Asian Para Games 2023: দুটো হাত নেই, দু-দুটো সোনা জিতে এশিয়ান গেমসে ইতিহাস কাশ্মীরের মেয়ে শীতলের

Sheetal Devi: বছর চারেক আগে কিস্তওয়ারের একরত্তি মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর লোকজন। ফোকোমেলিয়ার মতো বিরল রোগে আক্রান্ত। দুটো হাত নেই। কিন্তু আশ্চর্য প্রাণশক্তি, বেঁচে থাকার অদম্য নেশা। সেই মেয়েকে দেখে সেনাবাহিনী প্রথমে ঠিক করেছিল, কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু খেলার প্রতি নেশাই সেনা আধিকারিকদের ছুঁয়ে যায়। তাঁরাও এই মেয়েকে উৎসাহিত করেন।

Asian Para Games 2023: দুটো হাত নেই, দু-দুটো সোনা জিতে এশিয়ান গেমসে ইতিহাস কাশ্মীরের মেয়ে শীতলের
শীতল দেবী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2023 | 6:08 PM

হানঝাউ: দুটো হাত নেই ১৬ বছরের মেয়ের। জম্মু-কাশ্মীরের লোই ধর গ্রাম ফোকোমেলিয়া রোগের নামটা শোনেনি। বিরল রোগে আক্রান্ত সেই মেয়েই যে বিরল ইতিহাস তৈরি করবেন, কে জানত! এশিয়ান প্যারা গেমসের আর্চারি থেকে দুটো সোনা সহ পদকের হ্যাটট্রিক করে ইতিহাস তৈরি করে ফেললেন শীতল দেবী। শুধু কি তাই, বিশ্ব আর্চারিতে তিনিই একমাত্র মেয়ে, যিনি পায়ে করে তির-ধনুক ছোড়েন। এমন মেয়েকে ঘিরে ঘিরে গর্বিত হবে সারা দেশ, সন্দেহ নেই। ১৬ বছরেই সোনার মঞ্চে উঠলেন কী করে? শীতলের গল্প শুনলে আবক হয়ে যাবেন। TV9Bangla Sportsএ বিস্তারিত।

আগেই মিক্সড টিম ও মেয়েদের ডাবলস থেকে এসেছিল সোনা ও রুপো। এ বার কম্পাউন্ড আর্চারির নিজের ইভেন্ট থেকেও জিতলেন সোনা। ফাইনালে সিঙ্গাপুরের আলিম নূর শাহিদা কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলেছিলেন। কিন্তু চাপের মুখেও মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন শীতল। পর পর ছ’টা ১০ পয়েন্ট মেরে সোনা জেতেন তিনি।

বছর চারেক আগে কিস্তওয়ারের একরত্তি মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর লোকজন। ফোকোমেলিয়ার মতো বিরল রোগে আক্রান্ত। দুটো হাত নেই। কিন্তু আশ্চর্য প্রাণশক্তি, বেঁচে থাকার অদম্য নেশা। সেই মেয়েকে দেখে সেনাবাহিনী প্রথমে ঠিক করেছিল, কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু খেলার প্রতি নেশাই সেনা আধিকারিকদের ছুঁয়ে যায়। তাঁরাও এই মেয়েকে উৎসাহিত করেন। শীতল যে ইতিহাস তৈরি করে ফেলবেন হানঝাউ এশিয়ান গেমসে, কেউই হয়তো ভাবেননি। ২০১৯ সালেও আর্চার হয়ে ওঠা হয়নি। জম্মু-কাশ্মীরের মেয়ের আরও তিনটে বছর লেগেছিল তির-ধনুক তুলে নিতে। ২০২২ সালে কোচ কুলদীপ কুমারের জন্য আর্চারিতে হাতেখড়ি হয়েছিল শীতল দেবীর। হাতেখড়ি? নাহ, পায়েখড়ি বলা উচিত। আর্চারির দুনিয়ায় একমাত্র মেয়ে, যে পায়ে ধরে ধনুক। তির ছোড়েও পায়ে করে। প্যারা এশিয়ান গেমসে দুটো সোনা তা থেকেই অবলীলায় জিতে ফেলল ১৬ বছরের মেয়ে। যে একবছর আর্চারিতে পা রেখেই সব হিসেব ওলোট-পালট করে দিতে পারে, সে মেয়ের জন্য দেশের মাথা গর্বে উঁচু। কোচ কুলদীপ বলছেন, ‘আমি শীতলকে বলেছিলাম, আমার আর্চারি অ্যাকাডেমিতে আসতে। অন্যদের শুটিং দেখতে। ও এসেই আর্চারির প্রতি আগ্রহ দেখায়। নেমেও পড়ে। সবচেয়ে অবাক হয়েছিলাম দ্রুত ওকে শিখতে দেখে। তখনই ঠিক করেছিলাম, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে নিয়ে যাব শীতলকে। ওখানে গিয়েই দেখার চোখটা পাল্টে গিয়েছিল শীতলের।’

ডান পায়ে ধনুক তোলেন শীতল। আর মুখ দিয়ে ছোড়েন তির। কাশ্মীরের মেয়ে এক আশ্চর্য তিরন্দাজ। বিশেষ ধনুক কুলদীপই তৈরি করে দিয়েছেন। যা নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন শীতল।