্মিত হয়। পরবর্তী কালে ১৯৮৫ সালে পুরনো সেতুর বজলে বর্তমান হুগলী সেতুর উদ্বোধন হয়। সেতু তৈরির পর থেকে বহুবার নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। এই ভাসমান সেতুর পরিবর্তে নতুন সেতু তৈরি করার অনুমোদন করা হয় ১৯৮৩ সালে। প্রকৃতপক্ষে সেতুটির নামকরণ করা হয় নিউ হাওড়া ব্রিজ হিসাবে। ১৯৬৫ সালে নয়া ব্রিজের নাম ভারত রাখা হয়। তারপর এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম রাখা হয়। পরে সেই নামই স্থির করা হয়, রবীন্দ্র সেতু।

ব্রিটিশ শাসনকালে ১৮৫৫ থেকে ৫৬ সালে প্রথম সেতু তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। কমিটিও তৈরি হয়েছিল। এদিকে গঙ্গানদীর দুপাড়েই জাঁকিয়ে বসেছে ইংরেজদের ব্যবসা। নয়া নয়া চটকল, কারখানা ইতোমধ্যেই তৈরি করা হয়েছিল। সবই রয়েছে, কিন্তু হাওড়া ও কলকাতার মধ্যে সেতু ছিল না। পরিকল্পনা থাকলেও আরও বছর চারেক পরও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ১৮৬২ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির চিফ ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্নবুলকে গঙ্গা নদীর উপর একটি মজবুত ব্রিজ নির্মাণের কথা বলা হয়। তারপরই শুরু হয়ে ব্রিজ তৈরির নকসা। আট বছর পর সেতু ছাড়া যখন সম্ভব নয়, তখন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর সিদ্ধান্ত নেন যে সেতু নির্মাণের যাবতীয় দায়িত্ব সরাসরি সরকারের উপর বর্তাবে না। ট্রাস্ট গঠন করার পরই প্রথম ভাসমান সেতু নির্মাণের ভার দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, পুরনো হাওড়া ব্রিজের নকশা তৈরি করেছিলেন স্যার ব্র্যাডফোর্ড লেসলি। ইংরেজ রেল কোম্পানির খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ার। নৈহাটির জুবিলি ব্রিজও তাঁর নকসা ছিল। পন্টুন ব্রিজ তৈরি করার জন্য ২২ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়েছিল ট্রাস্টকে। তবে এই ভাসমান সেতুর সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জাহাজ, স্টিমার যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। স্টিমার গেলেই সেতু বন্ধ করা হত। শুধু তাই নয়, দিনের বেলাতেই শুধু সেতু খোলা হত। সেতু দিয়ে যানচলাচলে মাঝেমাঝেই ব্যহত হওয়ায় যানজট যেমন বেড়ে গিয়েছিল, তেমনি নদীপথে জাহাজ ও স্টিমারের যাতায়াতেরও অসুবিধা হচ্ছিল। প্রতিদিনের যানজট বেড়ে যাওয়ায় বিকল্প সেতু নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়।

১৯২৬ সালে পাস হয় ‘দ্য নিউ হাওড়া ব্রিজ অ্যাক্ট’। সম্ভবত দেশের প্রথম সেতু হাওড়া ব্রিজ, যার নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি আইনসিদ্ধ।