Vaibhav Suryavanshi: ১৪ বছরেই প্রিয় মটন-চিকেন থেকে ‘বঞ্চিত’ বৈভব, কোচের কথাই সত্যি হবে?
RR, IPL 2025: কাড়ি কাড়ি মটন-চিকেন তাঁর সামনে রাখলে হাপুস হুপুস করে খেয়ে ফেলতেন বৈভব সূর্যবংশী। সেখান থেকে ক্রিকেটের জন্য সব ছেড়েছেন বছর ১৪-র বাঁ হাতি ব্যাটার।

প্রথম বলেই ছয়, কথায় বলে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়… জেড্ডায় হওয়া আইপিএলের (IPL) মেগা নিলামে পিঙ্ক আর্মি এক হিরেকে খুঁজে বের করেছিল। টুর্নামেন্টের নিজের ডেবিউ ম্যাচের প্রথম ডেলিভারিতেই এক গগনচুম্বী ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ১৮তম আইপিএলে তিনিই বিস্ময় বালক। বয়স তাঁর মেরে কেটে ১৪। টুর্নামেন্টটা তাঁর থেকে বয়সে বড়। আইপিএলের দুনিয়ায় পা রেখেই আলোড়ন ফেলেছেন। এত কথা যাকে নিয়ে তাঁর বৈভব কম নয়। কারণ, তিনি বৈভব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi )। মাত্র ১৪ বছর ২৩ দিনে আইপিএল কেরিয়ারের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ইতিহাস গড়েছেন। এ কাজ তাঁর জন্য সহজ ছিল না। অনেক ত্যাগস্বীকার করতে হয়েছে বৈভবকে। তাই বলা যায়, ক্রিকেটের সাধনা করতে গিয়ে ‘বৈভব’ ছেড়েছেন সূর্যবংশী।
বৈভবের বয়সী ছেলে-মেয়েরা যেখানে রেস্তোরাঁয় যায়, পছন্দের নানা খাবার খায়, সেখানে মাত্র ১৪ বছরেই জীবন থেকে প্রিয় মটন, চিকেন ও পিৎজা যেন ধুয়ে মুছে ফেলেছেন। এত অল্প বয়সে এই সংযম বৈভবকে সঠিক পথের দিশা দেখেয়েছে। রাজস্থান রয়্যালস জেড্ডায় হওয়া আইপিএলের মেগা নিলামে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিহারের সমস্তিপূরের ছেলেকে কেনে। অপাত্রে যে দান হয়নি, তা ডেবিউ ম্যাচেই বুঝিয়েছেন বৈভব। পিঙ্ক জার্সিতে প্রথম বার খেলতে নেমে ২০ বলে নজরকাড়া ৩৪ রান করেন বাঁ-হাতি ব্যাটার।
কৃষকের ছেলে বৈভব। বাইশ গজে যে তিনি ছাপ ফেলতে পারেন, তা ছেলেবেলায় বুঝেছিলেন তাঁর বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী। শুরুর দিকে নিজে বৈভবের প্র্যাক্টিসের জন্য একটি জায়গা বানান তাঁর বাবা। পরে তিনি সমস্তিপূরে ব্রজেশ ঝা-য়ের ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ছেলেকে ভর্তি করেন। এরপর বৈভবের উন্নতির জন্য বড় পদক্ষেপ নেন তাঁর বাবা। সমস্তিপূর থেকে পাটনা ৯০ কিমি যাতায়াত শুরু হয় বৈভব ও তাঁর বাবার। ক্রিকেটে বুঁদ ছেলেকে নিয়ে অ্যাকাডেমিতে যেতেন সঞ্জীব। সেখানে মনীশ ওঝার অ্যাকাডেমিতে বৈভব নিজের ক্রিকেট খেলার স্টাইল, টেকনিক আরও উন্নত করেন।
কাড়ি কাড়ি মটন-চিকেন তাঁর সামনে রাখলে হাপুস হুপুস করে খেয়ে ফেলতেন বৈভব। সেখান থেকে ক্রিকেটের জন্য সব ছেড়েছেন। বৈভবের কোচের কথায়, ‘নির্দেশ অনুযায়ী ও আর মটন খায় না। ডায়েট থেকে পিৎজা বাদ দিয়েছে। মটন, চিকেন দুটোই খুব ভালোবাসত ও। যেহেতু ও বয়সে অনেকটাই ছোট, পিৎজা খেতে পছন্দ করত। কিন্তু এখন আর খায় না। ওকে যখন, যতটা মটন দেওয়া হত, শেষ করে ফেলত। যে কারণে একটু গোলুমোলু দেখতে ওকে।’
কোচ মনীশের কথায়, ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেন বৈভব। ব্রায়ান লারা ও যুবরাজের একটা মিলিত ছাপ দেখা যায় বৈভবের মধ্যে। যুবির মতো আগ্রাসন দেখা যায় বছর ১৪-র তরুণ ক্রিকেটারের খেলায়। শিষ্য বৈভব আইপিএলে ডেবিউ ম্যাচ খেলার আগে ফোন করেছিলেন গুরু মনীশকে। এরপর জানান, লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগের দিন রাতে বৈভব জানতে পারেন তিনি পন্থদের বিরুদ্ধে খেলবেন। অনুশীলন শেষে হোটেলে ফেরার পর রাত ৮টায় রাহুল দ্রাবিড় ও রাজস্থানের ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে ফোন পান বৈভব। জানতে পারেন ডেবিউ হতে চলেছে। খুশির খবর নিজের কোচকে জানাতে দেরি করেননি বৈভব। একদিকে খুশি, অপরদিকে চাপ বৈভবকে রোমাঞ্চিত করেছিল। কোচকে সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘ছয় মারার বল পেলে মারবই, থামব না।’ কোচকে যা বলেছিলেন, লখনউয়ের বিরুদ্ধে ডেবিউ ম্যাচে নেমে সেটাই করে দেখান বৈভব।
