Arielle Egozi: Linkedin-প্রোফাইলে নিজেকে যৌনকর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেন এই মহিলা, কটাক্ষ নয়, সাধুবাদ নেটিজে়নদের
Prostitution As Profession: চাইলেই আমি এই পেশা থেকে দূরে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু পরে মনে হল না, এই পেশায় আমি নিজেই আমার মালকিন। নিজের মানসিক শ্রম, নিজের ক্ষমতার বিচারে আমি টাকা নিতে পারি...

বাড়ির কাজের জন্য যে সব গৃহ সহায়িকারা থাকেন সেটা যে তাঁদের পেশা তা অধিকাংশ মানুষেরই মনে থাকে না। বাড়ির কাজ করা মানেই এক অর্থে সকলে ‘চাকর’ ধরে নেন। কোথাও গিয়ে আমরা সকলেই কারও ‘দাসত্ব’ করি- একথা মনে রাখতে চান না কেউই। ঠিক তেমনই যৌনকর্মী মানেই তিনি সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির বাসিন্দা। মানুষ হিসেবে তাঁর কোনও অস্তিত্বই থাকতে পারে না। পেটের টানে এবং বেঁচে থাকার তাগিদে যে এমন পেশা বেছে নিতে হয়েছে- এই সত্যিটা জোর করেও কেউ বিশ্বাস করতে চান না। সমাজে তাঁদের একঘরে করে রাখা হয়। প্রতি শহর, প্রতি গ্রামেই এরকম আলাদা ‘পতিতাপল্লী’ রয়েছে। অজস্র যৌনকর্মী সেখানে বাস করেন। এই পেশার আয়-উপার্জন থেকেই তাঁদের সংসার চলে। সন্তানকে মানুষ করেন। তবে জনসমক্ষে নিজেদের পেশা নিয়ে কথা বলতে সংকোচ হয় তাদের। সেই পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে আমাদের সমাজই।
চাকরির খোঁজ কিংবা নিজের পেশার দুনিয়ায় আপডেটেড থাকতে আজকাল অধিকাংশ মানুষেরই Linkedin-এ প্রোফাইল থাকে। সেখানে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা সবই লেখা থাকে কাজের প্রয়োজনেই। সম্প্রতি Linkedin-এ একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। যেখানে এক মহিলা যাবতীয় ট্যাবু ভেঙে নিজেকে যৌনকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবেও লিখেছেন এই পেশায় তিনি কতদিন রয়েছেন।
এরিয়েল ইগোজি- একটি দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে তাঁর কাজের বর্ণনা করেছেন। নিজের কথা লিখেছেন। নেটিজেনরা কিন্তু প্রশংসা করেছেন এরিয়েলের এই সাহসিকতার। কেউ একটি কোনও কুমন্তব্য করেননি। নিজের কাজকে চাকরি হিসেবেই সবার সামনে তুলে ধরায়। কেন তিনি নিজেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত করেছেন তার কথাও বলেছেন।

তিনি লেখেন- ‘দু-সপ্তাহ আগেই আমি আমার চাকরিটি ছেড়ে দিই। এর পাশাপাশি আমি যৌনকর্মী ( Sex Worker) হিসেবেও কাজ করতাম। কোথাও গিয়ে আমার মনে হচ্ছিল পেশাগত কারণে আমার শখের উপর প্রভাব পড়ছে। এদিকে নিজের কাজ নিয়ে মন থেকেও আমি সন্তুষ্ট নই। মনকে আমি অনেকবার প্রশ্ন করি যে, নিজের ‘ইমেজ’ বিক্রি করতে চাই কিনা। চাইলেই আমি এই পেশা (Sex Work) থেকে দূরে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু পরে মনে হল- না, এই পেশায় আমি নিজেই আমার মালকিন। নিজের মানসিক শ্রম, নিজের ক্ষমতার বিচারে আমি টাকা নিতে পারি। বিনামূল্যে বা বিনাশ্রমে কোনও কাজ হয় না। তাই আমার মানসিক শ্রমের কদর যাঁরা করেন তাঁদের আমি প্রত্যাখ্যান করি না। নিজের সীমা নিজেই নির্ধারণ করি। অহেতুক কোনও কিছুতে সময় নষ্ট করি না’।
ইগোজির শেয়ার করা এই পোস্টের প্রশংসা করেছেন অধিকাংশ জনই। সেখানে একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘আমরা গর্ভপাতের আইন প্রসঙ্গে নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলি। কিন্তু একজন মহিলা যখন তাঁর শরীর ব্যবহার করে আয় করেন তখন তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য হয় না’। অন্য একজন লিখেছেন, ‘যৌনকর্মীরা যে দুর্দান্ত কাজটি করেন তার জন্য তাঁদের সমপরিমাণ পারিশ্রমিক আমরা দিই না। যৌনতা উপভোগ করার সময় সকলেই সময় চান কিন্ত সেই পরিমাণ মূল্য দিতে চান না। এই কাজেরও সমান পারিশ্রমিক এবং যথাযথ মূল্য দেওয়া প্রয়োজন’।
