Shanidev: গ্রহরাজের ভীষন প্রিয় সরষের তেল, কারণ জানলে আজ থেকেই দান করবেন এই তেল
Mustard Oil: শনিবার যে ব্যক্তি শনিদেবের প্রতিমায় সরষের তেল অর্পণ করেন তিনি শনিদেবের আশীর্বাদ লাভ করেন ও চিরকাল সুখী ও সমৃদ্ধি লাভ করেন।

শনিদোষে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য শনিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস করা হয় যে এদিনে যাঁরা শনিদেবের সাতি বা ধাইয়ায় ভুগছেন, তাঁরা মন্দিরে গিয়ে শনিদেবের মূর্তিতে তেল নিবেদন করলে শনিদোষের প্রভাব হ্রাস পায়। এছাড়াও এ দিনে যদি সরষের তেল দান হয় তাহলে তা অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। শনিদেব কেন সরিষার তেল এত পছন্দ করেন তা নিয়ে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনিও। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে একবার শনিদেব তার শক্তি ও ক্ষমতা নিয়ে গর্বিত হয়েছিলেন ও তিনি অনুভব করতে শুরু করেছিলেন যে সমগ্র বিশ্বে তাঁর চেয়ে শক্তিশালী আর কেউ নেই। সেই সঙ্গে হনুমানজির খ্যাতিও সেই সময় ব্যপক হারে ছড়িয়ে পড়েছিল। বজরঙ্গবলীর অলৌকিক কাণ্ড দেখে সবাই বেশ প্রফুল্ল হয়ে যান। সবাইকে তাঁর বীরত্বগাথা প্রচারে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। এমন পরিস্থিতি দেখে শনিদেব খুব রেগে যান। তাঁর মনে হয়েছিল, তাঁর চেয়ে শক্তিশালী আর কে হতে পারে? শনিদেব হনুমানজিকে একের পর এক লড়াইয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ করেন ও রামের ভক্তের সঙ্গে লড়াই করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। শনিদেব যখন হনুমানজিকে চ্যালেঞ্জ করেন, সেই সময় তিনি ভগবান শ্রী রামের ভক্তিতে মগ্ন ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে শনিদেবকে লড়াই না করার আহ্বান জানান। কিন্তু শনিদেব সেই কথা কানে তোলেননি। শনির অবাধ্যতায় উভয়ের মধ্যে শুরু হয় প্রচণ্ড যুদ্ধ।
চরম লড়াইয়ে শনিদেব যখন গুরুতর আহত হন, ব্যথায় কাতরাতে থাকেন, তখন হনুমানজি যুদ্ধ বন্ধ করে তাঁর ক্ষতস্থানে সরষের তেলের প্রলেপ দিতে শুরু করেন। এর জেরে কিছু স্বস্তি পেয়ে সুস্থ হতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে শনিদেবের সমস্ত ব্যথা দূর হয়ে যায়। সেই থেকে সরষের তেল শনিদেবের অন্যতম প্রিয় জিনিস হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে শনিদেব বলেন, যে কোনও ভক্ত ভক্তিভরে বড়ঠাকুরকে তেল নিবেদন করেন, তার জীবন থেকে সমস্ত দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে যায়। এই যুদ্ধের পরই শনিদেব ও হনুমানজির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাই ভক্তরা হনুমানজির পুজো করার পাশাপাশি শনিও তাদের সমস্ত ঝামেলা থেকে দূরে রাখেন।
আরও একটি পৌরাণিক কাহিনি
সরিষার তেল কেন এত প্রিয় তারও রয়েছে আরেকটি কাহিনি। কিংবদন্তী অনুসারে, একবার লঙ্কাপতি রাবণ তার প্রাসাদে ৯টি গ্রহকে বন্দী করেছিলেন। শনিকে রাবণ কারাগারে উল্টো করে রেখেছিলেন। অন্যদিকে সীতার সন্ধানে হনুমানজি লঙ্কায় পৌঁছলে রাবণ বানর ডেকে তাঁর লেজে আগুন ধরিয়ে দেন। রাগান্বিত রামভক্ত হনুমান তার লেজ দিয়ে পুরো লঙ্কা জ্বালিয়ে দেন। লঙ্কারাজ্য পুড়ে গেলে সমস্ত গ্রহ বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে গেলেও উল্টো ঝুলে থাকার কারণে শনিদেব সেখানেই থেকে যান। আগুনে তার শরীর পুড়ে যায়। শনির এই অবস্থা দেখে বজরঙ্গবলী তাঁর প্রতি কষ্ট অনুভব করেন। আগুনে ঝলসে যাওয়া চেহারাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে গোটা শরীরকে সরষের তেল দিয়ে স্নান করান। তাতে শনিদেব স্বস্তি পান দ্রুত ও সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই থেকে শনির পুজোয় সরষের তেল বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পায়।
শনিবার সরষের তেল নিবেদন করার উপকারিতা
– শনিদেবকে ন্যায়ের দেবতা বলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে তিনি সবার কাজের হিসাব রাখেন। শনিবার যে ব্যক্তি শনিদেবের প্রতিমায় সরষের তেল অর্পণ করেন তিনি শনিদেবের আশীর্বাদ লাভ করেন ও চিরকাল সুখী ও সমৃদ্ধি লাভ করেন।
– শনিবার শনিদেবের প্রতিমায় সরিষার তেল নিবেদন করলে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক সমস্যা দূর হয় ও তাদের অবস্থার উন্নতি হয়।
– সরষের তেল নিবেদন করলে শনিদেবের ধাইয়া বা সাড়ে সাতিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কিছুটা স্বস্তি পান ও শনি মহাদশার প্রভাব হ্রাস পায়।
(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)
