
মুম্বই চা রাজা… এই স্লোগানে গম গম করে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম। আসলে রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) এমনটাই বলে ডাকেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও তাঁর অনুরাগীরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক বা আইপিএল হিটম্যানের ব্যাটে চার-ছয়ের ধুন্ধুমার দেখার অপেক্ষায় থাকেন তাঁর ভক্তরা। জীবনের ৩৭টা বসন্ত কাটিয়ে ফেলেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রাক্তন অধিনায়ক। ভারতের টেস্ট ও ওডিআই টিমের ক্যাপ্টেন রোহিত আইপিএলের অন্যতম সফল অধিনায়ক। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের গত মরসুম থেকে অবশ্য তিনি মুম্বই দলের নেতৃত্ব সামলাচ্ছেন না। সে দায়িত্ব হার্দিক পান্ডিয়ার কাঁধে। তবে হিটম্যান এখনও মুম্বই জার্সি গায়ে চাপালেই সুপারহিট। বয়স বাড়ছে, কিন্তু রোহিতের ব্যাটের ধার কমছে না। রোহিতের ৩৮তম জন্মদিনে আপনাদের শোনাই আইপিএলে তাঁর স্পেশাল কিছু রেকর্ডের গল্প।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৮ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন রোহিত শর্মা। তারপরও জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। বরং ভারতকে টি-২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতানো অধিনায়ক রোহিতকে নিয়ে দিন দিন তাঁর ভক্তদের উন্মাদনা বেড়ে চলেছে। এ বারের আইপিএলের শুরুর দিকে রোহিতের ব্যাটে রান আসছিল না। প্রবল সমালোচিত হচ্ছিলেন। রানে ফিরতেই ভ্যানিশ সেই সকল সমালোচনা। বরং বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে রোহিত-বন্দনা শুরু হয়েছে।
রোহিত শর্মাকে আইপিএলের অন্যতম সফল অধিনায়ক এমনি এমনি বলা হয় না। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে, এক-দুই নয় পাঁচ পাঁচটি আইপিএল ট্রফি। মুম্বইকে ৫ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন বানানো অধিনায়ককে সুপারহিট ক্যাপ্টেন না বলে উপায় আছে! এ বার ফেরা যাক রোহিতের আইপিএল রেকর্ডে। আইপিএলের ইতিহাসে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের রেকর্ড রয়েছে মোট ৩ জন ক্রিকেটারের। তাঁর মধ্যে রোহিত শর্মা একজন। অপর দু’জন হলেন অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে সুনীল নারিন।
আইপিএলের কোন ম্যাচে রোহিত হ্যাটট্রিক করেছিলেন? এই প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিতে পারে। উত্তরটা বলেই দিই। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পরের বছর অর্থাৎ ২০০৯ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন রোহিত। সে সময় তিনি ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলতেন। ওই ম্যাচে রোহিত ২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬ রান খরচ করেছিলেন। বিনিময়ে নিয়েছিলেন ৪টি উইকেট। সেই ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়েছিল ডেকান।
রোহিত আইপিএলের মঞ্চে আরও এক কারণে সিংহাসনে রয়েছেন। এক, দুই তো নয়ই ৫ বা ১০-ও নয় মোট ২০ বার আইপিএলে ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ছাড়া কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের নামে এই রেকর্ড নেই। এ ছাড়া আইপিএলে একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে হিটম্যানের দখলে আরও এক মাইলস্টোন রয়েছে। তা হল টুর্নামেন্টের ফাইনালে একমাত্র প্লেয়ার হিসেবে ২টি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির নজির। ২০১৫ সালে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ফাইনালে ২৬ বলে ৫০ করে ম্যাচের সেরাও হয়েছিলেন রোহিত। আর ২০২০ সালের ফাইনালে দিল্লির বিরুদ্ধে ৫১ বলে ৬৮ রান করেন রোহিত। ২০১৫ ও ২০২০ সেই দুই আইপিএলে মুম্বই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৩, ২০১৭, ২০১৯ সালের আইপিএলে রোহিতের হাত ধরে মুম্বইয়ের ক্যাবিনেটে ট্রফি এসেছিল। এখন রোহিতের মাথায় নেই মুম্বই টিমের নেতৃত্বের চাপ। খেলছেন খোলা মনে। যে কারণে তাঁর উপর আবার সকলের প্রত্যাশা বাড়ছে।