Cricket Love story: প্রথম দেখায় নাক সিঁটকেছিলেন, ক্রিকেট-বাস্কেটবল দ্বন্দ্বের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল প্রেম
গন্তব্যে পৌঁছেই এক সুন্দরী স্কোরারের দিকে চোখ আটকে যায় ইশান্তের। মুচকি হেসে ফ্লার্ট করার ভঙ্গিতে বলে ওঠেন, 'আপনাদের এখানের স্কোরাররা তো বেশ সুন্দরী'।
প্রেমের চেয়ে সুন্দর আর কিছু হয় না। আবার প্রেমের মতো ঝুঁকি আর কিছুতে নেই। মিয়াঁ-বিবি রাজি হলেও এতে হুমকি থাকে। চোখরাঙানি থাকে। কথা না শুনলে বেদম প্রহারও জোটে অনেক সময়। ঘরবন্দি, ফোন কেড়ে নেওয়া, পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেবে দাদ্দারা— আরও কত কত কী! প্রেমের জয় বোধহয় এখানেই। প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ঠেলে, অসংখ্য বিনিদ্র রজনী পেরিয়ে প্রেম ঠিক আলোয় এসে পা দেয়। প্রেমিক-প্রেমিকা থেকে মিয়াঁ-বিবি হয়ে যান তাঁরা। কিন্তু ভুলে যান কি প্রেমের সেই যন্ত্রণাময় দিনগুলো? ভরা ফ্রেব্রুয়ারি (Valentines Week) মানে হিমেল বাতাসে প্রেমের গন্ধ। বসন্ত এসে গ্যাছে! আর এই বসন্তে বাছাই কিছু প্রেমের গল্প তুলে ধরল TV9 Bangla। ষষ্ঠ কিস্তিতে ক্রিকেটার ইশান্ত শর্মার (Ishant Sharma) দুষ্টুমিষ্টি প্রেমকাহিনি।
সালটা ২০১১। দিল্লির আইজিএমএ বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত লিগ চলছে। প্রতিযোগিতায় চিফ গেস্ট হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন জাতীয় দলের ডানহাতি পেস বোলার ইশান্ত শর্মা। গন্তব্যে পৌঁছেই এক সুন্দরী স্কোরারের দিকে চোখ আটকে যায় ল্যাঙ্কি পেসারের। মুচকি হেসে ফ্লার্ট করার ভঙ্গিতে বলে ওঠেন, ‘আপনাদের এখানের স্কোরাররা তো বেশ সুন্দরী’। ইশান্ত মন্তব্য করেছিলেন জাতীয় দলের বাস্কেটবল খেলোয়াড় প্রতিমা সিংকে দেখে। ওই টুর্নামেন্টের আগে চোট পাওয়ায় প্রতিমা খেলছিলেন না, স্কোরারের কাজ করছিলেন। জাতীয় দলের বাস্কেটবল খেলোয়াড়কেও চিনতে পারেননি ইশান্ত। অপ্রস্তুত হয়ে ক্রিকেটারের ভুল শুধরে দেন ইশান্তের বন্ধু। যিনি ছিলেন ওই ইভেন্টের অন্যতম আয়োজক। প্রতিমার পরিচয় জানতে পেরে অবাক হয়ে যান ইশান্ত। ফ্লার্ট করতে গিয়ে হৃদয় দিয়ে বসেন বাস্কেটবলার প্রতিমাকে। যাকে বলে লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট।
ইশান্তকে প্রথমবার সামনে থেকে দেখে প্রতিমার প্রতিক্রিয়া কী ছিল? উহুঁ, ইশান্তের মতো প্রথম দেখায় প্রেম তো দূরের কথা, বরং ক্রিকেটারকে বেশ নাক উঁচু, অহংঙ্কারি বলে মনে হয়েছিল প্রতিমার। ক্রিকেটার বলে কি পাত্তা দিতে হবে নাকি? নিজেও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, অথচ ক্রিকেটারদের নিয়ে অতিরিক্ত মাতমাতিতে বিরক্ত প্রতিমা দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন।
এদিকে প্রতিমাকে দেখেই বাস্কেটবল খেলাটি প্রতি প্রেম যেন বেড়ে যায় ইশান্তের। নানা অছিলায় বাস্কেটবল কোর্টের পাশ দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করতেন, প্রতিমাকে খুঁজতেন। কিন্তু সামনে গিয়ে আলাপ করার মতো সাহস ছিল না। কথোপকথন শুরুর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নেন প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া ক্রিকেটার। টুক করে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। আসলে সেদিন প্রতিমার চেয়ে ওই ইভেন্টের অন্যতম আয়োজক তাঁর দিদি প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে কথা বলছিলেন ইশান্ত। ক্রিকেটারের মনোবাসনা বিন্দুমাত্র টের পাননি। হতাশ হলেও হাল ছাড়েননি ইশান্ত। পাক্কা দু’বছর পর ইশান্তের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করেন প্রতিমা। শুরু হয় দু’জনের কথোপকথন।
ক্রিকেট-বাস্কেটবলের জনপ্রিয়তা নিয়ে ঝগড়ার মাঝেই কবে যে ইশান্তকে ভালো লেগে গিয়েছিল, টের পাননি প্রতিমা। তাই ইশান্ত যেদিন সাহস করে মনের কথা পেড়েছিলেন, না বলার কারণ খুঁজে পাননি। বেশ কিছুদিনের প্রেমপর্ব চলার পর ২০১৬ সালে বেনারসে দু’জনে বাগদানপর্ব সারেন। সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে গুরুগ্রামে গাঁটছড়া বাধেন এই স্পোর্টস কাপল।