Harshal Patel: নিউ জার্সিতে পারফিউমের দোকানে কাজ থেকে বাইশ গজে হর্ষল-রাজ!

ক্রিকেট তাঁর প্রথম প্রেম। ২২ গজে অবশ্য কপাল খুলছিল না। বাধ্য হয়ে এক সময় আমেরিকায় পাড়ি দেন। নিউ জার্সিতে এক পারফিউমের দোকানে একটা সময় কাজ করতেন। কিন্তু মন পড়ে ছিল বাইশ গজে। ভাগ্য বদলানোর জন্য আবার তিনি ফেরেন ভারতে। যাঁকে নিয়ে এত কথা, তিনি কে? এ বার আসা যাক নামে। কথা হচ্ছে হর্ষল প্যাটেলকে নিয়ে। এতক্ষণ যা যা পড়লেন, তাতে খানিক আন্দাজ করতে পারছেন যে, ক্রিকেটার হিসেবে হর্ষলের সফরটা খুব সহজ ছিল না। জীবনে অনেক চড়াই, উতরাই পেরিয়ে এই জায়গায় পৌঁছেছেন হর্ষল। বর্তমানে অরেঞ্জ জার্সিতে আইপিএলে চালাচ্ছেন হর্ষল-রাজ।

ক্রিকেট বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকজন বোলারই রয়েছেন, যাঁদের হাতে বৈচিত্র রয়েছে। যেমন – লাসিথ মালিঙ্গা, জসপ্রীত বুমরা, ডোয়েন ব্র্যাভোরা। এই তালিকায় উঁকিঝুঁকি দেন হর্ষল প্যাটেলও। গুজরাটের ছেলে হর্ষলের হাতে বৈচিত্র রয়েছে। আর তা-ই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। হর্ষলের আস্তিনে প্রচুর অস্ত্র তো রয়েছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম – স্লোয়ার বাউন্সার, ওয়াইড ইয়র্কার, হঠাৎ গতির কমাবাড়া, লো ফুলটসে ব্যাটারকে খাবি খাওয়াতে ওস্তাদ তিনি।

এই হর্ষল জুনিয়র স্তরে গুজরাটে ক্রিকেট খেলতেন। ছেলের প্রতিভা আছে বুঝে তাঁর মা-বাবা তাঁকে গুজরাটে রেখে আমেরিকায় গিয়েছিল। পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে নাম করতে না পেরে ১৭ বছর বয়সে তিনিও বাবা-মায়ের হাত ধরে আমেরিকায় চলে যান। সেখানে তিনি এলিজাবেথে এক পাকিস্তানি মালিকের পারফিউম দোকানে কাজ করতেন। অতীতে নিজেই হর্ষল এই গল্প শুনিয়েছিলেন। তিনি সেই সময় ইংরেজি বলতে পারতেন না। প্রতি পদে পদে তাঁকে দোকানে অপদস্থ করতেন খদ্দেররা। হর্ষলকে অনেকে ইংরেজিতে গালিগালাজও করতেন। ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করে রোজ ৩৫ ডলার আয় করতেন তিনি। পরে সেখান থেকে ক্রিকেটের টানে আবার দেশে ফেরেন।

দেশের হয়ে ২৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন হর্ষল। ৭৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ও ৭২টি লিস্ট-এ-র ম্যাচ। দুই ধাপে হর্ষল আরসিবিতে খেলেছেন আইপিএলে। প্রথমে ২০১২-২০১৭ অবধি, এবং এরপর ২০২১-২০২৩ ফের আরসিবিতে খেলেন হর্ষল। এর মাঝে ২০১৮-২০২০ তিনটে মরসুম খেলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে। এ মরসুম শুরুর আগে ৮ কোটি টাকায় তাঁকে নেয় অরেঞ্জ আর্মি। চলতি মরসুমে ৮ ম্যাচ খেলে ১৩টি উইকেটের মালিক হর্ষল। নানা ম্যাচে ছাপ রাখছেন। কাড়ছেন নজরও।