AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

EURO 2020 : সাউথগেটের শাপমোচন, ইংল্যান্ড কোচ যেন চক দে-র ‘কবীর খান’

  জয়ের পর গ্যারেথ সাউথগেটের যখন একেবারে ফিল্মের কবীর খানের মত শাপমোচন ঘটল, তখন নিঃশব্দে ওয়েম্বলিতে শেষ হল একটা যুগ। জোয়াকিম লো-র যুগ।

EURO 2020 : সাউথগেটের শাপমোচন, ইংল্যান্ড কোচ যেন চক দে-র 'কবীর খান'
সাউথগেট যেন পর্দার কবীর খান! ঘরের মাঠে ২৫ বছরের শাপমোচন ঘটালেন ইংল্যান্ড কোচ
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2021 | 1:36 AM
Share

ইংল্যান্ড- ২ ( স্টার্লিং ৭৫’, হ্যারি কেন ৮৬’)

জার্মানি-০

লন্ডনঃ ফাইনাল বাঁশি বাজার পর রকমারি রিস্ট জুয়েলারি বাঁধা মুষ্টিবদ্ধ হাতদুটি  আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিলেন। এ যেন ‘চক দে’ ফিল্মের কবীর খান! রুপোলি পর্দায় কবীর খানরূপী শাহরুখ যখন চিকচিক করা চোখের কোনা নিয়ে গ্যালারির পাশের পাঁচিলটায় বসলেন, পাশে উড়ছিল ভারতীয় পতাকা। বেজে উঠেছিল সেলিম মার্চেন্ট, কৃষ্ণা বেউরার গলার সেই গায়ে কাঁটা দেওয়া গানটা। পেনাল্টি মিস করার যে যন্ত্রণা খেলোয়াড় কবীর খান বয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তার শাপমোচন ঘটল ভারতীয় মহিলা দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে। আর এই গল্প তো হুবহু ইংল্যান্ড(ENGLAND) কোচ গ্যারেথ সাউথগেটেরও(GARETH SOUTHGATE)। চ্যাম্পিয়ন হয়ত এখনই হন নি, কিন্তু গল্পের মিলটা তো প্রায় এক। ১৯৯৬ ইউরোর (EURO 2021)সেমিফাইনালে এই জার্মানির বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করেছিলেন সাউথগেট। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ছিটকে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের। আর সেই জার্মানিকেই হারিয়ে শেষ আটে ইংল্যান্ড। গ্যারেথ সাউথগেটের কোচিংয়ে। এ তো এক আশ্চর্য সমাপতনও বটে। এদিন প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে(GERMANY) ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শেষ আটে ইংল্যান্ড। গোলদাতা স্টার্লিং ও হ্যারি কেন(HARY KANE)।

১৯৯৬ সালের ইউরো সেমিফাইনাল। ঘরের মাঠে সেমিফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি ইংল্যান্ড। নির্দিষ্ট সময় ১-১ থাকার পর টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। ৪-৫ গোলে হেরে যায় ইংল্যান্ড। শিয়ারার-শেরিংহ্যামদের ইংল্যান্ডে পেনাল্টি মিস করে ভিলেন বনে যান গ্যারেথ সাউথগেট। সেই যন্ত্রণা তো কম দিন বুকে নিয়ে ঘুরছেনা ইংল্যান্ড। এরপর যে কোনও টুর্নামেন্টে  নকআউটে জার্মানির সঙ্গে সাক্ষাৎ মানেই হারেই জুটেছে থ্রি লায়নসের কপালে। এদিন শুরু থেকেই যেন যুদ্ধং দেহি মনোভাবে নেমেছিল দুই দলই। গোলের সুযোগ তৈরি করার থেকেও প্রতিপক্ষ ফুটবলারকে চোরাগোপ্তা কড়া ট্যাকল করছিল দুই পক্ষই। ফল প্রথমার্ধে ৩টি হলুদ কার্ড। গোল নেই। প্রথমার্ধের একেবারে শেষমুহূর্তে স্টার্লিংয়ের পাস থেকে সহজ সুযোগ হ্যারি কেনের মিস ছাড়া তেমন কোনও ঘটনাবহুল ছিলনা। এদিন লো-র স্ট্র্যাটেজি ছিল আলট্রা ডিফেন্সিভ ফুটবল। কতবার ইংল্যান্ডের বক্সে হানা দিয়েছে জার্মান স্ট্রাইকাররা, তা গুনতে পরিশ্রম হয়না।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও দুই দলেরই আক্রমণের ঝাঁঝ তেমন ছিল না। মাঝমাঠেই চলছিল বল দখলের লড়াই। ৬৮ মিনিটে একটা পরিবর্তনই বদলতে দিতে শুরু করল ইংল্যান্ডকে। সাকাকে বসিয়ে নামানো হয় গ্রিলিশকে। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে হ্যারিকেনের পাশ বাঁদিকে উইং ধরে দাঁড়নো গ্রিলিশকে। সেখান থেকে গ্রিলিশের মাপা পাস শ’কে। শ’য়ের পাস থেকে গোল করতে ভুল করেননি রহিম স্টার্লিং। চলতি ইউরোয় ৩টি গোল হয়ে গেল স্টার্লিংয়ের। একটি টুর্নামেন্টে ৩ গোল করে স্টার্লিং ছুঁয়ে ফেললেন গ্যারি লিনেকারকে।

১-০ গোলে ইংল্যান্ড এগিয়ে যাওয়ার পরেই সমতায় ফেরানোর সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন টমাস মুলার। জার্মানির ম্যাচে ফেরার যাবতীয় স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় ম্যাচের ৮৬ মিনিটে। আবার বল পায়ে নজর কাড়লেন ২৫ বছরের গ্রিলিশ।জার্মানির বক্সে ঢুকে বাঁপায়ে মাপা ক্রস। আলতো করে মাথা ছুঁইয়ে গোল হ্যারি কেনের। ৫৫ বছর পর কোনও টুর্নামেন্টে জার্মানির কাছে নকআউটে হারের রেকর্ড বদলে ফেলল সাউথ গেটের ইংল্যান্ড।

জয়ের পর গ্যারেথ সাউথগেটের যখন একেবারে ফিল্মের কবীর খানের মত শাপমোচন ঘটল, তখন নিঃশব্দে ওয়েম্বলিতে শেষ হল একটা যুগ। জোয়াকিম লো-র যুগ। ১৫ বছরের জার্মানির কোচ হিসেবে সফর শেষ করলেন লো। ঝুলিতে রইল ফিফা বিশ্বকাপ ও কনফেডাারেশন কাপের মত ট্রফি জয়ের স্বাদ।