Ganesh Chaturthi 2022: গৃহে প্রথমবার গণেশপুজো করবেন? পুজোর সময় কী করবেন, কী করবেন না, জানুন
Ganesh Puja at Home: বিশেষ করে যাঁরা বাড়িতেই গণেশপূজার আয়োজন করেছেন তাঁদের আরও সতর্ক হয়ে চলতে হবে। কিছু কর্তব্য রয়েছে যেগুলি অবশ্যই পালন করা দরকার।

গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2022) মানেই ধরাধামে গণপতির আবির্ভাব তিথি! এই পুণ্য তিথিতে প্রভু সঙ্গে করে নিয়ে আসেন আনন্দ ও স্বস্তি! গণেশ চতুর্থী অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উৎসব। এই পবিত্র তিথিতে প্রভু গজানন কৈলাস পর্বত থেকে মর্তে পা রাখেন। চলতি বছরে গণেশ চতুর্থী পালিত হবে ৩১ অগস্ট। এই উৎসব বিনায়ক চতুর্থী নামেও খ্যাত। আবির্ভাব দিবস থেকে বিসর্জনের দিন পর্যন্ত মোট ১১ দিন গণেশ ভক্তেরা পূজা, উপোস, প্রার্থনা, সঙ্গীত এবং নৃত্যের মধ্যে দিয়ে দিন নির্বাহ করেন। এই উৎসব অত্যন্ত পবিত্র। তাই এই উৎসবের সময়কালে প্রত্যেকেরই উচিত কিছু নিয়ম মেনে চলা। বিশেষ করে যাঁরা বাড়িতেই গণেশপূজার আয়োজন করেছেন তাঁদের আরও সতর্ক হয়ে চলতে হবে। কিছু কর্তব্য রয়েছে যেগুলি অবশ্যই পালন করা দরকার। আবার কিছু কাজ একেবারেই করা উচিত নয়। আসুন দেখা যাক সেগুলি কী কী—
• গৃহের প্রতিটি কোণ ধুয়ে সাফ করুন। স্নান করুন। একটি কলসি জলে পূর্ণ করুন ও তার উপরে রাখুন পানপাতা, একটি নারকেল।
• গণেশের মূর্তি রাখুন একটি কাঠের ছোট জলচৌকির উপর। প্রভুর বামহস্তে বাঁধুন পবিত্র সুতো। এরপর চন্দনের তিলক দিন প্রভু গণেশের কপালে। মালা পরান প্রভুকে। গজাননকে দূর্বা ঘাস ও লাল ফুল নিবেদন করতে ভুলবেন না।
• ঋকবেদ থেকে মন্ত্র পাঠ করে করতে হয় মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা। জ্বালাতে হয় ঘি-এর প্রদীপ। এই সময় প্রভুকে একটি মোদক নিবেদন করুন। শেষ পর্যায়ে করতে হয় আরতি।
• মন্দিরে পুজো দিতে হলে ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠুন। স্নান করুন। কাচা পোশাক পরুন। তারপরেই মন্দিরে যাবেন।
• ১১ দিন পরে অনন্ত চতুর্দশীর দিন প্রভু গণেশের মূর্তি বিসর্জন দিন একটি পুকুরে বা নদীতে। পূজার দিন থেকে বিসর্জন অবধি প্রত্যেক ভক্তের উচিত প্রার্থনা, সংকীর্তন, উপোসের মধ্যে দিয়ে দিন কাটানো।
• প্রভু গণেশ নতুন কিছু শুরু করার দেবতা। কোনও বিপদ ছাড়াই নতুন কাজে সফল হতে হলে প্রভু গণেশের কছে প্রার্থনা করতে হয়। এই কারণেই তাঁর অপর নাম বিঘ্নহর্তা। তাই তাঁর আরাধনা করার সময় বহু বিষয় খেয়াল রাখা দরকার।
কী করবেন?
• পঞ্জিকা থেকে বাড়িতে গণেশ মূর্তি প্রতিষ্ঠার শুভ মহূর্ত নির্বাচন করুন।
• ভক্তরা চাইলে দেড় দিন, তিনদিন, সাত দিন অথবা ১০ দিনও উৎসব করতে পারেন।
• গজানন আপনার গৃহের সবচাইতে সম্মানিত অতিথি। তাই তাঁকে রাজার মতোই খাতির করুন, তা সে জল দিয়ে হোক বা প্রসাদ দিয়ে। যে খাদ্যবস্তুই তৈরি করুন না কেন তাঁকে আগে নিবেদন করুন। তবে খাদ্যবস্তু অবশ্যই সাত্ত্বিক হতে হবে।
• গণেশ মূর্তি সবসময় যেন মৃত্তিকা নির্মিত হয়। মূর্তিতে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করতে হবে।
• বিসর্জনের জন্য আশপাশে কোনও নদী বা পুকুর না থাকলে বাড়িতেই একটি নতুন বালতি বা ড্রামে মূর্তি বিসর্জন দিন। তবে এই কাজে মন সায় না দিলে দূরবর্তী নদী বা পুকুরেই মূর্তি বিসর্জন দিতে পারেন।
কী করবেন না?
• বিসর্জনের আগে গজাননের পূজা, আরতি ও ভোগ নিবেদনের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করুন।
• শুধু মাত্র পাঁজি নির্ধারিত শুভ মহূর্তেই বিসর্জন কার্য করুন।
• গণেশমূর্তি প্রতিষ্ঠার সময় ও বিসর্জনের সময় গৃহে প্রবেশের প্রধান দরজা খুলে রাখবেন।
• উৎসবের সময়কালে কোনওভাবেই চুরি, লোক ঠকানো, উৎকোচ গ্রহণের মতো গর্হিত অপরাধ করবেন না।
• বাক্যালাপের সময় অশ্লীল শব্দের প্রয়োগ করা যাবে না। কোনও নেতিবাচক চিন্তাকে মনে ঠাঁই দেবেন না। গণেশমূর্তির সম্মুখে ঝগড়াঝাটিও করবেন না। সবসময় শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
• জুয়া খেলা যাবে না।
• উৎসবের দিনগুলিতে ব্রহ্মচর্য পালন করুন।
• বাড়িতে প্রভু গণেশকে একা রেখে সকলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবেন না। অন্তত একজন ভক্তকেও থাকতে হবে গৃহে।
• মাংস এবং মদ্যপান করা চলবে না।
• বাড়ির রান্নায় পিঁয়াজ এবং রসুন ব্যবহার করবেন না।
• মন্দিরে পূজা দেওয়ার সময় প্রভু গণেশকে মোদক, গুড় এবং নারকেল নিবেদন করুন।
• প্রভুর অঙ্গসজ্জায় মাত্রাতিরিক্ত অলঙ্কার ব্যবহার করবেন না। কারণ অলঙ্কার থেকে প্রভুর অঙ্গে আঘাত লাগতে পারে যা অশুভ।
