টিম বিরাটকে এভাবেই দেখতে চেয়েছিলাম

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পথে ভারত এক পা বাড়িয়ে রেখেছে। যদি না বিশাল কোনও অঘটন না ঘটে, লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে দেখব কোহলিদের। মোতেরায় সিরিজের শেষ টেস্টে নামার আগে আত্মবিশ্বাসের শিখরে থাকবে কোহলিরা।

টিম বিরাটকে এভাবেই দেখতে চেয়েছিলাম
Follow Us:
| Updated on: Feb 26, 2021 | 11:53 AM

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়

ভারত- ১৪৫ ও ৪৯/০ ইংল্যান্ড- ১১২ ও ৮১

এটাই ইংল্যান্ডের স্বভাব। খেলতে না পারলেই পিচকে দোষারোপ করা। ওদের কথায় যদি ‘আন্ডার প্রিপেয়ার্ড’ উইকেটই হয়ে থাকে, তাহলে তো এই পিচে ভারতও ব্যাটিং করল। দ্বিতীয় টেস্টের পরও পিচকে দোষারোপ করেছিল ইংরেজরা। এ বারও তাই। প্রথম টেস্ট যেহেতু জিতেছিল, তাই সেই পিচ ওদের কাছে ভালো ছিল। স্পিন খেলতে হলে টেকনিক দরকার। ফুটওয়ার্ক ভালো হতে হবে। রুট ছাড়া স্পিন খেলার ক্ষমতা কারও নেই। স্পিন খেলার চ্যালেঞ্জটা ইংল্যান্ড নিতে পারেনি। তাই দু’দিনেই খেলা শেষ হয়ে গেল। একজন ব্যাটসম্যানের উপর নির্ভর করে ভারতের মাটিতে সফল হওয়া যায় না। অক্ষর-অশ্বিনরা ইংল্যান্ডকে কঠিন বাস্তবের সামনে দাঁড় করাল।

ওরা যে পিচ নিয়ে এত সরব হচ্ছে, ওরা তো উইকেটের চরিত্রও বুঝতে পারেনি। যদি বুঝতেই পারত, তাহলে একজন স্পিনার নিয়ে দল নামাত না। পার্টটাইম স্পিনার হিসেবে রুট বল করল। ভারত তো পরিকল্পনামাফিকই দল নামিয়েছিল। স্পিনের বিরুদ্ধে ওদের দুর্বলতা রয়েছে। আর সেটাই করে দেখাল অক্ষর-অশ্বিনরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের জোরে বোলাররা বলই করেনি। অক্ষর, অশ্বিন আর ওয়াশিংটন বল করে গেল। ভারতের মাটিতে স্পিন খেলতে হলে হোমওয়ার্ক করতে হয়। রুট ছাড়া ওদের কেউই সেটা করে আসেনি। এর আগে ভারতের মাটিতে টার্নিং ট্র্যাকে স্পিনারদের বিরুদ্ধে অনেকেই সফল হয়েছে। স্টিভ ওয়, রিকি পন্টিং, অ্যালেস্টার কুক, কেভিন পিটারসনরা এই টার্নিং উইকেটেই খেলে রান করেছে। শুধু ডিফেন্স করে আর বড় শট নিয়ে স্পিনারদের বিরুদ্ধে সফল হওয়া যায় না। কখনও কখনও স্টেপ আউট করতে হয়। ভিন্ন শটও খেলতে হয়। স্পিনারদের উপর চাপ তৈরি করতে হয়। শট নির্বাচনেও ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানদের গলদ রয়েছে। স্পিন খেলাটা অত সহজ নয়। পিচের অজুহাত দিয়ে আর কী হবে? ভারতও তো একই উইকেটে ব্যাট করল। কোহলি, রোহিত, রাহানেদের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাই ভারতের সম্পদ। টার্নিং ট্র্যাকে খেলার জন্য হোমওয়ার্ক করতে হয়। ক্রিকেটও একটা সাধনা। স্পিনারদের বিরুদ্ধে খেলতে হলে সেই মতো অনুশীলন করতে হবে।

আগেই বলেছিলাম, এই উইকেটে অক্ষর প্যাটেল ভয়ঙ্কর। কারণ ওর বলটা ছোট টার্ন করে। আর সেটাই ব্যাটসম্যানদের জন্য মারাত্মক। বড় টার্ন সবসময় মারাত্মক হয় না। কারণ বল বেশি টার্ন করলে অনেক সময় তা ব্যাটসম্যানকে পরাস্ত করতে পারে না। তবে ছোট টার্ন ব্যাটসম্য়ানদের বেকায়দায় ফেলে দেয়। অক্ষরের বলটা টার্ন করে ভেতরে ঢোকে। তাই ওকে খেলা সবচেয়ে কঠিন। দুটো টেস্টে ১৯ উইকেট নিল অক্ষর প্যাটেল। রবীন্দ্র জাদেজার বিকল্প হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করল অক্ষর।

আরও পড়ুন: অশ্বিন-অক্ষরে গর্বিত আমরা, বলছেন বিরাট

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পথে ভারত এক পা বাড়িয়ে রেখেছে। যদি না বিশাল কোনও অঘটন না ঘটে, লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে দেখব কোহলিদের। মোতেরায় সিরিজের শেষ টেস্টে নামার আগে আত্মবিশ্বাসের শিখরে থাকবে কোহলিরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড ১১২ ও ৮১ (স্টোকস ২৫, অক্ষর প্যাটেল ৫/৩২, অশ্বিন ৪/৪৮) ভারত ১৪৫ ও ৪৯/০ (রোহিত ২৫ অপরাজিত, গিল ১৫ অপরাজিত)। ভারত ১০ উইকেটে জয়ী।