Archery: দীপিকা-অঙ্কিতাদের দিশা দেখাতে গুরুদায়িত্ব রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁধে
দীপিকা কুমারি, অঙ্কিতা ভকতদের কোচ হলেন রাহুল। জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে TV9 Bangla-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আগামীর লক্ষ্য নিয়ে তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন।

কলকাতা: সোনার লক্ষ্য-ভেদ করতে এ বার ভারতীয় মহিলা তিরন্দাজি টিমের গুরুদায়িত্ব পেলেন অলিম্পিয়ান রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন পূর্ণিমা মাহাতো ছিলেন এই দায়িত্বে। এ বার দীপিকা কুমারি, অঙ্কিতা ভকতদের কোচ হলেন রাহুল। জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে TV9 Bangla-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আগামীর লক্ষ্য নিয়ে তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন।
রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় দলের কোচ হওয়ার পর বলেন, ‘আমরা গত এক বছর ধরে প্রায় অকসঙ্গে কাজ করছি। দীপিকা কুমারি, অতনু ঘোষ আমার কাছে ট্রেনিং নিচ্ছে। জুনিয়র স্তরের জুয়েল সরকার আমার কাছে অনুশীলন করছে। জুয়েল এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছে। ওদের নিয়েই চলে যাচ্ছিল। এ বার একটা পুরোপুরি আলাদা দায়িত্ব পেলাম। জাতীয় দলের দায়িত্ব, বড় ব্যাপার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগে একটা প্রত্যাশা রয়েছে। সেটা এবার কোরিয়াতে হবে। সবমিলিয়ে যে কারণে একটা গুরুদায়িত্ব। তবে একটা পজিটিভ দিক যে, আমি ওই জায়গাতে খেলে এসেছি। তাই আমার জন্য ওদের সাপোর্ট করা খানিক সহজ। মানসিকভাবে ও কৌশলগত ভাবে ওদের সমর্থন করতে পারব।’
ভারতীয় মহিলা টিম নিয়ে আশাবাদী রাহুল। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের টিম খুব ভালো। দীপিকা, অঙ্কিতা আছে। একটি ১৫ বছরের মেয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্রের। খুব ভালো পারফর্ম করে দলে সুযোগ পেয়েছে। একদিকে অভিজ্ঞতা ও একদিকে তারুণ্য দুই-ই রয়েছে। তাই আশাবাদী যে আমাদের ভালো পারফরম্যান্স হবে।’
রাহুল কোরিয়া যাওয়ার আগে মাদ্রিদে দলকে নিয়ে অনুশীলন সেরে নিতে পারবেন বলে ভাবছেন। এই প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বলে দিলেন, ‘মাদ্রিদে বিশ্বকাপ রয়েছে। তার জন্য ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। কোরিয়ার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ মাদ্রিদ বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে। বিশ্বের সব ভালো ভালো দলগুলো ওখানে থাকবে। ওই টুর্নামেন্টের পর কোরিয়ায় যাব। কোরিয়ায় গিয়ে কোরিয়াকে হারাতে পারলে তো ভালো হবে।’
প্লেয়ার হিসেবে যা রাহুলের অধরা, তাই এ বার কোচ হিসেবে পাওয়ার পালা। অলিম্পিয়ান তিরন্দাজ রাহুলের কথায়, ‘এলিট প্লেয়ারদের সঙ্গে যতদিন ধরে কাজ করা শুরু করেছি কয়েকটা বিষয়ের কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছি। এই যেমন – কোথাও গিয়ে অলিম্পিকে মাঝে মাঝে মানসিক, কখনও কৌশলগত কারণে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। যেটা ধরা যাট্ছে না। তাই আমরা একেবারে বসে খাতা-কলমে লিখেছি কী কী জায়গায় কাজ করতে হবে। কম্বিনেশন অব আর্চারি কোচ, কম্বিনেশন অব স্ট্রেন্থ অ্যান্ড ফিজিক্যাল ট্রেনার, কম্বিনেশন অব ফিজিয়োথেরাপিস্ট ও মেন্টাল ট্রেনার একসঙ্গে করে কাজ করছি। অলিম্পিক আসতে আড়াই বছরের মতো সময় রয়েছে। তাই আমরা চেষ্টা করছি কোথায় টেকনিক্যাল গলদ তা বুঝে শুধরে নেওয়া। অলিম্পিকের আগে আমরা বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্ট জিতে যাই। তারপর অলিম্পিক এলে সেখানে গিয়ে সমস্যাই পড়ি। তাই আমাদের ফোকাস টেকনিক্যাল পার্টে। কেন কোরিয়ানরা প্রতিবার জিতে যায়? ওরা প্রতিটা টুর্নামেন্ট জেতে, আমরা কেন পারি না? সেই জায়গায় ফোকাস করছি। টেকনিক্যাল বিষয়টা আরও সহজ করা ও মানসিক অবস্থা, পরিস্থিতির উন্নতি করার চেষ্টা করছি।’
জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে রাহুল যে দলের অনুশীলন সংক্রান্ত পরিকল্পনায় বদলের কথা ভাবছেন, সেই নিয়েই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগে আমরা কোরিয়ায় যাব। সেখানে গিয়ে কোরিয়ান টিমের সঙ্গে অনুশীলন করব। কিংবা ওখানে অন্য দেশের যে তিরন্দাজরা যাবে, তাদের সঙ্গে ম্যাচ প্র্যাক্টিস করার পরিকল্পনা চলছে। আমরা অগস্ট মাস থেকে এই বিষয়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
রাহুলের কথায় উঠে এল হাওয়া ফ্যাক্টরের কথা। তিনি বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে হাওয়ার প্রভাব আমাদের খেলার বিরাট পড়েছিল। যে কারণে বলতে পারি, সে বার আমাদের পারফরম্যান্সে হাওয়ার মারাত্মক প্রভাব পড়েছিল। তাই আমাদের এখন টার্গেট হাওয়া, আবহাওয়ার মতো পয়েন্টগুলোতে কাজ করা। ভেবেছি ঠান্ডা আবহাওয়া যেখানে, তেমন জায়গায় গিয়ে ৭দিন অনুশীলন করব। বা হাওয়া যেখানে আছে, উঁচু জায়গাতেও অনুশীলনের পরিকল্পনা করছি। তারপর কোন জায়গায় চাপ হচ্ছে সেগুলো খুঁজে দেখতে হবে।’
