Sachin Tendulkar: ছেলে অর্জুনের খেলা দেখতে যান না সচিন
অর্জুনের খেলা কি দেখেন সচিন? এক সাক্ষাৎকারে মাস্টার ব্লাস্টার বলেন, 'যখন বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানের খেলা দেখে তখন সন্তানের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। আর তাই আমি অর্জুনের খেলা দেখিনা। কারণ ওকে আমি স্বাধীন ভাবে চিন্তামুক্ত মনে খেলতে দিতে চাই। ক্রিকেটের উপর ওর যে ভালোবাসা রয়েছে তা ও উপভোগ করুক। নিজের কাজে ফোকাস থাকুক। তাই আমি কখনও মাঠে গিয়ে ওর খেলা দেখিনা।'
মুম্বই: ভারতীয় ক্রিকেটে (India Cricket Team) আবার শোনা যাচ্ছে ক্লিশে হয়ে যাওয়া সেই প্রবাদ— বাপ কা বেটা…! সুনীল গাভাসকার-রোহন গাভাসকর, রজার বিনি-স্টুয়ার্ট বিনি। সানির পাহাড়প্রমাণ কেরিয়ার, একরাশ প্রত্যাশার চাপের সামনে চাপা পড়ে গিয়েছিল রোহন গাভাসকরের কেরিয়ার। জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একটা অর্ধশতরান ছাড়া বলার মতো কিছু নেই। বাংলার হয়ে দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেললেও গগনচুম্বী প্রত্যাশার ধারে কাছে পৌঁছতে পারেননি রোহন। সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar) ভারতীয় ক্রিকেটে কিংবদন্তি হয়ে থাকবেন। কিন্তু রোহন গাভাসকর যাবেন শুধু সানিপুত্র হয়ে। ক্রিকেটার রোহন নিজেকে সে ভাবে কখনওই মেলে ধরতে পারেনি। একই অবস্থা রজার বিনি, স্টুয়ার্ট বিনির ক্ষেত্রেও। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে দুরন্ত বোলিং করেছিলেন রজার বিনি। ভারতীয় ক্রিকেট চিরকাল মনে রাখবে তাঁকে। কিন্তু তাঁর ছেলে স্টুয়ার্ট বিনি? একটা বাংলাদেশ ম্যাচ ছাড়া নিষ্প্রভই থেকেছেন দেশের জার্সিতে। জাতীয় দলে তাঁর কেরিয়ারও সুদীর্ঘও হয়নি। কয়েকদিন আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন স্টুয়ার্ট। অনেকেই হয়তো জানতে পারেননি। সচিনপুত্রের (Sachin Tendulkar) ক্ষেত্রেও কি ঘটবে একই ঘটনা?
অর্জুন তেন্ডুলকরের কাছেও এ বার পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ। মুম্বইয়ের রঞ্জি দলে সুযোগ পেয়েছেন। আইপিএলের মেগা নিলামে অর্জুনকে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে নিয়েছে মুম্বইও। বাবা বিশ্ব ক্রিকেটের আইকন। মাঠে নামার আগে পাহাড়প্রমাণ চাপ ছেলের কাছে। অর্জুনের খেলা কি দেখেন সচিন? এক সাক্ষাৎকারে মাস্টার ব্লাস্টার বলেন, ‘যখন বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানের খেলা দেখে, তখন সন্তানের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। আর তাই আমি অর্জুনের খেলা দেখি না। কারণ ওকে আমি স্বাধীন ভাবে চিন্তামুক্ত মনে খেলতে দিতে চাই। ক্রিকেটের উপর ওর যে ভালোবাসা রয়েছে, তা ও উপভোগ করুক। নিজের কাজে ফোকাস থাকুক। তাই আমি কখনও মাঠে গিয়ে ওর খেলা দেখি না।’ তার মানে সচিনও জানেন খুব ভালো করে, তাঁর নামের চাপ নিয়েই প্রতিটা ম্যাচে নামতে হবে অর্জুনকে। যখন ব্যাট করতে যাবেন, লোকে প্রত্যাশা জাগিয়ে বলবে, সচিনের ছেলে নামছে…! বল হাতে রানআপে দৌড়লে লোকে বলবে, সচিনও একসময় দারুণ বল করত। বাপ কা বেটা তো…!
সচিন কিন্তু বলছেন, ‘আমরা কেউই অর্জুনকে ক্রিকেট খেলার জন্য জোর করিনি। ও প্রথমে ফুটবল খেলতে ভালোবাসত। তার পর দাবার উপর ওর একটা নেশা তৈরি হল। ওর জীবনে অনেক পরে এসেছে ক্রিকেট। অনেক দেরিতে এই খেলাটার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে।’
জগতের প্রতিটা কোণে, প্রতিটা খাঁজে সফল বাবাদের ছেলেদের কিছুটা চাপ নিয়েই কেরিয়ার তৈরি করতে হয়। কখনও তাঁরা পারেন। কখনও তাঁরা হারিয়ে যান। অমিতাভ বচ্চনের ছেলেকেও বিগ বি নামের বিপুল চাপ নিয়েই সিনেমায় নামতে হয়েছিল। আসলে দুনিয়া অনেক সময় বাবাকে দিয়ে মাপতে চান তাঁর ছেলেকে। হয়তো ভুল। আর সেই কারণেই পাহাড়প্রমাণ চাপ তৈরি হয়। তবু ‘বাপ কা বেটা’ দর্শন থেকেই যায়। সচিনের ‘ঈশ্বর’ তাকমা, ১০০ সেঞ্চুরির চাপ নিয়েই খেলতে হবে অর্জুনকে। বাইশ গজ, ক্রিকেট আর খেলাটার সঙ্গে জুড়ে থাকা অগণিত মানুষ চাইবেন, সচিনপুত্র হিসেবে নন, তিনি পরিচিত হন ‘অর্জুন তেন্ডুলকর’ নামে।
আরও পড়ুন: India vs West Indies: বায়ো-বাবল ভেঙে টিম থেকে সরলেন কোন ২ তারকা?