BEN vs SAU: শিক্ষকতা ছেড়ে ক্রিকেট পর্যটক নীল
Bengal vs Saurashtra, Ranji Trophy Final: নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলছে ইংল্যান্ড। বাংলার ম্যাচের ফাঁকে একটু পর পর সেই ম্যাচের স্কোরবোর্ডও চেক করে নিচ্ছিলেন। ব্রড উইকেট নিচ্ছেন, আনন্দে লাফিয়ে ওঠার মতো অবস্থা।

দীপঙ্কর ঘোষাল
ইডেনে বাংলার ব্য়াটিংয়ের বিপর্যয় হলেও, সমর্থকের অভাব নেই। রোজই কয়েক’শো ক্রিকেটপ্রেমী উপস্থিত থাকছেন। স্কুল এবং কলেজ ছাত্র-ছাত্রীরাও আসছে রঞ্জি ফাইনাল দেখতে। শুধু কি দেশি, মনোজ তিওয়ারিদের জন্য় গ্যালারিতে রয়েছেন এক বিদেশি দর্শকও। ইংল্য়ান্ডের নীল ফিশার এবং তাঁর এক বন্ধু ইডেনের গ্য়ালারিতে হাজির থাকছেন রোজ। ইডেন গার্ডেন্সের পরিবেশ, ক্রিকেটের স্বাদ চেটেপুটে নিচ্ছেন নীল। ভারতে যে এই প্রথম এসেছেন, তা নয়। বহু স্মৃতি রয়েছে ৬২ বছরের এই ক্রিকেট পর্যটকের। ইংল্য়ান্ডের ঠান্ডা আবহাওয়া একেবারেই পছন্দ নয়। নেই কোনও পিছুটান। তাঁর একটাই শখ, ক্রিকেট। শুধুমাত্র ইংল্যান্ডেই খেলা দেখেন না। সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন। পায়ের তলায় সর্ষে। ইংল্যান্ডের সারেতে বাড়ি। সারে ক্রিকেট ক্লাবের মেম্বারও। সেখানে ম্যাচ দেখার পাশাপাশি বছরের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেন উপমহাদেশের কোনও দেশে। বিশেষ করে ভারত খুবই পছন্দ তাঁর। এখানকার ক্রিকেট প্রেম, আবহাওয়া, কম খরচে থাকা-খাওয়ার ব্য়বস্থা। আরও কিছু কারণ রয়েছে। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
কথা বলার সময়ও চিলতে হাসিটা বজায় থাকে নীলের। তখনই চোখে পড়ে বাঁধানো একটি সোনার দাঁত। ক্রিকেট নিয়ে লাগাতার কথা বলে যেতে পারেন। যতটা প্রশ্ন করা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি তথ্য দেন। নীলের ভারতে প্রথম আসা ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে। শ্রীলঙ্কার সেই ট্রফি জয়, ইডেনে ভারতের স্বপ্নভঙ্গ, অনেক স্মৃতিই রয়েছে। এ বারও ভারতে এসেছেন সেই নভেম্বর মাসে। এর মধ্য়ে বেশির ভাগ সময় কেটেছে গোয়ার মনোরম পরিবেশে। এ বার ভারতের আসার অন্য়তম কারণ দাঁতের চিকিৎসা। ইংল্য়ান্ডে যার জন্য় খরচ হবে ৩ হাজার পাউন্ড, সেটা মুম্বইতে ৫০০ পাউন্ডে হয়েছে, এমনটাই জানালেন নীল। মুম্বই-গোয়া কাটিয়ে ইন্দোরে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ দেখেছেন। নাগপুরে ভারত-ইংল্য়ান্ড টেস্টেও ছিলেন। দিল্লিতে ভারত-ইংল্য়ান্ড দ্বিতীয় টেস্টে যাওয়ার বদলে ইডেনে রঞ্জি ফাইনাল দেখাটাই বেছে নিলেন নীল।
নিউজিল্য়ান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলছে ইংল্য়ান্ড। বাংলার ম্যাচের ফাঁকে একটু পর পর সেই ম্যাচের স্কোরবোর্ডও চেক করে নিচ্ছিলেন। ব্রড উইকেট নিচ্ছেন তখন, আনন্দে লাফিয়ে উঠছেন। বলছেন, ‘আমি প্রথম বার ভারতে এলাম তা নয়, সেই ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে আসছি। ইংল্য়ান্ডের ঠান্ডা আবহাওয়া একেবারেই পছন্দ নয়। বেশির ভাগ সময়ই উপমহাদেশে কাটাই। বলতে পারেন, ক্রিকেটের জন্য় আমি স্বার্থপর। সুযোগ পেলেই ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় ম্য়াচ দেখতে চলে যাই। কলকাতায় আসার আগেও নাগপুর টেস্ট, রঞ্জির ম্যাচ দেখেছি। উজ্জয়ন, বেনারসের মতো বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতেও গিয়েছি। ভারতে আসতে খুবই ভালো লাগে। এখানকার লোকজন খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট নিয়ে আলাদাই আবেগ রয়েছে। এ বার মার্চে ফিরে যাব। ইংল্য়ান্ড যখন টেস্ট খেলতে আসবে, তখন আবার আসব।’
ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ম্য়াচ হওয়ার কথা ছিল ধর্মশালায়। সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। যদিও তৃতীয় ম্যাচের ভেনু পরিবর্তন হয়েছে। নীল-এর কথায়, ‘এমন হতেই পারে এই সিরিজে যেহেতু ধর্মশালায় ম্যাচ হল না, ইংল্য়ান্ডের একটা টেস্ট সেখানে হতে পারে। তা হলে ধর্মশালায় ম্যাচ দেখা, বেরানো দুটোই হবে।’ ইংল্য়ান্ডের বাজবল ক্রিকেট নিয়ে চারিদিকে হইচই। ভারতের মাটিতে কি বাজবল সম্ভব? ‘বাজবল সাফল্য় পাচ্ছে। তবে ভারতের স্পিন ট্র্য়াকে আমার মনে হয় না সেটা সম্ভব। শুধু তাই নয়, ঘরের মাঠে অ্য়াসেজ সিরিজেও বাজবল আদৌ কতটা কাজে দেবে, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’
