ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য নতুন চার্জিং প্রযুক্তি (Electric Vehicles Charging) নিয়ে এলেন আইআইটির গবেষকরা। এই লেটেস্ট চার্জিং প্রযুক্তি এমনই কার্যকর যে, দু’চাকা বা চার চাকা বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম অর্ধেক করে দিতে পারবে, এমনই খুশির খবর জানিয়েছেন গবেষকরা। আইআইটি বিএইচইউ (IIT BHU) অর্থাৎ বারাণসীতে ইতিমধ্যেই এই চার্জিং টেকনোলজি (EV Charging Technology) ল্যাব স্কেল ডেভেলপমেন্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এই মুহূর্তে কমার্শিয়ালাইজেশনের জন্য আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে বলে আরও দাবি করলেন গবেষকদের ওই দল। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, এই নতুন প্রযুক্তিটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম বৈদ্যুতিক যানবাহন নির্মাতারা গ্রহণ করেছে। যদিও সেই সংস্থার নাম প্রকাশ করতে চাননি তাঁরা। কোম্পানিটি বিদ্যমান বৈদ্যুতিক গাড়ির সঙ্গে ব্যবহার করার জন্য একটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক পণ্য প্রস্তুত করছে।
ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য এই অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তি আইআইটি (বিএইচইউ) বারাণসীতে ডেভেলপ করা হয়েছে। এই গবেষকদের সাহায্য করেছেন আইআইটি গুয়াহাটি এবং আইআইটি ভুবনেশ্বরের বিশেষজ্ঞরা। আইআইটি ভুবনেশ্বরের চিফ প্রজেক্ট ইনভেস্টিগেটর রাজীব কুমার সিং বলছেন, “দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের ক্রমবর্ধমান দাম সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগজনক। পেট্রোলিয়াম পণ্যের বর্ধিত মূল্য এবং মাত্রাতিরিক্ত দূষণ থেকে বাঁচতে, বৈদ্যুতিক যানবাহন হল প্রচলিত আইসি ইঞ্জিনের সর্বোত্তম বিকল্প। কিন্তু উচ্চ ক্ষমতার অফ বোর্ড চার্জিং পরিকাঠামোর অভাব অটো-মেকারদের গাড়ির মধ্যেই অনবোর্ড চার্জারগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য করে৷।”
সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, “গাড়ির মালিককে বৈদ্যুতিক যানবাহন চার্জ করতে পারেন আউটলেট থেকে, যার ফলে ইলেকট্রিক ভেহিকল খুবই ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। আমাদের এই প্রস্তাবিত অনবোর্ড চার্জার প্রযুক্তিতে, আমরা প্রপালশন মোডের জন্য প্রয়োজনীয় একটি অতিরিক্ত পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স ইন্টারফেস কমিয়ে দিচ্ছি। আর সেই কারণেই এর সঙ্গে জড়িত উপাদানগুলিও ৫০ পিসি পর্যন্ত হ্রাস করা হয়েছে। এই চার্জারটি পুনরায় কনফিগারযোগ্য, যা চার্জিং মোডের জন্য চার্জার এবং প্রপালশন মোডের জন্য ইনভার্টার হিসাবে কাজ করতে পারে।”
এই মুহূর্তে দু’চাকা বা চার চাকা গাড়িতে যে ধরনের অনবোর্ড চার্জার ব্যবহৃত হয়, তার থেকে আমাদের এই নতুন প্রযুক্তির চার্জার অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কম দামে পাওয়া যাবে। ফলে সামগ্রিক ভাবে এই চার্জার দ্বারা চালিত গাড়ির দামও কম হবে বলে জানালেন রাজীব কুমার সিং। তাঁর কথায়, “চার্জারের খরচ কমার ফলে পরবর্তীতে ইলেকট্রিক ভেহিকলের দামও কমবে। প্রযুক্তিটি সম্পূর্ণরূপে দেশীয় হবে এবং ভারতীয় রাস্তায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাব ফেলবে।”
আইআইটি বিএইচইউ ডিরেক্টর প্রমোদ কুমার জৈন জানালেন, এর সাহায্যে দেশের প্রযুক্তি-বাণিজ্যিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাবও ইতিবাচক হবে। তাঁর কথায়, “প্রযুক্তিটি চার্জিং পরিকাঠামো উন্নত করবে এবং ভারতের রাস্তায় আরও বৈদ্যুতিক যানবাহন নিয়ে আসার জন্য কেন্দ্র সরকারের মিশনেও সহায়তা করবে।”
আরও পড়ুন: কম দামে দুটি চমৎকার ইলেকট্রিক বাইক লঞ্চ হল ভারতে, রিমুভেবল ব্যাটারি, ২৫ কিলোমিটার রেঞ্জ
আরও পড়ুন: বেঁচে যাওয়া রান্নার তেলে দ্রুততার সঙ্গে ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়, কী ভাবে?
আরও পড়ুন: নজরকাড়া লুক ও ফিচার্স নিয়ে আসছে Fiat Panda, সবথেকে সস্তার ইলেকট্রিক গাড়ি