Rules of Rudraksha: ইচ্ছেমতো রুদ্রাক্ষ নয়, ধারণ করার সময় এতটুকু ভুল হলে রুদ্রমূর্তি ধরেন মহাদেব
Asto Benefits: মহাদেবকে তুষ্ট করতে ও তাঁর আশীর্বাদ পেতে সোমবার যেমন উপবাস, পুজো ও রুদ্রাভিষেক করা হয়, তেমনি রুদ্রাক্ষও পরা হয়। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র মতে,যে ব্যক্তি রুদ্রাক্ষ ধারণ করেন তার জীবনে অকালমৃত্যুর কোনও ভয় থাকে না।
বৌদ্ধ ভিক্ষুক, নাগা সন্ন্যাসী ও বাউলদের মধ্যে রুদ্রাক্ষের (Rudraksha) মালা পরার সর্বাধিক রীতি রয়েছে। এই প্রথা হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে। রুদ্র কথার অর্থ হল শিব (Lord Shiva), আর অক্ষ অর্থ হল চক্ষজল। অর্থাত্ শিবের চক্ষুজল থেকে সৃষ্ট রুদ্রাক্ষ নিয়েও রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি (Mythology)। শক্তিশালী ও দুর্বিনীত ত্রিপুরাসুরকে বধ করার জন্য দীর্ঘকাল অপলক নেত্রে লড়াই করার কারণে তার ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত চোখ থেকে মাটিতে এক ফোঁটা অশ্রু পড়ে। সেই অশ্রুকণা থেকেই সৃষ্টি হয় রুদ্রাক্ষের। হিন্দুধর্মে রুদ্রাক্ষকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। রুদ্রাক্ষের বিভিন্ন ধরনের মুখ রয়েছে, যার কারণে এর গুরুত্ব ও ব্যবহার ভিন্ন রয়েছে। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যে জপমালা আকারে ধারণ করা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র ও ধর্মীয় বিশ্বাস মতে, রুদ্রাক্ষ ধারণ করলে যে কোনও ব্যক্তির জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি ও ভগবান শিবের আশীর্বাদ বজায় থাকে।
রুদ্রাক্ষ পরার বা ধারণ করার উপকারিতা
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও রুদ্রাক্ষ অত্যন্ত উপকারী। শুধু তাই নয়, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও আরও বিভিন্ন নেতিবাচক শক্তি দূর করতেও সাহায্য করে। এছাড়া মনকে স্থির রাখতে ধ্য়ান ও যোগের সময় রুদ্রাক্ষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অকালমৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে যে কেউ এই রুদ্রাক্ষ ধারণ করতে পারেন। কিন্তু,রুদ্রাক্ষ পরার সময় কিছু নিয়ম ও আচার মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে করা হয় যে মহাদেবকে তুষ্ট করতে ও তাঁর আশীর্বাদ পেতে সোমবার যেমন উপবাস, পুজো ও রুদ্রাভিষেক করা হয়, তেমনি রুদ্রাক্ষও পরা হয়। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র মতে,যে ব্যক্তি রুদ্রাক্ষ ধারণ করেন তার জীবনে অকালমৃত্যুর কোনও ভয় থাকে না। কিন্তু রুদ্রাক্ষ পরার জন্য রয়েছে বেশ কিছু জরুরি নিয়ম। রুদ্রাক্ষ ধারণ বা পরার সময় মাথায় রাখা উচিত যে এতটুকু ছোট্ট ভুল করলে মহাদেব অত্যন্ত রুষ্ট হন, আর রুষ্ট হলে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন তিনি। আর মহাদিদেবের প্রচণ্ড ক্রোধের মুখে পড়লে ভক্তদের জীবনে নেমে আসে সমস্যার পাহাড়। সেই সমস্যার জাল থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।
রুদ্রাক্ষ পরার সময় কোন কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে
– জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, সোমবার উপবাস, পুজো ও রুদ্রাভিষেক করে মহাদেবকে যেমন তুষ্ট করা হয়, তেমনি রুদ্রাক্ষ পরিধান করলেও শিবকে সন্তুষ্ট করা যায়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, রুদ্রাক্ষ পরার সবচেয়ে শুভ দিন হিসেবে সোমবারকে ধরা হয়, কারণ এই দিনটিকেই শিবের দিন বলে মনে করা হয়। তাই সোমবার রুদ্রাক্ষ পরার উত্তম দিন।
-জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, যদি রুদ্রাক্ষের জপমালা পরা বা ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে প্রথমে মাথায় রাখতে হবে যে এই জপমালাটি কমপক্ষে ২৭টি পুঁতি রয়েছে কিনা। তাহলেই সেই রুদ্রাক্ষ পরা উচিত।
-শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, রুদ্রাক্ষ কেনার পর সরাসরি পরা উচিত নয়। বাজার থেকে কিনে প্রথমে লাল রঙের কাপড়ে মালা বেঁধে তারপর শিবমন্দিরে রাখুন। এরপর ওম নমঃ শিবায় মন্ত্র জপ করুন।
-এরপর হাতে অল্প পরিমাণে গঙ্গা জল নিয়ে রুদ্রাক্ষ জপমালা ধুয়ে ফেলুন। এরপরে, হাতে গঙ্গাজল নিয়ে একটি সংকল্প নিন ও আবার রুদ্রাক্ষ জপমালা পরুন। এই নিয়ম মেনে মালা পরলে মহাদেব প্রসন্ন হন ও আশীর্বাদ বর্ষণ করে থাকেন।
– ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, রুদ্রাক্ষ পরার আগে স্নান অবশ্য়ই করতে হবে।