Goddess Durga: দেবী দুর্গা আসলে কে? কেন এই রূপেই পূজিতা তিনি?
Goddess Durga: তিনি দুর্গা দুর্গতিনাশিনী। অপার শক্তির আধার! জগৎজননী মাতৃ রূপেই ত্রিলোকে পূজিতা। কিন্তু কি ভাবে জন্ম মা দুর্গার? আসলে তিনি কে?
তিনি দুর্গা দুর্গতিনাশিনী। অপার শক্তির আধার! জগৎজননী মাতৃ রূপেই ত্রিলোকে পূজিতা। কিন্তু কি ভাবে জন্ম মা দুর্গার? আসলে তিনি কে?
পুরাণ মতে অসুরকুলপতি দানুর বংশধর ছিলেন অসুররাজ রম্ভাসুর। একবার এক মহিষের প্রেমে পড়ে যান রম্ভ। তিনি জানতে পারেন ওই মহিষী আসলে রাজকন্যা শ্যামলী। অভিশাপের কারণে তাঁর এই দশা। মহিষ রূপ ধরেই ওই মহিষীর সঙ্গে মিলিত হয় রম্ভাসুর। রম্ভাসুরের ঔরস থেকেই জন্ম হয় ত্রিলোক বিজয়ী মহিষাসুরের। এদিকে ততদিনে ইন্দ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে রম্ভাসুরের।
একটু বড় হতেই বাবার মৃত্যুর বদলা নিতে আর ত্রিলোকে রাজত্ব করার লোভে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার ধ্যানে মগ্ন হন মহিষাসুর। ব্রহ্মদেবের বরেই অজেয় হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর মৃত্যু হবে কেবল কোনও নারীর হাতেই, এই বর পেয়েই উচ্ছসিত হয়ে ওঠে দম্ভে পরিপূর্ণ মহিষাসুর। এরপরেই স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল জুড়ে নিজের অত্যাচারের শাসন কায়েম করেন মহিষাসুর।
এই খবরটিও পড়ুন
মহিষাসুরের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ত্রিদেবের শরণাপন্ন হন দেবতারা। এরপর সব দেব দেবী মিলে আবাহন করেন সেই মহাশক্তির। তাঁদের সম্মিলিত তেজ থেকে জন্ম হয় অপূর্ব সুন্দরী ও অপার শক্তিধারী দেবী দুর্গার। দেবতারা নিজেদের অস্ত্র তুলে দেন সেই দেবীর হাতে। গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে প্রদান করেন তাঁর বাহন সিংহ।
দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়ে রণ হুঙ্কার ছেড়ে এগিয়ে চলেন দেবী। একা হাতে নিধন করেন অসুর সেনার। শেষে যুদ্ধে নামেন অসুরপ্রাজ মহিষাসুর। হাতি, মহিষ নানা রূপে দেবীর সঙ্গে টানা নয় দিন ভয়ঙ্কর যুদ্ধ চলে মহিষাসুরের। শেষে অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে মহিষাসুরকে ত্রিশুল বিদ্ধ করেন মহামায়া। সেই থেকেই তিনি এই জগতে মহিষাসুরমর্দিনী নামেও পরিচিত।
কথিত দেবী দুর্গা আদি শক্তি মহামায়ার আরেক রূপ। তিনিই পরম ব্রহ্ম। রণচণ্ডী রূপে বারবার জগতের দুর্গতি নাশ করেছেন তিনি। বিনাশ করেছেন শুম্ভ-নিশুম্ভ, দুর্গাসুর, রক্তবীজের মতো অসুরের।
যদিও পুরাণ মতে মা দুর্গার আসল পুজোর সময় বসন্তকাল। যা আজ বাসন্তি পুজো নামেই পরিচিত। তবে রামায়ণ অনুসারে শ্রীরাম রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার আগে আরাধনা করেছিলেন সেই আদি শক্তির। ১০৮ নীল পদ্ম নিবেদন করার পণ করেছিলেন রামচন্দ্র। কিন্তু দেবীর মায়ায় কেবল ১০৭টি পদ্ম পাওয়া যায়। তখন শ্রীরাম বলেন ‘আমাকে সবাই পদ্মলোচন বলে, আমি আমার নিজের চোখ অর্পণ করব দেবীকে’। এই বলে যখন তিনি তাঁর চোখ দান করতে যাবনে তখন আবির্ভূত হন দেবী। ভক্তের নিষ্ঠায় মুগ্ধ হয়ে রাবণের পক্ষ ছেড়ে রামের পক্ষ নেওয়ার বচন দেন দেবী। শেষে লঙ্কাধিপতিকে বধ করেন রামচন্দ্র। সেই থেকেই শরৎকালে অকালবোধনের সময় দেবীর পুজোর চল।
লোক বিশ্বাসে দেবী দুর্গার সঙ্গে সঙ্গে পূজিত হন তাঁর গোটা পরিবার। মায়ের সঙ্গে বাপের বাড়িতে আসেন তাঁর সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ। চালচিত্রের উপরে অবস্তাহ্ন করেন স্বামী শিব।